দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এই আধুনিক যুগে যদি শোনেন কোনো শহরে মুঠোফোন নিষিদ্ধ, তাহলে বিস্মিত হবেন সেটিই স্বাভাবিক। তবে সত্যিই এমন এক শহর রয়েছে যেখানে মুঠোফোন নিষিদ্ধ!
এই শহরটি হলো যুক্তরাষ্ট্রে গ্রিন ব্যাংক শহর। সেখানে প্রবেশের পর মুঠোফোন কিংবা বেতারযন্ত্রের কোনো নেটওয়ার্ক পাওয়া যাবে না। তারবিহীন ইন্টারনেট ব্যবহারের ওয়াই-ফাই প্রযুক্তিও নিষ্ক্রিয় সেখানে। এই শহরটির অবস্থান ওয়েস্ট ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যের অ্যালেগেনি পার্বত্য এলাকায়।
এই গ্রিন ব্যাংককে বলা হয়ে থাকে ‘যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে নীরব শহর’। সারাক্ষণ মুঠোফোন ও ইন্টারনেট যোগাযোগে অভ্যস্ত শহরবাসী যে কেও সেখানে গেলে নিজেকে বিচ্ছিন্ন ভেবে আতঙ্কিত হয়ে উঠতে পারেন সেটিই হয়তো স্বাভাবিক। তবে সেখানে মুঠোফোন কিংবা স্মার্টফোনসহ তারবিহীন যন্ত্রপাতি সেখানে সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। এই নিষেধাজ্ঞা কেও অমান্য করলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগও রয়েছে।
প্রযুক্তির উৎকর্ষতা বিশ্বজুড়ে হলেও গ্রিন ব্যাংকে সার্বক্ষণিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলো ইচ্ছে করেই বন্ধ রাখা হয়েছে। এমনকি মাইক্রোওয়েভ কিংবা অতি ক্ষুদ্র তরঙ্গের ব্যবহারেও বিধিনিষেধ রয়েছে।
অনেকেই ভাবতে পারেন এই গ্রিন ব্যাংকের বাসিন্দারা অনগ্রসর ও অতীতমুখী অথবা প্রযুক্তি নিয়ে ভীতসন্ত্রস্ত। কিন্তু আসলে তা নয়, বরং উল্টোটাই। অ্যালেগেনি পর্বতমালা এলাকায় একদল গবেষক মহাবিশ্বের সুদূর প্রান্তে সশব্দে ফেটে পড়া ছায়াপথের আওয়াজ শুনে আসছেন। এই সংকেত বা শব্দ অত্যন্ত ক্ষীণ, যা মুঠোফোন হতে নির্গত শক্তির মাধ্যমে ভেসে যেতে পারে। এতে করে ছায়াপথের উৎপত্তি রহস্য জানতে উদগ্রীব বিজ্ঞানীদের গবেষণায় বিঘ্ন ঘটতে পারে সেই আশংকায় ওয়েস্ট ভার্জিনিয়ার পূর্বাঞ্চলের অর্ধেক, ভার্জিনিয়ার নির্দিষ্ট কিছু অংশ হতে শুরু করে মেরিল্যান্ড অঙ্গরাজ্যের সীমান্ত পর্যন্ত মুঠোফোন এবং অন্যান্য তারবিহীন যন্ত্রের ব্যবহার সীমিত ও গ্রিন ব্যাংক পুরোপুরিই বন্ধ রেখেছে কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, এই শহরের খুব কাছাকাছি এলাকায় বিজ্ঞানীরা স্থাপন করেছেন বিশ্বের সবচেয়ে বিশাল রেডিও টেলিস্কোপ। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল রেডিও অ্যাস্ট্রোনমি অবজারভেটরি এই রেডিও টেলিস্কোপ নিয়ন্ত্রণ করে। দুই একর এলাকাজুড়ে স্থাপন করা সুবিশাল যন্ত্রটির ওজন ৭৭ লাখ ১১ হাজার কেজিরও বেশি। শুধু তাই নয়, এটি কোটি কোটি মাইল দূরের আওয়াজও শুনতে পায়!