দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ নিলামে অনেক কিছুই বিক্রি হয়। তাই বলে মানুষ! ঠিক তাই। এমন একটি দেশের গল্প রয়েছে আজ, যে দেশে নিলামে মানুষ বিক্রি করা হয়!
আমরা আদি কালের সেইসব গল্পের কথা শুনেছি, কৃতদাস প্রথা। অর্থাৎ দাস বা দাসিদের বড় বড় ধনপতিরা কিনে নিতেন। তাকে তখন তাদের ইচ্ছামতো ব্যবহার করছেন। সেই কৃতদাস প্রথা এখন আর পৃথিবীর কোথাও নেই। কিন্তু সম্প্রতি এমন একটি খবর আবারও সেই কৃতদাসের কথায় স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে।
যেমন বিক্রেতা দাম হাকাচ্ছেন ৯শ দিনার। এর দাম উঠতে উঠতে এক সময় তা হয়ে যায় ১ হাজার থেকে ১১শ দিনারে। এভাবেই একজন মানুষের দাম হাকিয়ে চলেন তিনি।
ঠিক এভাবেই নিলাম মানুষ কেনা-বেচা হচ্ছে! দুজন মানুষের মূল্য মাত্র ৮‘শ মার্কিন ডলার। আধুনিকযুগের কৃতদাস হিসাবে জনপ্রতি মাত্র ৪’শ ডলারে বিক্রি হচ্ছে এইসব মানুষগুলো!
সংবাদ মাধ্যমের খবরে জানা যায়, লিবিয়ায় কৃতদাস বিক্রির এমন হাট রয়েছে অন্তত ৯টি। সরেজমিনে ঘুরে এমনই একটি প্রতিবেদন দিয়েছে মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন। মোবাইল ফোনের গোপন ভিডিওর মাধ্যমে সিএনএন এই বিষয়ে প্রমাণও হাজির করে।
ওই ভিডিওতে দেখা যায় যে, সুঠাম দেহের অধিকারী এক ব্যক্তিকে ফার্মের কাজের জন্য বিক্রি করা হচ্ছে। তবে যিনি বিক্রি করছেন তিনি ক্যামেরার সামনে থেকে সরে আছেন। সিএনএন গোপন ক্যামেরায় ধরা পড়ে এসব বাস্তব চিত্র।
সম্প্রতি লিবিয়ার ত্রিপোলিতে গিয়ে দেখা যায় যে, মাত্র ৬ হতে ৭ মিনিটে ১২ হতে ১৩ জন মানুষ কৃতদাস হিসাবে বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। বিক্রি করার সময় কৃতদাসরা যে যে পেশায় পারদর্শী তাকে ঠিক সেই কাজের জন্যই নিলামে তোলা হয়ে থাকে।
ক্রেতারা তাদের সাধ্যমতো দামে ক্রয় করতে হাত তুলে সম্মতি প্রকাশ করেন! মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যেই তারা বিক্রি করে দিচ্ছে তাদের নিজেদের ভাগ্যকে। বিক্রয় হওয়া মানুষকে তুলে দেওয়া হয় তাদের নতুন ক্রেতার হাতে।
বিক্রি হয়েছে এমন দুজনের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তাদের মানসিকভাবে বিধ্বস্ত এবং ভীত দেখায়। তারা কোনো কথা বলতে পারছিলেন না বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
প্রতিবছর অন্তত ১০ হাজার মানুষ উন্নত জীবনের আশায় লিবিয়া সীমান্ত হয়ে ইউরোপে পাড়ি দেয়। তাদের বেশির ভাগই সব কিছু বিক্রি করে ভূমধ্যসাগর পার হয়ে ইউরোপে যেতে চেষ্টা করে। ইদানিং লিবিয়ার কোস্টগার্ডের শক্ত অবস্থানের কারণে কিছু মানুষবাহী নৌকা গিয়ে পৌঁছায় মানব পাচারকারীর হাতে। যে কারণে এসব শরণার্থী এবং অভিবাসন প্রত্যাশীরা হয়ে যান কৃতদাস।
এই সব তথ্য এবং ভিডিওচিত্র লিবিয়া সরকারের হাতে তুলে দেওয়ার পর তারা এই বিষয়ে তদন্ত চালানোর কথা জানান। লিবিয়া সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয় যে, একদল অপরাধীরা সুসংগঠিতভাবে এই ধরনের অপরাধ চালিয়ে যাচ্ছে।