দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ একের অধিক বিয়ে করার খবর শুনে যে কেও আশ্বর্য হবেন সেটিই স্বাভাবিক। তবে ভারতের মহারাষ্ট্রের দেঙ্গানমল গ্রামে এটি কোনো ব্যাপারই না! কিন্তু কেনো?
টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়, ভারতের মহারাষ্ট্রের দেঙ্গানমল গ্রামটি মুম্বাইহতে প্রায় ১৫০ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত। এই গ্রামের অধিকাংশ পুরুষই কমবেশি অন্তত ৩ জন স্ত্রীকে নিয়ে সংসার করেন। তবে নিছক ভোগলালোসা মেটানোর জন্য বহুবিবাহের পথ তারা বেছে নেন না। বরং একাধিক বিয়ে করার একমাত্র কারণ হলো পরিবারে পানি আনার লোকের সংখ্যা বাড়ানো!
দেঙ্গানমল এমন একটি গ্রাম যেখানে প্রবল পানি সংকট। প্রত্যন্ত এই গ্রামের পানির একমাত্র উৎস হলো কয়েকটি কুয়ো। সেই সমস্ত কুয়া গ্রীষ্মের সময় শুকিয়ে যায়। তখন দূরবর্তী কুয়া কিংবা নদী হতে পানি বয়ে আনা ছাড়া উপায় থাকে না ওই গ্রামের মানুষদের।
গ্রামবাসীরা বলেছে, গ্রীষ্মকালে পানি বয়ে আনার জন্য যাতায়ত মিলিয়ে প্রায় ১২ ঘণ্টা হাঁটতে হয়। মূলত মহিলারাই এই পানি আনার জন্য কাজ করে থাকেন। প্রতিবার ১৫ লিটারের দুটি কলস বয়ে আনেন বাড়ির মহিলারা। এমতাবস্থায় এই গ্রামের পুরুষরা বুঝেছেন, বহুবিবাহই পানি সমস্যা মেটানোর সবচেয়ে সহজতম রাস্তা। বাড়িতে বউয়ের সংখ্যা যতো বাড়বে, ততো বাড়বে পানি আনার হাত এবং কলসের সংখ্যাও।
সে কারণেই অনেকেই দু’টি কিংবা ৩টি স্ত্রী নিয়ে ঘর করছেন দেঙ্গানমলে। ঘরের বউদের এই গুরুত্বের সুবাদে গ্রামে বিশেষ সম্মানও পান বিবাহিতা মহিলারা! বিয়ের জন্য কন্যাসন্তান সম্পন্না বিধবা কিংবা বিবাহবিচ্ছিন্নাদের কদর আরও বেশি। কারণ ঘরে কন্যাসন্তান আসার অর্থই হলো ঘরের কাজকর্ম সামলাতে পারবে মেয়ে। বহুবিবাহ যে সমস্যার সমাধান নয়, যদিও তা মানছেন গ্রামবাসীরাও।
তবে তাদের বক্তব্য হলো, প্রশাসনের কাছে বহু আবেদন-নিবেদন করেছেন এই বিষয়ে। কিন্তু সরকার তাদের প্রতি খুবই উদাসীন। আজ পর্যন্ত পানির ব্যবস্থা হয়নি এই গ্রামটিতে। তাই অগত্যা কোনো উপায় না পেয়ে শেষ পর্যন্ত একাধিক বিয়ের পথ বেছে নেন!