দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রভুভক্ত প্রাণি হিসেবে কুকুরের খ্যাতি রয়েছে। মানুষের হুকুম মানতে গিয়ে কিংবা প্রভুর জীবনরক্ষায় নিজেকে বিলিয়ে দেওয়ার অনেক নজিওর রেখেছে পোষা এই প্রাণিটি।
এতোদিন মনে করা হতো, কেবলমাত্র ইশারা বুঝেই কুকুর মানুষের কথা মতো কাজ করে থাকে। তবে সম্প্রতি বিখ্যাতবিজ্ঞান বিষয়ক গবেষণাপত্র সায়েন্স জার্নাল-এ প্রকাশিত এক নিবন্ধে গবেষকরা দাবি করে বলেছেন, কুকুর মানুষের কিছু কথা বা শব্দের মানেও বুঝতে পারে!
এই নিবন্ধে আরও বলা হয়, হাঙ্গেরির গবেষকরা ১৩টি কুকুরকে এমআরআই স্ক্যাণারে স্বেচ্ছায় শুয়ে থাকার প্রশিক্ষণ দেন। সেখানে গবেষকরা তাদের সঙ্গে কথা বলার পর মস্তিষ্কে কি ধরনের পরিবর্তন ঘটে তা তারা নিরীক্ষণ করেছেন।
গবেষকরা আবিষ্কার করেন যে, কুকুরদের মস্তিষ্কের ভাষার কার্যপ্রণালী অনেকটা মানুষের মতোই। মস্তিষ্কের ডান পাশের অংশ আবেগ ও বাম পাশের অংশ অর্থ উদ্ধারে কাজ করে থাকে। মস্তিষ্কের উভয় অংশ একমত হয় তখন যখন তারা প্রশংসা শুনে।
বুদাপেস্টের ইটভোস লোর্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং প্রধান গবেষক ড. আট্টিলা অ্যানডিক্স বলেছেন, ‘ভাষা প্রক্রিয়াকরণের সময় মানব মস্তিষ্কের একটি সুপরিচিত শ্রম বিন্যাস আছে। এর বাম অংশের কাজ হচ্ছে শব্দের অর্থ উদ্ধার করা ও ডান অংশের কাজ হচ্ছে স্বরভঙ্গি প্রক্রিয়া করে। আমরা কি বলছি, কিভাবে কথা বলছি মানব মস্তিষ্ক তা শুধুমাত্র পৃথকভাবে বিশ্লেষণ করে না। এটি দুই ধরনের তথ্য একীভূত করে সমন্বয় সাধন করে থাকে।’
তিনি বলেছেন, ‘আমাদের গবেষণায় দেখা গেছে, কুকুরও এসব কিছু করতে সক্ষম। তারা প্রায় একই ধরনের মস্তিষ্ক পদ্ধতি ব্যবহার করে থাকে।’
মস্তিষ্ক স্ক্যাণ করার সময় গবেষকরা ‘ভালো ছেলে’ ও ‘চমৎকার’ ইত্যাদি প্রশংসাসূচক শব্দ ব্যবহার করেন। একই শব্দ অস্পষ্ট কণ্ঠে উচ্চারণ করেন তারা। তাছাড়া উভয় স্বরভঙ্গিতে অর্থহীন কিছু শব্দও যেমন- ‘যাইহোক’, ‘কিন্তু’ ইত্যাদি শব্দ উচ্চারণ করা হয়ে থাকে।
স্ক্যাণের ফলাফলে দেখা যায় যে, অর্থপূর্ণ শব্দ শোনার পর কুকুরের মস্তিষ্কের বাম অংশ সক্রিয় হয়েছে। তবে যেসব শব্দ তারা বুঝতে পারেনি তখন এ রকমটা ঘটেনি। তাদের মস্তিষ্কের ডান পাশের অংশ সক্রিয় হয়েছে যখন তারা নিজেরা প্রশংসাসূচক শব্দ শুনেছে।