দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বর্তমান আধুনিক জার্মানীতে অ্যাডলফ হিটলারের কোনো স্মৃতিকে অপয়া মনে করা হয়। তবে এবার একটু ব্যতিক্রমি ঘটনা ঘটেছে। এবার চার্চে রাখা হচ্ছে হিটলারের সেই ঘণ্টা!
বর্তমান আধুনিক জার্মানীতে অ্যাডলফ হিটলারের কোনো স্মৃতিকে অপয়া মনে করা হলেও এবার এর ব্যতিক্রম হয়েছে। হিটলারের স্মৃতিঘেরা একটি ঘন্টা রেখে দেওয়া হয়েছে চার্চে।
বিবিসির এক খবরে বলা হয়েছে, জার্মানির একটি চার্চে রাখা রয়েছে হিটলারের স্মৃতিবিজড়িত একটি ঘণ্টা। যদিও কর্তৃপক্ষ চেয়েছিল ওই ঘণ্টাটিকে সরিয়ে ফেলতে। ঘণ্টাটিতে বড় করে আঁকা রয়েছে নাৎসি হিটলারের ‘স্বস্তিকা’ চিহ্ন। এছাড়া সেখানে লেখা রয়েছে ‘সবকিছুই পিতৃভূমির জন্য- অ্যাডলফ হিটলার।’
অনেক গ্রামবাসী দাবি করছিলেন যে, তারা হিটলারের ঘণ্টার নিচে তাদের সন্তান-সন্তদিকে বড় করতে চান না। ১৯৩৪ সালে ঘণ্টাটি স্থাপিত হয় ওই গ্রামের চার্চে।
জানা যায় যে, বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক তৈরি হলে শেষ পর্যন্ত জার্মানির সেই গ্রামের ‘প্রোটেস্ট্যান্ট চার্চ অব সেন্ট জেমস’ সম্প্রতি ঘণ্টাটি রাখবে কি না, তা নিয়ে ভোটাভুটি হয় কাউন্সিলরদের মধ্যে।
ভোটে অবশ্য হিটলারের ঘণ্টাটি রাখার পক্ষেই মতামত পাওয়া গেছে। সম্প্রতি দক্ষিণ-পশ্চিম জার্মানির ছোট্ট গ্রামটিতে নাৎসি আমলের এই ঘণ্টাটি রাখার পক্ষে ভোট দেন ১০ জন কাউন্সিলর, বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন মাত্র ৩ জন। তাই এই ঘণ্টাটি অপসারণের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন চার্চ কর্তৃপক্ষ।
ঘণ্টারি রাখার পক্ষে ভোট দেওয়া কাউন্সিলরদের বক্তব্য হলো, ঘণ্টায় স্বস্তিকা চিহ্ন রয়েছে, যেটা সেই সময়ের সহিংসতা ও অন্যায়ের কথা মানুষকে স্মরণ করিয়ে দেবে এবং এটি মানুষকে অহিংস হওয়ার পথে উদ্বুদ্ধ করবে।
এর পরেও বেশ কিছু বাসিন্দা এর প্রতিবাদ জানিয়ে ঘণ্টাটিকে নষ্ট করে ফেলার আহ্বান জানিয়েছেন। স্থানীয় এক প্রোটেস্ট্যান্ট চার্চ নতুন একটি ঘণ্টা লাগানোর খরচ বহন করার প্রস্তাবও দিয়েছেন।
১৯৩৪ সাল হতে ওই চার্চে এই ঘণ্টাটি ঝুলছে। এতোদিন ঘণ্টাটির কথা কারও মনেই হয়নি। সম্প্রতি চার্চের এক সাবেক অর্গ্যান বাদক সিগরিদ পেটার্স ওই ঘণ্টার ওপর লেখা নিয়ে অভিযোগ তোলেন। তারপরই বিষয়টি সকলের নজরে আসে।
এরপর অনেক বাসিন্দাই মনে করেন যে, এই ঘণ্টাটি এতো সুন্দর চার্চটির মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করছে এবং এর অস্তিত্ব নাৎসিপন্থী দলগুলোর কর্মকাণ্ডকে মূলত আরও উৎসাহিত করবে। তবে অন্য পক্ষের যুক্তি হলো, এটির অপসারণ শহরের ইতিহাসকে ঢেকে ফেলার শামিল।
উল্লেখ্য, নাৎসিপন্থী ঘটনার জের ধরে এই শহরের সাবেক মেয়রকেও পদত্যাগ করতে হয়েছিল। তিনি বলেছিলেন যে, নাৎসি আমলের সবকিছুই খারাপ ছিল না। তার এই মন্তব্যে এতোটাই প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছিলো যে, তিনি শেষ পর্যন্ত পদত্যাগে বাধ্য হয়েছিলেন।