দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ইরানি এক বধূর ফাঁসি নিয়ে বিশ্ব মিডিয়ায় তোলপাড় হচ্ছে। তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলো তাকে বাঁচাতে লড়ে যাচ্ছে।
আজকের এই গল্পটি গরীব ইরানি কুর্দিশ এক কিশোরী বধূর। যে কোনে সময় ফাঁসি হয়ে যেতে পারে তার। যদিও মানবাধিকার সংগঠনগুলি তাকে বাঁচাতে এখনও লড়ে যাচ্ছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো ওই লড়াই ব্যর্থ হলে হয়তো এই ঘটনাটি পড়ার আগেই হয়তো ফাঁসির কাষ্ঠে দাঁড়াতে হতে পারে ওই বধূ জয়নাবকে!
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, ২২ বছর বয়সী ওই ইরানি হতভাগ্য নারীর নাম জয়নাব সেকানভান্দ। ওই বধূর জীবনের গল্প বেশ ভয়াবহ ও বেদনাদায়ক। তিনি হারিয়েছেন তার অনাগত সন্তানকে, হারিয়েছে তার পরিবার যারা তাকে পরিত্যাগ করেছে। হারিয়েছে তার স্বাধীনতা, কারাগারের প্রকোষ্ঠে অন্তরীণ। এখন বাকি রয়ে গেছে যে জিনিসটি তাও হারাতে চলেছে জয়নাব। আর সেটি হলো নিহের প্রাণপ্রিয় জীবন।
ইরানি ওই গৃহবধূর বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তিনি তার স্বামীকে নিজে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছেন। সে সময় জয়নাবের বয়স ছিল মাত্র ১৭। মানবাধিকার সংগঠনগুলোর দাবি, হত্যাকাণ্ডের সময় জয়নাব প্রাপ্তবয়স্ক ছিলেন না। সুতরাং তাকে ফাঁসি দেওয়া অন্যায় হবে।
১৫ বছর বয়সে ভালোবাসা ও সুযোগের খোঁজে সে বাড়ি হতে পালিয়ে গিয়ে হোসেইন সারমাদিকে বিয়ে করে। সারমাদি তার থেকে ৪ বছরের বড় ছিল। জয়নাবের বিশ্বাস ছিল যে, স্বামীর কাছে একটা ভালো জীবন পাবে সে। তবে বাস্তব জীবনে ঘটেছে তার ঠিক উল্টো।
স্বামী সারমাদির কারণে জীবনটা জয়নাবের কাছে আরও কঠিন হতে কঠিনতর হয়ে যায়। কিশোরী বধূ জয়নাবকে নিয়মিতভাবে অত্যাচার করতো সারমাদি। পালিয়ে বাঁচতে চেয়েছিল জয়নাব। স্বামীর কাছ থেকে সে তালাকও চেয়েছিল। পুলিশের কাছে সাহায্য চেয়েছিল জয়নাব। কিন্তু তার সাহায্যে কেও এগিয়ে আসেনি।
স্বামীর অত্যাচার হতে মুক্তির উপায় খুঁজতে গিয়ে হতবুদ্ধি হয়ে জয়নাব বাধ্য হয়ে স্বামীকে ছুরিকাঘাত করেছিল। পুলিশের কাছে সে নিজের অপরাধ শিকারও করেছে জয়নব। তবে যার জন্য এতোকিছু, একটু স্বাধীনতা পাওয়ার আশা, সে পাওয়ার আগেই পৃথিবী ছাড়তে হচ্ছে জয়নাবকে! সত্যিই এক করুণ পরিণতি আমাদের এই সমাজ ব্যবস্থায়। এমন কতো জয়নবকে যুদ্ধ করতে হয় প্রতিনিয়ত তার কোনো হিসাব আমাদের জানা নেই।