দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এবার সন্ধান মিললো আশ্চর্য এক ব্যক্তির যিনি সকালে ভিক্ষা করেন, আর রাতে আইনের বই পড়েন! ৪৮ বছর বয়সি ওই ব্যক্তির নাম শিব সিংহ।
কথায় আছে ‘ইচ্ছে থাকলে উপায় হয়’, এই কথাটির জ্বলজ্যান্ত প্রমাণ হলো ভারতের শিব সিং। এই মানুষটাকে দিনের বেলায় ঘোরাফেরা করতে দেখা যায় ভারতের জয়পুরের রাস্তায়। হাতে বাটি নিয়ে বাড়ি বাড়ি, দোকান-বাজারে ভিক্ষে করে রুজি রোজগার করতে। আর বিকাল ৩টার পর এই ভিখারিই একেবারে অন্য এক মানুষ। ছেঁড়া-ফাটা ব্যাগে বইপত্র গুছিয়ে পুরো দস্তুর ছাত্র বনে যান। বই-পত্র নিয়ে চলে যান রাজস্থান বিশ্ববিদ্যালয়ের ল কলেজে। শিব সিং আইন নিয়ে পড়াশুনা করছেন স্বাবলম্বি হওয়ার আশায়।
সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়, তিনি গ্র্যাজুয়েশন করেছেন গাংনাপুরের সরকারি কলেজ হতে। দিনমজুর বাবা-মা কষ্টে শিষ্টে কোনওমতে জুগিয়েছেন ছেলের পড়াশোনার খরো-পাতি। বিয়েও দেন। তবে, ছোট হতেই হাতে কিছু সমস্যা ছিল শিবের। সেজন্য ভারী কোনও কাজ করতে পারতেন না তিনি। অর্থ উপার্জন না থাকায় তাকে ফেলে চলে গেছেন স্ত্রী-সন্তান। এই গোটা পৃথিবীতে সম্পূর্ণ একা শারীরিকভাবে অসুস্থ শিব সিংহের ভিক্ষে করা ছাড়া কোনও উপায় ছিল না।
স্ত্রী-সন্তান নেই তাতে কি? হাল ছাড়েননি শিব সিং। অদম্য ইচ্ছা শক্তির বলে বলিয়ান হয়ে পড়াশোনাটা চালিয়ে যাচ্ছেন; একটু ভালোভাবে রুজি রোজগার করবেন সে আশায়। খবরের কাগজে বিজ্ঞাপন দেখে তিনি ভর্তি হয়েছেন ল কলেজে। শুধু ভর্তি হওয়াই নয়, একাগ্রতা এবং মনোযোগে সব ছাত্রের থেকে বেশ এগিয়ে আছেন এই মাঝবয়সি শিব সিং। এ পর্যন্ত কোনওদিন তিনি কলেজ কামাই করেননি। এমনকি যেদিন কলেজ ছুটি থাকে, সেদিনও লাইব্রেরি ওয়ার্ক করেন কলেজে গিয়ে। শিক্ষক-সহপাঠীরাও স্তম্ভিত শিব সিং-এর এমন ইচ্ছাশক্তি ও মনোবল দেখে।
প্রতিদিন ভিক্ষে করে একটু একটু করে যা টাকা জমান, তাই দিয়েই খাতা-বই কেনেন শিব সিং। তার লক্ষ্য একটাই, পড়াশোনাটা ভালোভাবে শেষ করতে হবে। কারণ তাকে তো লড়তে হবে কোর্টের নানা মামলা, রোজগার করতে হবে অর্থ। তিনি তার ছেড়ে যাওয়া স্ত্রী-সন্তানদের দেখাতে চান, তিনি বেকার নন, তিনিও পরিশ্রম করে অর্থ উপার্জন করতে পারেন। সাবাস শিব সং, জয় তোমার হবেই হবে!