দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এমন কথা হয়তো আমরা কেও আগে কখনও শুনিনি। আজ আমরা এমন এক গ্রামের গল্প শোনাবো যে গ্রামে মেয়ের বাবা হলেই চুল-দাড়ি কাটা ফ্রি!
কন্যাভ্রূণ হত্যা রুখতে এক অভিনব পথে হাঁটতে শুরু করেছে ভারতের মহারাষ্ট্রের প্রত্যন্ত গ্রাম মারাথওয়াদার বাসিন্দা অশোক পাওয়ার। কন্যা সন্তানের বাবা হলেই তার সেলুনে দিচ্ছেন বিনামূ্ল্যে চুল-দাড়ি কাটার সুযোগ! অশোক পাওয়ারের বক্তব্য হলো, ‘কন্যা সন্তান বাঁচান’।
অশোক পাওয়ার এখনও পর্যন্ত ১৫ মেয়ের বাবাকে বিনামূল্যে পরিষেবা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘অনেকেই বলেন, মেয়ে জন্মালে অনেক খরচ। তাই মেয়ের বাবাদের অন্তত একটা খরচ কমানোর চেষ্টা করলাম মাত্র। এবার অন্তত তারা ছোট্ট মেয়েটিকে ভালোবাসুন!’’
অশোকের বক্তব্য হলো, ‘প্রথম থেকেই চেয়েছিলাম আমাদের মেয়ে হোক। তারপর শ্রাবণী আসে। খুব খুশি হয়েছিলাম। ও আমার জন্য খুবই ‘লাকি’। ৬ বছর ধরে আমি এক দর্জির দোকানে কাজ করতাম। শ্রাবণী আসার পরই নিজের দোকান খুললাম। তবে চারপাশের পরিস্থিতি দেখে খারাপ লাগতো আমার। যারা মেয়েদের পূজো করে, তারাই গর্ভের অন্ধকারে মেরে ফেলতে চায় কন্যাভ্রূণকে! তাই মেয়ের বাবাদের সম্মান জানাতে আমি নিজের মতো করে একটা প্রচেষ্টা করতে চেয়েছি।’
অশোকের ছোট্ট এই সেলুনটির নাম মনীষা। এ বছরের প্রথম দিন হতেই ওই সেলুনে তিনি মেয়ের বাবাদের চুল-দাড়ি বিনামূল্যে কাটা শুরু করেছেন। সদ্য মেয়ের বাবারা তার সেলুনে সম্পূর্ণ বিনামূল্যেই চুল-দাড়ি কাটাতে পারবেন।
অশোক আরও জানিয়েছেন, মনীষাতে চুল ও দাড়ি কাটাতে খরচ পড়ে ৫০ টাকা। তবে যদি কোনও পরিবারে কন্যা সন্তানের জন্ম হয়, তাহলে ‘মনীষা’তে চুল-দাড়ি কাটাতে কোনও টাকা-পয়সা লাগবে না সেইসব মেয়ের বাবাদের। মেয়ের ছ’মাস বয়স অবধি এক বার করে এই সুবিধা মিলবে। সত্যিই চমৎকার একটি আইডিয়া। কন্যা সন্তানরাও যে মানুষ তার একটি উদাহরণ তৈরি করতেই এমন উদ্যোগ। এমন উদ্যোগের সাধুবাদ জানাই আমরা।