দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দুনিয়া জোড়া এক হৈ চৈ পড়ে গেছে রহস্যময় দুই সৌর শিশু নিয়ে! এরা দুই ভাই আবদুল রশিদ ও শোয়াইব আহমেদ। একজনের বয়স ৯, অপর জনের বয়স ১৩।
এদের দেখে কোনোভাবেই অস্বাভাবিক মনে হয় না। এরা স্বাভাবিক শিশুর মতোই হাটছে, ছুটছে, খেলছে, খাচ্ছে এমন কি কথাও বলছে। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো সূর্য ডুবে গেলে এরা দু’জনই যেনো পাথর! তখন হাত, পা’সহ শরীরের কোনো অঙ্গই নাড়াতে পারে না এরা। নির্বাক হয়ে পড়ে এই দুই শিশু, এমনকি কোনো কিছু খেতেও পারে না তারা!
সংবাদ মাধ্যমের খবরে জানা যায়, পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বেলুচিস্তান প্রদেশের রাজধানী কোয়েটার নিকটে এক গ্রামের বাসিন্দা মোহাম্মদ হাশিম নামে এক ব্যক্তির এই দুই ছেলে হলো আবদুর রশিদ ও শোয়াইব। তার ধারণা, তার দুই ছেলে হয়তো সূর্য হতেই চলার শক্তি অর্জন করে। আর কারণে অনেকেই তাদের বলেন এরা ‘সৌর শিশু’।
এই দুই শিশু রশিদ ও শোয়াইবের এ ধরনের সমস্যা অনেকটা ধাঁধায় ফেলে দিয়েছে সেখানকার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের। তবে চিকিৎসকরা সূর্যের আলো হতে শক্তি পাওয়ার তত্ত্ব গোড়াতেই বাতিল করে দিয়েছেন।
বিশেষজ্ঞরা পরীক্ষার জন্য শিশু দুটিকে দিনের বেলা অন্ধকার ঘরে রেখেছেন। ঝড়-বৃষ্টির সময় ও দিনের সূর্যহীন পরিবেশেও এদের শরীর পরীক্ষা করা হয়েছে। তাতে করে গবেষকরা নিশ্চিত হয়েছেন যে, সূর্যের আলো নয়, বরং দিন এবং রাতের কারণেই রশিদ ও শোয়াইবের মধ্যে রহস্যময় পরিবর্তন ঘটে থাকে।
এ বিষয়ে সংবাদ মাধ্যমকে পাকিস্তানের ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেসের শিক্ষক জাভেদ আকরাম বলেছেন, সূর্য ডোবার সঙ্গে আবদুর রশিদ এবং শোয়াইবের শরীর অচল হওয়ার কারণ তাদের কাছে এখনও অজানা। তবে চিকিৎসকরা বিষয়টিকে চ্যালেঞ্জ হিসেবেই নিয়েছেন। চিকিৎসা দিয়ে শিশু দুটি কার্যকর থাকার কারণ নিয়ে তারা বিষদ গবেষণা করছেন।
সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদের এক হাসপাতালে রেখে রশিদ ও শোয়াইবের শরীরের নিবিড় পর্যবেক্ষণ চালানো হচ্ছে। তাদের নিয়মিত রক্ত ও শরীরের অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। তাদের রক্তের নমুনা বিদেশের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে পাঠানো হয়েছে। শুধু তাই নয়, কোয়েটায় রশিদ ও শোয়াইবের বাড়ির মাটি এবং পানির নমুনাও সংগ্রহ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। রশিদ ও শোয়াইব দরিদ্র পরিবারের সন্তান হওয়ায় এদের চিকিৎসার খরচ বহন করছে পাকিস্তান সরকার।
সংবাদ মাধ্যমকে রশিদ ও শোয়াইবের বাবা মোহাম্মদ হাশিম বলেছেন, তিনি এবং তার স্ত্রী দূর সম্পর্কের আত্মীয়। তাদের ৬ সন্তানের মধ্যে দুজন অল্প বয়সেই মারা গেছে। বেঁচে থাকা ৪ সন্তানের মধ্যে অপর দুজন পুরোপুরি সুস্থ রয়েছেন।