দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মানসিকভাবে অসুস্থ এক ব্যক্তিকে ১১ বছর ধরে খাঁচায় বন্দি করে রাখা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে চীনের জিয়াংজি প্রদেশের শাংফান গ্রামে। ২০০১ সাল থেকে লোহার খাঁচায় আটকে রাখা হয়েছে একজন মানসিকভাবে অসুস্থ ব্যক্তিকে।
মানসিকভাবে অসুস্থ উ উয়ানহং (৪২)। ২০০১ সালে একটি শিশুকে পিটিয়ে হত্যা করেছিলেন তিনি। সেই থেকে তাঁঁর পরিবারও কঠোর। ফের এ ধরনের দুর্ঘটনা যাতে না ঘটে, সে জন্য উয়ানহংকে খাঁচায় বন্দি করে রাখে তাঁর পরিবারের লোকজন।
প্রায় এক যুগ ধরে ছোট্ট একটি খাঁচাতেই উয়ানহংয়ের বসবাস। খাঁচার মধ্যেও আবার শিকল! তাঁর পা শিকল দিয়ে বাঁধা। গায়ে শুধু একটি টি-শার্ট।
খবরে বলা হয়, ১৫ বছর বয়সেই উয়ানহংয়ের মানসিক রোগ ধরা পড়ে। ২০০১ সালে ১৩ বছরের একটি শিশুকে পিটিয়ে হত্যা করেন তিনি। এ হত্যাকাণ্ডের কারণে তাঁর সাজাও হয়। কিন্তু সজ্ঞানে হত্যা না করার বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় কর্তৃপক্ষ এক বছর পরই তাঁকে ছেড়ে দেয়। এর পরই তাঁকে শিকল পরিয়ে ঘরবন্দি করা হয়। কিন্তু তিনি একদিন সেই শিকল ছিঁড়ে পালিয়ে যান। তাঁকে দেখে গ্রামবাসী আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। পরে তাঁর মা ওয়াং মুজিয়াং ছেলেকে খাঁচায় বন্দি করেন। কিন্তু সেই খাঁচাও ভেঙে পালিয়ে যান তিনি। পরে পরিবারের লোকজন বাধ্য হয়ে লোহার শক্ত খাঁচা তৈরি করে সেখানে বন্দি করে উয়ানহংকে।
ওয়াং মুজিয়াং বলেন, ‘আমার ছেলে পাগল হতে পারে, কাওকে পিটিয়ে হত্যা করতে পারে, কিন্তু সে তো আমার সন্তান। তাকে খাঁচায় বন্দি দেখাটা খুবই কষ্টের, যেন ছুরি দিয়ে আঘাত করার মতো!’
উয়ানহংকে দিনে তিনবার খাবার দেওয়া হয়। মলমূত্রের প্রয়োজন হলে দেওয়া হয় প্যান। ওয়াং মুজিয়াং বলেন, ‘প্রতিবারই আমি খাবার দিই। ছেলের খাঁচার পাশে বসে থাকি আর কাঁদি।’ দক্ষ চিকিৎসক আর অর্থের অভাবে চীনের অনেক মানসিক রোগী, বিশেষ করে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ সুষ্ঠু চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত।
চীনে ভারসাম্যহীন মানুষের পুনর্বাসনের বিধি রয়েছে কিন্তু তারপরও একজন মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিকে কেনো এমন অমানবিকভাবে খাঁচায় আটকে রাখা হয়েছে তা কেওই বলতে পারছে না। এএফপি’র বরাত দিয়ে খবরটি প্রকাশিত হয়েছে দৈনিক প্রথম আলো’র অনলাইন সংস্করণে।