দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ যুক্তরাষ্ট্র গণতন্ত্রের পথে মিয়ানমারের যাত্রাকে সমর্থন দিলেও রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো বর্বরোচিত হামলার জন্য দায়ী প্রত্যেককে জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে বলে মন্তব্য করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
সোমবার মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হেদার নুওয়ার্ট ওই বিবৃতিতে আরও বলেন, ‘প্রায় অর্ধশতকের স্বৈরশাসনের বেড়াজাল ভেঙে গণতান্ত্রিক সমাজের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল মিয়ানমার। যুক্তরাষ্ট্র মিয়ানমারের এই রূপান্তরকে সমর্থন করে আসছে। কিন্তু দেশটির নির্বাচিত বেসামরিক সরকার সে দেশের শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির জন্য জরুরি। এটি মিয়ানমার ও মার্কিন অংশীদারত্বের জন্যও জরুরি।’
সাম্প্রতিক সময় মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান সহিংসতা, রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো অত্যাচার-নির্যাতনের বিষয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এখানে এটা বলাও অপরিহার্য যে, যেকোনো ধরনের নৃশংসতার জন্য দায়ী প্রত্যেককেই জবাবদিহি করতে হবে।’
বিবৃতিতে বলা হয়, মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সঙ্গে মার্কিন বাহিনীর কার্যক্রম ইতিমধ্যে কমানো হয়েছে। সেইসঙ্গে সব ধরনের সামরিক সামগ্রী বেচাকেনার ওপরও ইতিমধ্যেই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। রাখাইন রাজ্যে সহিংসতা বন্ধ ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র এসব পদক্ষেপ নিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, গত ২৫ আগস্ট হতে জেড অ্যাক্টের আওতায় মিয়ানমারের জ্যেষ্ঠ নেতা ও সামরিক বাহিনীর সদস্যদের ভ্রমণ ভিসা স্থগিত করা হয়েছে। তাছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের আইনের মধ্য হতে গ্লোবাল ম্যাগনিটেসকি অ্যাক্টের আওতায় কীভাবে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা যায়, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সেইসঙ্গে উন্নয়ন অংশীদার এবং বিভিন্ন জোটের সঙ্গে আলোচনা করে এই বিষয়ে জবাবদিহি নিশ্চিত করা যায় কি না, সেটিও দেখছে যুক্তরাষ্ট্র।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রও কাজ করছে সেকথা জানিয়ে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রাখাইন রাজ্যের সংশ্লিষ্ট এলাকায় জাতিসংঘের তদন্ত দল এবং গণমাধ্যমকে প্রবেশাধিকার দিতে তারাও দাবি জানিয়ে আসছে।
বিবৃতিতে আরো বলা হয় যে, গণতন্ত্রের পথে মিয়ানমারের যাত্রায় সব সময় সমর্থন দেবে যুক্তরাষ্ট্র। সেইসঙ্গে রাখাইন রাজ্যে চলমান সংকট নিরসনেও পাশে থাকবে যুক্তরাষ্ট্র। মিয়ানমার সরকার এবং সেনাবাহিনীকে শীঘ্রই শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে পদক্ষেপ নিতে হবে। ওই রাজ্যের বাসিন্দাদের জন্য অবশ্যই মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করতে হবে। তাছাড়া দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন, তাদেরকে রাখাইন রাজ্যে যথাযথ সুবিধা দিয়ে আবার ফিরিয়ে নিতে হবে। রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের নাগরিকত্ব দিয়ে তাদের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
এসব নিশ্চিত করা হলে মিয়ানমারকে সব ধরনের সহায়তা দিতে যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তুত বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।