দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গণতান্ত্রি পথে যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছে মিয়ানমার। মিয়ানমারের সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনে গণতন্ত্রপন্থী জনপ্রিয় নেত্রী অং সান সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) বিপুল ভোটে বিজয়ী হতে চলেছেন।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের বরাত দিয়ে রয়টার্স বলেছে, নিম্নকক্ষের যে ৩৩০টি আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে, তার মধ্যে ৫৪টির ফলাফল ঘোষণা করা হয়। তারমধ্যে এনএলডি পেয়েছে ৪৯টি।
দীর্ঘ সংগ্রাম শেষে এই নির্বাচনে সু চি জয়ী হলেও ক্ষমতার সমীকরণটি অনেকটা নির্ভর করছে সেনাবাহিনীর সঙ্গে তাঁর কী ধরনের সমঝোতা হয়, ঠিক তার ওপর। জানুয়ারিতে নতুন পার্লামেন্ট প্রেসিডেন্ট এবঙ ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করবে। সে পর্যন্ত বর্তমান প্রেসিডেন্ট থেইন সেইন এবং সেনানিয়ন্ত্রিত ইউনাইটেড সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টিই (ইউএসডিপি) ক্ষমতায় থাকবে।
মিয়ানমারে গণতন্ত্রায়ণের পথে তিনটি চ্যালেঞ্জ ছিল, এই নির্বাচনে তার দুটিতে দেশটি জয়ী হয়েছে। এক হলো, নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে। দুই হলো, সেনানিয়ন্ত্রিত সরকারও ফলাফল মেনে নিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট থেইন সেইন অনেকটা আত্মপক্ষ সমর্থনের সুরে বলেছেন, ‘আমরা ঐতিহাসিক নির্বাচনের ফলকে সম্মান জানাবো।’ আর তিন হলো, বিজয়ী দলের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা।
মিয়ানমারের পার্লামেন্টের ৪৪০ আসনের নিম্নকক্ষের ৩৩০ ও ২২৪ আসনের উচ্চকক্ষের মধ্যে ১৬৮টিতে ভোট গ্রহণ হয়েছে। সংবিধান অনুযায়ী উভয় পরিষদে বাকি আসনগুলো পূরণ করবে সেনাবাহিনীর সদস্যরা। আবার তাঁদের মনোনয়ন দেবেন সেনাবাহিনী প্রধান। সে ক্ষেত্রে এনএলডিকে সরকার গঠন করতে হলে দুই পরিষদ মিলে অন্তত ৩৩০টি আসন পেতে হবে। তবে চেয়েও অনেক বেশি আসন তারা পাবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তবে সু চির ক্ষমতার আসেন বসা নিয়ে সমস্যা রয়েছে। কারণ দেশটির সংবিধানের ৬৯ ধারায় রয়েছে, কেও বিদেশি নাগরিককে বিয়ে করলে কিংবা তার সন্তান অন্য কোনো দেশের নাগরিক হলে, তিনি প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না। সে কারণে মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট পদে সু চি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারছেন না।
তবে সু চি প্রেসিডেন্ট না হলেও মিয়ানমারে দীর্ঘদিন পর আবার গণতান্ত্রিক পথে যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছে সেটিতেও জনগণ খুশি। সাধারণ জনগণ যেমন সু চিকে ক্ষমতায় দেখতে চান, তেমনি আবার দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরে পেতেও প্রচণ্ডভাবে আগ্রহী।