দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মাল্টি লেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) নির্ভর ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান ডেসটিনি গ্রুপের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে পাচারকৃত প্রায় ৩ দশমিক ৬৭ মিলিয়ন ডলারের খোঁজ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ২৮ কোটি ২৫ লাখ ৯০ হাজার টাকা। বেস্ট এয়ারের নামে যুক্তরাষ্ট্রে এত ডলার পাচার করে ডেসটিনি!
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদক জনসংযোগ কর্মকর্তা ও উপপরিচালক প্রণব কুমার ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, “ডেসটিনি গ্রুপের নানা অনিয়ম, দুর্নীতি এবং বিদেশে অর্থ পাচারের ঘটনা অনুসন্ধান ও তদন্তে দুদকের উপ-পরিচালক মো. মোজাহার আলী সরদারের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের একটি দল কাজ করছেন।”
তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, “চার মিলিয়ন ডলার ডেসটিনি পাচার করেছে এমন অভিযোগ তদন্ত করতে গিয়ে একের পর এক নতুন তথ্য পাচ্ছেন দুদক কর্মকর্তারা। আমেরিকার অ্যাটলাস এভিয়েশন নামক একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে এ টাকা পাঠানো হয়। দুই দফায় টাকা পাঠানো হয়েছে। প্রথম দফায় সাড়ে ৩ মিলিয়ন ডলার এবং পরে দশমিক ৬৭ মিলিয়ন ডলার পাচার করা হয়।এ টাকা ফেরত আনতে দুদক চেষ্টা করবে বলে সূত্র জানায়।
তিনি বলেন, “প্রথমে যুক্তরাষ্ট্রে পরে হংকংয়ে অর্থ পাচারের সন্ধান পেয়েছে দুদক অনসন্ধানকারী কর্মকর্তারা। ইতিমধ্যে রফিকুল আমীন ও প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসাইন কানাডার নাগরিকত্ব নিয়েছেন। হংকংয়ে ‘সাফটেক অনলাইন এইচকে লিমিটেড’ নামের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে।”
এদিকে গত বছর জুলাই মাসে কলাবাগান থানায় দুদক ট্রি প্ল্যানটেশনের নামে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা এবং প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মানি লন্ডারিং আইনে সাবেক সেনাপ্রধান ও ডেসটিনি গ্রুপের সভাপতি লেফটেন্যান্ট জেনারেল( অব) এম হারুন-অর-রশিদসহ প্রতিষ্ঠানের ২২ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা করেছে দুদক। ঢাকার কলাবাগান থানায় গত বছরের ৩০ জুলাই মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে দুটি মামলা দায়ের করা হয় |
মামলার বাদি হলেন দুদকের উপ-পরিচালক মো. মোজাহার আলী সরদার ও সহকারী পরিচালক মো. তৌফিকুল ইসলাম । এ মামলারই প্রধানতম আসামি হলেন ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আমীন ও চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসাইন।
দুই আসামিসহ ডেসটিনি মামলায় দুদক মোট তিনজনকে গ্রেফতার করে। দুদকের হাতে গ্রেফতার হওয়া অপর আসামি হলেন লে. কর্নেল (অব.) দিদারুল আলম। তিনি ডেসটিনির পরিচালকদের একজন। আসমিরা বর্তমানে কারাগারে আটক আছেন ।
ডেসটিনির বিরুদ্ধে বর্তমানে ব্যবস্থা নেওয়ার যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, তাকে সাধুবাদ জানাই। একই সঙ্গে ক্ষমতা, প্রভাব ও প্রতিপত্তি খাটিয়ে যেন কেউ পার পেয়ে যেতে না পারেন, সেটাও সরকার নিশ্চিত করবে—এটাই দেশবাসীর প্রত্যাশা।
তথ্যসূত্রঃ বাংলানিউজ২৪.কম