দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ নতুন ব্যাগেজ বিধিমালা ঘোষণা করা হয়েছে। নতুন এই নীতিমালায় একজন যাত্রী ৬৫ কিলোগ্রাম পর্যন্ত ব্যাগেজ শুল্ক ও করমুক্ত পরিবহনের সুযোগ পাবেন।
সংবাদ মাধ্যমের খবরে জানা গেছে, বাংলাদেশ সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ২ জুনের এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড যাত্রী (অপর্যটক) ব্যাগেজ (আমদানি) বিধিমালা ২০১২ বাতিল করে নতুন এই বিধিমালা প্রণয়ন করেছে। এই বিধিমালা Tourist Baggage (Import) Rules, 1981 ও Privileged Persons (Customs Procedures) Rules, 2003 -এর আওতাভুক্ত যাত্রী ব্যতীত সকল যাত্রীর ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে।
এই বিধিমালার ব্যাখ্যায় ‘যাত্রী’ বলতে বোঝানো হয়েছে বিদেশ হতে আসা কোনো যাত্রীকে। অপরদিকে ‘ব্যাগেজ’ বলতে কোনো যাত্রী কর্তৃক আমদানিকৃত যুক্তিসঙ্গত পরিমাণের খাদ্যদ্রব্য, পরিধেয়, গৃহস্থালি কিংবা অন্যান্য ব্যক্তিগত সামগ্রী বোঝানো হয়েছে- যার প্রত্যেকটি আইটেমের ওজন ১৫ কেজির বেশি হবে না।
নতুন বিধিমালার উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলো:
আকাশ ও জলপথে আসা ১২ বছর কিংবা তার বেশি বয়সের যাত্রীর সঙ্গে আনা হাতব্যাগ, কেবিনব্যাগ কিংবা অন্য কোনোভাবে আনা ব্যাগের ওজন যদি ৬৫ কিলোগ্রামের বেশি না হয় তবে সেই ব্যাগেজ সকল প্রকাশ শুল্ক এবং কর পরিশোধ ছাড়াই খালাসযোগ্য হবে। অর্থাৎ ৬৫ কিলোগ্রাম পর্যন্ত ব্যাগেজ শুল্ক এবং করমুক্ত।
উপ-বিধি (১) এ উল্লেখিত ব্যাগেজের অতিরিক্ত ৩৫ কিলোগ্রাম পর্যন্ত ওজনের পরিধেয় বস্তু, ব্যক্তিগত ব্যবহারের সামগ্রী, বই, সাময়িকী ও পড়াশোনার সামগ্রী সকল প্রকার শুল্ক ও কর ছাড়াই খালাস হবে বা আনা-নেওয়া যাবে।
# অপরদিকে ১২ বছরের কম বয়সী যাত্রীর ক্ষেত্রে ৪০ কিলোগ্রাম পর্যন্ত ওজনের কার্টন, ব্যাগ কিংবা বস্তায় আনা ব্যক্তিগত ব্যাগেজের জন্য কোনো প্রকার শুল্ক ও কর দিতে হবে না। তবে এই সুবিধা ছাড়া অন্য কোনো সুবিধা ১২ বছরের কম বয়সী যাত্রী পাবেন না।
# যাত্রীর সঙ্গে আনা হয়নি এমন ব্যাগেজ (Unaccompanied Baggage)-এর ক্ষেত্রে তফসিল-১ এ নির্ধারিত ফরমে ঘোষণা প্রদান ও এই বিধিমালার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে সকল প্রকার শুল্ক এবং কর পরিশোধ ছাড়াই খালাস করা যাবে। তবে ব্যাগেজ খালাসের সময় ঘোষণাপত্রের একটি অনুলিপি সংশ্লিষ্ট কাস্টমস কর্মকর্তার নিকট অবশ্যই দাখিল করতে হবে।
# এই বিধিতে ভিন্নরূপ যাই থাকুক না কেনো, একজন যাত্রী তফসিল-৩ এ উল্লেখিত পণ্যের প্রত্যেকটির একটি (মোবাইল ফোন দু’টি) করে পণ্য সকল প্রকার শুল্ক ও কর পরিশোধ ছাড়াই ও তফসিল-২ এ উল্লেখিত পণ্যের প্রত্যেকটির একটি করে পণ্য তফসিলে উল্লেখিত শুল্ক এবং কর পরিশোধ করে আনতে পারবে।
# একজন বিদেশী পাসপোর্টধারী যাত্রী ১ লিটার পর্যন্ত মদ কিংবা মদজাতীয় পানীয় (বিয়ার, স্পিরিট ইত্যাদি) সকল প্রকার শুল্ক এবং কর পরিশোধ ছাড়াই আনতে পারবে।
একজন যাত্রী তার পেশাগত কাজে ব্যবহারের ক্ষেত্রে সহজে বহনযোগ্য সকল প্রকার যন্ত্রপাতি সকল প্রকার শুল্ক ও কর পরিশোধ ছাড়া আমদানি করতে পারবেন।
# একজন যাত্রী ১০০ গ্রাম পর্যন্ত ওজনের স্বর্ণালংকার কিংবা ২০০ গ্রাম পর্যন্ত ওজনের রৌপ্যের অলংকার সকল প্রকার শুল্ক এবং কর পরিশোধ ছাড়াই আনতে পারবে। তবে এক প্রকার অলংকার ১২টির বেশি আনা যাবে না।
# একজন যাত্রী বিদেশ হতে দেশে আসার সময় ২৩৪ গ্রাম (২০ তলা) পর্যন্ত ওজনের স্বর্ণবার কিংবা স্বর্ণপিন্ড বা ২৩৪ গ্রাম (২০ তলা) ওজনের রৌপ্যবার কিংবা রৌপ্যপিন্ড সকল প্রকার শুল্ক ও কর পরিশোধ ছাড়াই আনতে পারবেন।
# স্থলপথে আসা একজন যাত্রী সর্বোচ্চ ৪০০ মার্কিন ডলার মূল্যের ব্যাগেজ সকল প্রকার শুল্ক এবং কর পরিশোধ ছাড়াই আমদানি করা যাবে।
# আকাশ, স্থল কিংবা জলপথে আসা একজন অসুস্থ, পঙ্গু বা বৃদ্ধ যাত্রীর ব্যবহারের জন্য চিকিৎসা যন্ত্রপাতি বা হুইল চেয়ার আনার জন্য কোনো প্রকার শুল্ক ও কর দিতে হবে না।
# এই বিধিমালায় যাই থাকুক না কেনো, কোনো বাংলাদেশী নাগরিক বিদেশে মৃত্যুবরণ করলে তার ব্যাগেজ সকল প্রকার শুল্ক ও কর হতে অব্যাহতি পাবে। সকল যাত্রীর জন্যই কাস্টমস ঘোষণাপত্রের বিধান করা হয়েছে।
ব্যাগেজ সংক্রান্ত নতুন বিধিমালা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে নিচের ঠিকানায় যান:
http://www.nbr.gov.bd/contents/rule/9.pdf
এখানে ঢুকলে তফসিল-১ এ ব্যাগেজ ঘোষণা ফরম, তফসিল-২ ও ৩ এ কোন পণ্য কি পরিমাণে শুল্কে এবং করমুক্তভাবে আনা যাবে তার তালিকা ও তফসিল-৪ সংশ্লিষ্ট অপর একটি বিষয়ের বিস্তারিত উল্লেখও রয়েছে।
তথ্যসূত্র: http://bookinghaat.com