দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বিয়ের বয়স পেরিয়ে যাওয়া ৪০ লাখ সৌদি তরুণীদের নিয়ে তাদের অভিভাবকদের উৎকণ্ঠা বড়েছে! সম্প্রতি এমনই একটি তথ্য উঠে এসেছে সংবাদ মাধ্যমে। সৌদি আরবে ৪০ লাখ তরুণীর বিয়ের বয়স পেরিয়ে গেলেও পাত্রস্থ করতে পারছেন না অভিভাবকরা।
এমন এক পরিস্থিতিতে সৌদি আরবে ৪০ লাখ তরুণীদের পরিবারের সদস্যদের দুশ্চিন্তায় সময় কাটছে বলে সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়। মেয়েদের ভবিষ্যৎ নিয়ে দেশটির অনেক পরিবারই এখন উদ্বিগ্ন। সৌদি আরবের জাতীয় দৈনিক আল-রিয়াদ এক পরিসংখ্যানের বরাত দিয়ে এই তথ্য প্রকাশ করেছে।
তথ্যে বলা হয়েছে, ২০১৫ সালে সৌদি আরবে বিয়ের বয়স পার হয়েছে এমন তরুণীর সংখ্যা ৪০ লাখে পৌঁছে গেছে। দেশটির সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয়গুলোর মধ্যে প্রধান হলো তরুণীদের বিয়ের বয়স পেরিয়ে যাওয়া। ক্রমবর্ধমান হারে অবিবাহিত তরুণীর সংখ্যা ভয়াবহ আকার ধারণ করছে বলে ওই তথ্যে উল্লেখ করা হয়েছে।
সৌদি আরবের আল-আশা সিটির এক মসজিদের ইমাম ডা. আহমেদ আলবো আলী এ বিষয়ে বলেছেন, বিয়ের স্বাভাবিক বয়স পেরিয়ে গেছে এমন নারীর সংখ্যা ২০০৫ সালে ছিল মাত্র ১৫ লাখ। ২০১৫ সালে এই সংখ্যা লাফিয়ে দাঁড়িয়েছে ৪০ লাখে। এর অর্থ হচ্ছে, ৩০ বছরের বেশি বয়সের দুই-তৃতীয়াংশ সৌদি তরুণী গত ১০ বছরে বিয়ে করেননি বা বিয়ে হয়নি।
ইমাম ডা. আহমেদ আলবো আলী আরও বলেন, ‘ইসলাম বিধবা ও তালাকপ্রাপ্ত নারীদের পূর্ণ অধিকার দিয়েছে; তারা চাইলেই আবারও বিয়ে করতে পারেন। অথচ দুর্ভাগ্যজনক বিষয় হলো অনেক পুরুষই এমন মেয়েকে বিয়ে করতে চান; যার পূর্বে কখনও বিয়ে হয়নি। যে কারণে বিধবা ও তালাকপ্রাপ্ত নারীরাও পুনরায় বিয়ের সুযোগ পাচ্ছেন না। সে কারণেই সৌদি আরবে বিয়ের বয়স পেরিয়ে যাওয়া নারীদের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে।’
এক তথ্যে জানা গেছে, বিধবা কিংবা তালাকপ্রাপ্ত নারীদের কোনো অপরাধ নেই। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, প্রথম বিয়ে যারা করেননি তাদের চেয়ে বিধবা কিংবা তালাকপ্রাপ্তা নারীদের মধ্যে বিয়ে সম্পর্কে সচেতনতার মাত্রা অনেক বেশি। অনেক তালাকপ্রাপ্তা নারী আবার বিয়ে করেছেন ও বর্তমানে সুখী দাম্পত্য জীবনও কাটাচ্ছেন।
সংবাদ মাধ্যমকে এ বিষয়ে আল-উইয়ুন সিটি পরিবার উন্নয়ন কেন্দ্রের পরিচালক মুহাম্মদ আল-সালিম বলেছেন, আরব সমাজে তালাকপ্রাপ্তা নারীদেরকে ভিন্নভাবে দেখা হয়ে থাকে; সামাজিক কুসংস্কারও রয়েছে অনেকক্ষেত্রে। তালাকপ্রাপ্তা নারীদের সঙ্গে সামাজিক কলঙ্ক লেপন করে দেওয়া হয়। ঘর ভেঙে যাওয়ার ক্ষেত্রে অনেকেই তালাকপ্রাপ্তা নারীদেরকেই দোষারোপ করেন। আবার তাদের সম্পর্কে বাজে চিন্তা-ভাবনা ও মন্তব্যও করা হয়ে থাকে। এসব সমস্যাগুলো কাটিয়ে ওঠা দরকার বলেও সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।
উল্লেখ্য, বিবাহযোগ্য নারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রবাসীদের জন্যেও দারুন সুযোগ দেয় সৌদি কর্তৃপক্ষ। বলা হয়, সৌদি তরুণীদের বিয়ে করলেই মাসিক বেতনসহ পেনশন দেওয়া হবে। বলা হয়, কোনো প্রবাসী যদি সৌদি নারী বিয়ে করেন, তাহলে তিনি পেনশনসহ বেতন সুবিধা ভোগ করতে পারবেন।