দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমরা জানি সব দেশেই বিয়ের একটা রীতি বা নিয়ম রয়েছে। তবে কিছু কিছু দেশের বিয়ের নিয়ম সত্যিই সকলকে বিস্মিত করে। এমন কিছু দেশের আজব বিয়ের নিয়ম দেখুন আজ।
ফিনল্যান্ড
ফিনল্যান্ডে নিয়ম রয়েছে বিয়ের পিঁড়িতে বসার পূর্বে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে হয় পুরুষ এবং মহিলাদের। আর সেই প্রতিযোগিতা হলো, হবু স্ত্রী’কে কাঁধে নিয়ে দৌড় দিতে হবে। যিনি এই প্রতিযোগিতায় প্রথম হন, তাকে সামাজিকভাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয় বিয়ের জন্য। এখন প্রশ্ন হলো, এমন রীতির কারণটা কী? ফিনল্যান্ডের বাসিন্দারা মনে করেন যে, এমন দৌড় স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক আরও মজবুত করে।
চীন
চীনে রয়েছে এক আজব নিয়ম। সেখানে যে কোনও উপায়ে হবু স্ত্রীর বন্ধুদের মন জয় করতে হবে হবু স্বামীকে! তাবেই মিলবে বিয়ের অনুমতি। বিয়ের পূর্বে হবু স্ত্রীর ৩/৪ জন বন্ধু বরকে ঘিরে বসে। তারপর নানাভাবে তাকে উত্যক্ত করা চলতে থাকে! এমন অবস্থায় রেগে গেলে কিছুতেই চলবে না। সব আবদার মেটালে তবেই তারা কনেকে বিয়ের অনুমতি দেবে। তারপর হবে বিয়ে! কখনও কখনও মোটা অঙ্কের টাকাও দাবি করে। আবার কখনও নাচ দেখানো বা গান শোনানোর আবদারও মেনে নিতে হয় চীনের ছেলেদের! এমন আজব নিয়ম চালু রয়েছে চীনে!
কিরগিজস্তান
কিরগিজস্তানে এমন একটা সময় ছিল, যখন বাড়িতে অবিবাহিত মেয়ে থাকলে চিন্তায় রাতের ঘুম হারাম হতো মা-বাবার। কিরগিজ রীতি অনুসারে, বিয়ের আসরে কান্নার শব্দকে শুভ মনে করা হয়ে থাকে। তাই কোনও পরিবারে ছেলের বিয়ের বয়স হলে, মেয়ে অপহরণের খোঁজে বেরিয়ে পড়তেন পরিবারের সকলেই। পছন্দসই কোনও অবিবাহিত মেয়েকে পেলেই, একেবারে অপহরণ। তারপর সে মেয়ে যতোই কাঁদুক, তাকে তখন বিয়ে করতে বাধ্য করা হতো। ব্যাপারটা হয়ে যেতো ‘শুভ’! বিয়ের কাজ শেষ হলে তখন মেয়ের বাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ করতো ছেলেপক্ষ। ১৯৯১ সালে এই ধরনের প্রথা আইন করে বন্ধ করেছে কিরগিজ সরকার।
ফ্রান্স
আরেকটি আজব দেশ আর আজ বিয়ের নিয়ম রয়েছে ফ্রান্সে। কোনো এক সময় ফরাসিদের বিয়ের আসরে কমোডের মতো দেখতে একটি পাত্র রাখা থাকতো। সেখানে রাখা হতো সুরা (মদ)। সদ্য বিবাহিত দম্পতিরা সেই পাত্রে এক প্রকার মুখ ঢুকিয়ে সেই সুরা পান করতেন! তবেই সম্পন্ন হতো বিবাহ প্রক্রিয়া। এক সময় এমন রীতিই ছিল ফরাসিদের। তবে এই রীতি নিয়ে অনেকেরই আপত্তি থাকায় শেষমেশ এই প্রথা সামাজিকভাবে বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেন দেশটির যাজক সম্প্রদায়।
মরিশিয়ানা
উত্তর আফ্রিকার ছোট্ট দেশ মরিশিয়ানার লোকজন মনে করে, ভারী চেহারার মেয়েরা পরিবারে সুখ-সমৃদ্ধি আনে। তাই বাবা-মা বাড়ির মেয়েকে খুব অল্প বয়স হতেই প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাওয়ানোর চেষ্টা করেন। খাদ্যতালিকার বড় অংশ জুড়েই থাকে ফ্যাট-সমৃদ্ধ খাবারসমূহ। যাতে করে বিয়ের সময় কেও খুঁত না ধরতে পারে হবু কনের! তবে অল্প বয়স হতেই ফ্যাট জাতীয় খাবার খেয়ে অনেক সময় অসুস্থ হয়ে পড়েন মেয়েরা। তবে তাতে কিছুই যায় আসে না! এই প্রথা এখনও প্রচলিত রয়েছে মরিশিয়ানায়।
রাশিয়া
রাশিয়ার জনগণের মধ্যে ধারণা রয়েছে যে, দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছেন যে সৈনিক, তাঁর কবরের সামনে দাঁড়িয়ে বিয়ে করলে নাকি দাম্পত্য জীবন পোক্ত হয়। আর তাই কোনও রুশ সেনার কবরস্থানে বিয়ে করতে পারাটা সেখানকার মানুষের কাছে এক সম্মানের। তাই বিয়ের কথাবার্তা চলার সময় হতেই সেনাদের কবরস্থান ‘বুক’ করে রাখেন রুশ নাগরিকরা! যাতে নির্দিষ্ট দিনে কবরস্থানের ওই স্থানটি ফাঁকা পেতে কোনও অসুবিধা না হয়!