দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বর্তমান বিশ্ব মন্দা ও যেখানে বেকারত্ব হার রেকর্ড পরিমাণ সেই অবস্থায় বিশ্বে পাঁচ ধনী দেশের তালিকা প্রকাশ করা হলো। যদিও বিশ্ব অভাব, দারিদ্র, বেকারত্ব সহ নানান সমস্যায় জর্জরিত এর মাঝেও কিছু দেশ তাদের অর্থনৈতিক শক্তিকে আগের চেয়েও মজবুত করেছে। এখানে তেমন পাঁচটি ধনী দেশের তালিকা দেয়া হল। বিশ্বের ৫০টি বৃহৎ অর্থনীতির দেশ থেকে জিডিপি ও ক্রয় ক্ষমতার উপর ভিত্তিকরে এ পাঁচ টি দেশের নাম প্রকাশ করেছে ইন্টারন্যাশনাল মানিটারি ফান্ড(আইএমএফ), এর মাঝে কিছু নাম শুনলে হয়ত আপনি আশ্চর্য না হয়ে পারবেন না।
পঞ্চমঃ সুইজারল্যান্ড, মাথাপিছু আয় $৪৬,৪৭৪
তালিকার পঞ্চম স্থানে অবস্থান করছে সুইজারল্যান্ড, যারা একই সাথে ইউরোপের দ্বিতীয় ধনী দেশ। ইউরোপীয় অর্থনীতির মন্দা স্বত্বেও সুইস অর্থনীতি ভালো অবস্থানে আছে, তারা তাদের জিডিপি ২০১০ অর্থবছর থেকে ৩% বাড়িয়েছে যা ২০১২ তে আনুমানিক ০.৯% বৃদ্ধি করেছে। সুইস অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি সুইস ওষুধ কোম্পানি নোভারটিস, যাদের শেয়ার মূল্য গত অর্থবছর থেকে এবার ৪৫% বৃদ্ধি পেয়েছে। আইএমএফ ধারণা করছে ২০১৮ সালে দেশটির মাথাপিছু আয় ৫৪ হাজার ডলারে উন্নীত হবে।
চতুর্থঃ সংযুক্ত আরব আমিরাত, মাথাপিছু আয় $৪৯,৮৮৩
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলির মাঝে তেল রপ্তানি করে ভালই অর্থ উপার্জন করছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। এরই মাঝে তেল রপ্তানির ফলে দেশটির জনগণের মাথা পিছু আয় ব্যাপক বৃদ্ধি লাভ করেছে। এই দেশটির প্রধান শহর দুবাই এরই মাঝে বিশ্বের আকর্ষণীয় শহর হিসেবে পর্যটকদের আকৃষ্ট করেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাত চারিদিকে মরুভূমি পরিবেষ্টিত একটি রাষ্ট্র যার অর্থনীতি নির্ভর করে দেশটির খনিজ সম্পদ তেলের উপর। দেশটিতে ২০১১ সাল থেকে বৈদেশিক বিনিয়োগ ও লক্ষণীয় হারে বৃদ্ধি পেয়েছে যা দেশটির অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করার পেছনে একটা বিরাট কারণ হিসেবে দেখছে বিশ্লেষকরা। আইএমএফ পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৮ সালে দেশটির মাথাপিছু আয় ৫৭ হাজার ডলারে উন্নীত হতে পারে।
তৃতীয়ঃ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, মাথাপিছু আয় $৫১,২৪৮
সকল বিনিয়োগ কারীরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির মূল নিয়ামক শক্তি হিসেবে কাজ করছে। কারন বিনিয়োগ কারীরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগকে সবচেয়ে নিরাপদ ভাবছে। দেশটিতে বর্তমানে বেকারের হার ৭.৫%। এর মাঝেও দেশটির জনগণ ধনী জীবন যাপন করছে। বিশেষজ্ঞেরা বলছেন দেশটি তার অর্থনীতিক অবস্থাকে সামনে আরও উপরে নিতে সক্ষম হবে। ২০১৮ সালে মার্কিন নাগরিকদের মাথাপিছু আয় ৬৩ হাজার ডলারে পৌঁছাতে পারে বলে আইএমএফ মনে করে।
দ্বিতীয়ঃ নরওয়ে, মাথাপিছু আয় $৫৬,৬৬৩
নরওয়ে ইউরোপ নতুন ধনবান জাতি। সুইজারল্যান্ডের মতোই ইউরোপিয়ান অর্থনীতির ঋণ সঙ্কটের মাঝেও নরওয়ের অর্থনীতি স্থিতিশীল ছিল। নরওয়ের অর্থনীতি দেশটির তেল সম্পদের উপর প্রতিষ্ঠিত, ২০১৩ সালে এদের অর্থনীতির জিডিপি বৃদ্ধি পায় 0.৭%। কিন্তু নরওয়ের কিছু বিশেষজ্ঞ দেশটির তেল সম্পদের উপর জোর দেয়া অর্থনীতিকে সামনে হুমকির মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা করলেও নরওয়ে বর্তমানে সঠিক অবস্থানেই আছে। আর ২০১৮ সালের মধ্যে দেশটির মাথাপিছু আয় ৬৬,০০০ ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে আইএমএফ ইঙ্গিত দিয়েছে।
প্রথমঃ সিঙ্গাপুর, মাথাপিছু আয় $৬১,৫৬৭
ব্যবসাকেন্দ্র ও করস্বর্গ হিসেবে সিঙ্গাপুরের উথান। গবেষণা প্রতিষ্ঠান WealthInsight এর ভাষ্যমতে দেশটি পৃথিবীর সর্ববৃহৎ ব্যবসাকেন্দ্র হিসেবে ২০২০ সালের মধ্যেই ছাড়িয়ে যাবে সুইজারল্যান্ডকেও। সিঙ্গাপুরের অধিবাসীদের বর্তমান জীবনযাত্রার মান তারই ইঙ্গিত বহন করে যেখানে প্রত্যেকের মাথাপিছু আয় ৬১,৫৬৭ মার্কিন ডলার। সাম্প্রতিক সময়ে দেশটি পৃথিবীর অন্যতম দ্রুত ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে আবির্ভুত হয়েছে।
বৈদেশিক বিনিয়োগের কারনে সিঙ্গাপুর এখন দক্ষিন-পূর্ব এশিয়ার অর্থনৈতিক দানব হিসেবে আখ্যায়িত। আসন্ন বছরগুলোতে এর অর্থনীতি আরও শক্তিশালী হবার সমূহ সম্ভাবনা এবং ২০১৮ সাল নাগাদ মাথাপিছু আয় বেড়ে ৭৭,০০০ মার্কিন ডলারে উপনীত হবে বলেই সবার ধারণা। পাশাপাশি সূচক তহবিলের দিক থেকেও সিঙ্গাপুর বেশ ভালো অবস্থানে রয়েছে যা গতবছরের তুলনায় বেড়েছে ২২ শতাংশ। এক্সচেঞ্জ ট্রেড ফান্ডও বিগত ২ বছরে প্রত্যাশাতীত বেড়েছে, বিশেষ করে মুলধন এবং রিয়েল এস্টেটে। সূচক তহবিলের মত না হলেও এটিও আসন্ন ভবিষ্যতে বাড়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে।
সূত্রঃ fool.com