দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ লাদেনকে হত্যার দীর্ঘদিন পার হলেও মাঝে-মধ্যেই শোনা যায় তাকে হত্যার নানা কাহিনী। এবার উঠে এসেছে লাদেনকে কীভাবে সেদিন হত্যা করা হয়েছে। সেটি বলেছেন লাদেনের স্ত্রী।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকার, বিশেষ বাহিনী নেভি সিল এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বারবার বর্ণনা দিয়েছে কীভাবে হত্যা করা হয়েছিল লাদেনকে। এবারই প্রথম লাদেনের পরিবারের কোনো সদস্য জানালেন আসরে সেদিন কীভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছিল।
সম্প্রতি লাদেনের জীবনের ওপর একটি বই লিখেছেন ক্যাথি স্কট ক্লার্ক এবং আদ্রিয়ান লেভি। এক সাক্ষাৎকারে এই দু’জনের কাছেই সেদিনের ঘটনার বিবরণ দেন লাদেনের সর্বকনিষ্ঠ স্ত্রী আমাল। লাদেনের সর্বকনিষ্ঠ স্ত্রী আমালের ওই স্মৃতিচারণা তুলে ধরা হয় দ্য সানডে টাইমসের প্রতিবেদনে।
সাক্ষাৎকারে আমাল বলেছেন, পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদ শহরের একটি বাড়িতে স্ত্রী এবং সন্তানদের নিয়ে আত্মগোপনে ছিলেন ওসামা বিন লাদেন। প্রায় ৬ বছর ধরে সেখানে আত্মগোপন করেছিলেন তারা। ২০১১ সালের ১ মের ঘটনা। যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর একটি ব্লাক হক হেলিকপ্টার উড়ে আসে সেখানে। তখন তিনি তার স্বামীর মুখে ভয়ের ছাপ দেখেছিলেন বলে জানান আমাল।
আমাল আরও বলেছেন, সেনাসদস্যরা যখন বাড়ির দিকে আসছিল তিনি এবং লাদেনের অপর দুই স্ত্রী তাদের সন্তানদের নিয়ে বাড়ির ওপর তলায় চলে যান ও প্রার্থনা করতে থাকেন। লাদেন তখন তাদেরকে নিচ তলায় চলে আসতে নির্দেশ দেন। বলেন, ‘তারা আমাকে চায়, তোমাদের না।’ এসময় স্বামীর কাছে সন্তান হুসেইনকে নিয়ে থেকে যান আমাল। এদিকে ততোক্ষণে যুক্তরাষ্ট্রের নেভি সিল সদস্যরা বাড়ির ভেতরে ঢুকে লাদেনের ছেলে খালিদকে হত্যা করে। পথে তাদের সঙ্গে লাদেনের অপর দুই মেয়ে সুমাইয়া ও মরিয়ামেরও দেখা হয়। তাদেরই একজন সেনাসদস্যদের লাদেনের অবস্থান চিনিয়ে দেয়।
আমাল বলেছেন, একপর্যায়ে সেনাসদস্যরা লাদেনের ঘরের মধ্যে প্রবেশ করে। সেখানে তার সঙ্গে ছিলেন তিনি এবং তার ছেলে হুসেইন। সে সময় তিনি তাদেরকে বাধা দিতে গেলে তার পায়ে গুলি করে সেনারা সামনের দিকে এগিয়ে যায়। একটু ধাতস্থ হয়ে লাদেনের কাছে যান আমাল। তবে ততোক্ষণে গুলিতে মৃত্যু ঘটেছে লাদেনের। সেদিন মায়ের পাশে বসে বাবার হত্যাকাণ্ড স্বচোক্ষে দেখেছিল শিশুপুত্র হুসেইন।
স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে আমাল আরও বলেন, লাদেনকে হত্যার পর সেনাসদস্যরা তার দ্বিতীয় স্ত্রী খাইরিয়াহ এবং দুই মেয়ে সুমাইয়া ও মরিয়ামকে লাদেনের লাশের পাশে নিয়ে যায়। তারপর লাদেনের পরিচয় শনাক্ত করা করেন তারা। শনাক্তকরণ শেষে লাদেনের লাশ নিয়ে চলে যায় নেভি সিল সদস্যরা।
আমাল আরও জানান, ওই বাড়িতে হামলা হতে পারে সে কথা কখনও চিন্তাই করেননি লাদেন। তাই তার কোনো পূর্ব পরিকল্পনাও সে সময় ছিল না। স্বামীর জীবনের শেষ মুহূর্তের ওই রকম বিভীষিকাময় হত্যাকাণ্ড নিয়ে তারা কোনো দিন আলোচনা করেননি।