দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ নিয়তির অঘোম লিখনকে পাল্টে দিয়েছেন যে বালক তার নাম বেল্লাল। সৃষ্টিকর্তা দেননি যার দুটি হাত। প্রতিবন্ধী হওয়ার পরও থেমে নেই তার পথচলা। বেল্লাল জিপিএ-৫ পেয়েছে পা দিয়ে লিখেই!
সংবাদ মাধ্যমের খবরে জানা যায়, জন্ম হতেই দুই হাত ছিলো না বেল্লালের। তারপরও পা দিয়ে লিখে এবার ২০১৫ সালের জেডিসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছে। কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের উমেদপুর গ্রামের খলিলুর রহমানের ছেলে মো: বেল্লাল হোসেন। তার মা হোসনেয়ারা বেগম শিক্ষা জীবনের শুরু হতেই পায়ের আঙুলের ফাঁকে পেন্সিল দিয়ে লেখা শিখিয়েছেন বেল্লালকে।
বেল্লাল পিতা-মাতা এবং শিক্ষকদের সহযোগিতায় উপজেলার উমেদপুর দাখিল মাদ্রাসা হতে এ বছর জেডিসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। পরীক্ষার খাতাতে সে ডান পায়ের আঙ্গুলী দিয়ে লিখেছে। অসাধ্যকে সাধন করে বেল্লাল এবার মেধা তালিকায় নাম লিখিয়েছে গর্বের সঙ্গে।
একই মাদ্রাসা হতে জিপিএ-৫ পাওয়া মো: জাবের মোল্লা বলেছেন, ‘আমরা সুস্থ্য অবস্থায় হাত দিয়ে লিখে জিপিএ-৫ পেয়েছি। কিন্তু বেল্লালের একটি হাতও নেই, সে শুধু পা দিয়ে লিখেই জিপিএ-৫ পেয়ে আমাদের সকলকে অবাক করে দিয়েছে।’
উমেদপুর দাখিল মাদ্রাসার সুপার মো: হাবিবুল্লাহ সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘শারীরিক সক্ষমতা না থাকলেও বেল্লালের মেধা রয়েছে। পা দিয়ে লিখেই এবছর জেডিসি পরীক্ষায় সে জিপিএ-৫ পেয়েছে। এই মাদ্রাসা হতে এবার ৬১ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে সবাই পাশ করেছে। কিন্তু এই মাদ্রাসা হতে জিপিএ-৫ পেয়েছে মাত্র ১০ শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে বেল্লাল অন্যতম।
মাদ্রাসার সুপার আরও বলেন, ‘প্রতিবন্ধী বেল্লাল যাতে পা দিয়ে ভালোভাবে লিখতে পারে, সেজন্য ক্লাশে একটি কাঠের আসন বানিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেটিতে বসে দেওয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে বেল্লাল লিখতে এবং পড়তে পারে। বেল্লালের লেখাপড়ায় আগ্রহ খুব। বেল্লাল প্রতিবন্ধী হলেও আমাদের গর্ব।’
সাংবাদিকদের বেল্লাল বলেছেন, লেখাপড়া যখন শুরু করে তখন হতেই একাএকা স্কুলে যেতো সে। স্কুলে যাওয়া-আসার সময় রাস্তায় পড়ে গিয়ে অনেকবার মাথাও ফাটিয়েছে সে। এরপরও লেখাপড়া ছাড়েনি সে। আজ তার পুরুস্কার হিসাবে জেডিসি পরীক্ষায় সে জিপিএ-৫ পেয়েছে। বড় হয়ে বেল্লাল একজন আদর্শ শিক্ষক হয়ে কম্পিউটারের মাধ্যমে শিক্ষাদান করাতে চান।