দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অভিবাসী সঙ্কট বর্তমান পরিস্থিতিতে আরও প্রবল আকার ধারণ করেছে। কোনোভাবেই ফয়সালায় আসতে পারছে না ইইউ। বর্তমানে নতুন করে ইইউ তুরস্ক চুক্তিতে অনেক বাঁধা আসছে।
এদিকে গ্রিসের দ্বীপগুলোতে তুরস্ক হয়ে আসা অভিবাসীদের স্রোত কীভাবে বন্ধ করা যায়, সে বিষয়টি নিয়ে আলোচনার জন্য ইউরোপীয় নেতারা গত বৃহস্পতিবার ব্রাসেলসে এক শীর্ষ বৈঠকে বসে।
এদিকে তুরস্ক অভিবাসী ও শরণার্থীদের স্রোত থামানোর জন্য সাহায্য করতে রাজী, তবে এর বিনিময়ে তারা শেংগেন চুক্তির অধীনে ইউরোপীয় দেশগুলোতে তুর্কী নাগরিকদের বিনা ভিসায় ঢুকতে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছে। আলোচনার টেবিলে এই বিষয়টি নিয়ে অনেক ইউরোপীয় দেশ তীব্র আপত্তি জানান। কিছুদিন পূর্বে অর্থ, ব্যবসায়িক সুবিধা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যপদ ত্বরান্বিত করাসহ বেশ কিছু শর্তে রাজি হয়ে ইউরোপীয় নেতারা তুরস্কের সঙ্গে একটি বোঝাপড়াও নাকি করেছেন।
বৈঠকে বিষয়টি চূড়ান্ত হলে, তাদের উপকূল হতে অভিবাসীরা যেনো গ্রিসের উদ্দেশ্যে রওয়ানা না হতে পারে, তুরস্ক সেটি নিশ্চিত করার চেষ্টা করবে। তাছাড়া, অবৈধভাবে গ্রিসে পৌঁছানো অভিবাসীদের ফেরতও নেবে তুরস্ক। এর বদলে তুরস্কের ভেতরে বিভিন্ন শিবির হতে বৈধ উপায়ে সমান সংখ্যক শরণার্থী গ্রহণ করবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। তবে ব্রাসেলসের ওই শীর্ষ বৈঠকে ছাড়া বিষয়টি চূড়ান্ত হবে না। ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টাস্ক স্বীকার করেছেন, মীমাংসা একটি জটিল পর্যায়ে পৌঁছুচ্ছে। তিনি বলেছেন, যে বোঝাপড়াই হোক তা অবশ্যই কিছু মৌলিক নীতির ভিত্তিতেই হতে হবে।
প্রথমত- এই চূক্তিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৮টি সদস্য দেশের সম্মতি থাকতে হবে, দ্বিতীয়ত- চুক্তি ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আন্তর্জাতিক আইনের ভিত্তিতে হতে হবে। তবে সমস্যা হচ্ছে, অনেকে এমনকী জাতিসংঘ পর্যন্ত বলছে, গ্রিস হতে জোর করে যদি অভিবাসীদের তুরস্কে আনার চেষ্টা করা হয় তাহলে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন ভঙ্গ হবে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষ র্যাপোর্টিয়ার ফ্রাঁসোয়া ক্রেপো বলেছেন, ইউরোপীয় আদালত তুরস্ককে একটি নিরাপদ দেশ হিসাবেই বিবেচনা করবে, সেটি তিনি মনে করেন না। হয়তো দু’এক বছরের মধ্যে কোনো আদালত রায় দেবে যে, গড়পড়তা সবাইকে জোর করে তুরস্কে ফেরত পাঠানোর কারণে ইউরোপীয় মানবাধিকার আইন ভঙ্গ হয়েছে। শুধুমাত্র মানবাধিকারের প্রশ্নই নয়, অর্থ বিষয়ক সুবিধা নিয়েও তুরস্ক যে চুক্তিমতো কাজ করবে ইউরোপের অনেক দেশ সে বিষয়েও সন্দিহান।
মোট কথা অধিবাসী বিষয়টি নিয়ে চূড়ান্ত যায়ই হোক না কেনো কিছু প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। তবে একটি ভালো দিক হলো চেষ্টা করা হচ্ছে স্থায়ী সমাধানের। বলায় বাহুল্য যে, চেষ্টার কোনো বিকল্প হতে পারে না।