দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গণহত্যার কথা আমরা শুনেছি। কিন্তু ৭৫০,০০০ পোষ্য প্রাণী হত্যা? অবিশ্বাস্য শোনালেও এমন ঘটনাও ঘটেছে ২য় বিশ্বযুদ্ধের পূর্বে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে সম্ভাব্য খাদ্য সঙ্কট মোকাবেলা করার কথা মাথায় রেখে ব্রিটিশ সরকার ন্যাশনাল এয়ার রেইড প্রিকশানস কমিটি গঠন করে। এই কমিটিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় গৃহপালিত পশু নিধন করার। কারণ তাদের ধারণা ছিল, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর গৃহপালিত পশুদের খাওয়ানোর জন্য খাদ্যের উপর অতিরিক্ত চাপ পড়তে পারে।
এই কমিটির তরফ থেকে “অ্যাডভাইস ফর অ্যানিম্যাল অওনার্স” নামক একটি প্যামফ্লেট লিখে সাধারণ জনগণের কাছে বিতরণ করা হয়। প্যামফ্লেটে একটি বিশেষ ধরনের বন্দুকের ছবি দিয়ে সেটির মাধ্যমে পোষ্য প্রাণীদের হত্যার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। এছাড়া প্যামফ্লেটে বলা হয়,“যদি সম্ভব হয় তাহলে পোষ্য প্রাণীদের জরুরী অবস্থা ঘোষণার পূর্বেই গ্রাম নিয়ে যান”
এই ঘোষণাটি সেই সময় ব্রিটেনের সব সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছিল। ব্রিটেনের জনগণ সম্ভাব্য খাদ্য সঙ্কট থেকে নিজেদের ও পোষা প্রাণীদের রক্ষার জন্য সরকারের ঘোষণায় সাড়া দেয় । ঘোষণার এক সপ্তাহের মধ্যেই মেরে ফেলা হয় ৭৫০,০০০ পোষা প্রাণীকে।
এখানেই শেষ নয়। ব্রিটেনের গোয়ান্দা সংস্থাকেও কাজে লাগানো হয় এই কাজে। তারা গোপন ভাবে পোষা কুকুর হত্যার পরিকল্পনা করতে থাকে, এবং বিড়ালের বিরুদ্ধে শুরু করে “হেট ক্যাম্পেইন”।
কিছু ব্যক্তি ও অ্যানিম্যাল চ্যারিটি এই পশু হত্যার প্রতিবাদ করেছিল। কিন্তু তাতেও বিষয়টি থেমে যায়নি। বরং বহু সংখ্যক ব্রিটিশ পশু পালক স্বেচ্ছায় পশু হাসপাতালে তাদের পোষা প্রাণীদের হত্যার জন্য নিয়ে আসতে থাকে। এমনকি লন্ডনের চিড়িয়াখানায় থাকা পশুদেরও হত্যা করা হয়। সম্ভাব্য যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ব্রিটিশদের কাছে তখন পশু পালন এক ধরনের বিলাসিতা মনে হতে থাকে।
ব্যাপক মাত্রায় এই পশু নিধন মূলত শুরু হয় ১৯৩৯ সালের গ্রীস্মে। আশ্চর্যজনক ব্যাপার হল, এই সময়ের আরও কয়েক মাস পরে জার্মানি ব্রিটেন আক্রমণ করে। অর্থাৎ, এই মধ্যবর্তী সময়ে রাজনৈতিকভাবে যুদ্ধ প্রতিহত করার প্রচেষ্টার পূর্বেই পশু হত্যার এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।