চার বছর আগে এই মাঠেই রবীন্দ্র জাদেজার ধীরগতি’র ব্যাটিং এর কারণে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ভারত টি-টোয়েন্টি ম্যাচ হেরে গিয়েছিলো মাত্র ৩ রানের ব্যবধানে! আর আজ সেই মাঠেই জাদেজা’র অনন্য এক রেকর্ডের ওপর ভর করে বি গ্রুপ থেকে সবার আগে নিজেদের সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে ভারত। ওয়েস্ট-ইন্ডিজের ছুঁড়ে দেয়া ২৩৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ধাওয়ানের সেঞ্চুরিতে মাত্র ২ উইকেট হারিয়ে ২৩৬ রান তোলে ভারত। ফলে এর আগে টানা দুম্যাচ হেরে যাওয়া পাকিস্তান ছিটকে গেলো আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ২০১৩ থেকে।
টসে জিতে ফিল্ডিং এর সিদ্ধান্ত নেন ভারতীয় অধিনায়ক ধোনি। তাতে মাত্র ২৫ রানে উইন্ডিজের প্রথম উইকেটের পতন ঘটে। ব্যক্তিগত ২১ রান করে ক্রিস গেইল আউট হয়ে যান কুমারের বলে। পরবর্তীতে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে জনসন এবং ড্যারেন ব্রাভো ৭৮ রান যোগ করেন। উইন্ডিজের দলীয় ১০৩ রানের মাথায় ৫৫ বলে ৬০ রান করা জনসনকে এলবিডব্লিউ এর ফাঁদে ফেলে ইতিহাস হবার পথে হাঁটা শুরু করেন জাদেজা। এরপর নিয়মিত বিরতিতে তিনি তুলে নেন স্যামুয়েলস, সারওয়ান, নারাইন এবং রামপালের উইকেট। প্রথম ভারতীয় বোলার হিসেবে ইংল্যান্ডের মাটিতে পাঁচ উইকেট নিয়ে ঢুকে যান ইতিহাসের পাতায়।
ড্যারেন ব্রাভো (৩৫), ডোয়াইন ব্রাভো (২৫) এবং কাইরন পোলার্ড (২২) উইন্ডিজের রানের চাকা সচল রাখার চেষ্টা করেন। তবে প্রায় শেষ মুহুর্তে সদ্যই সাবেক অধিনায়ক হয়ে যাওয়া ড্যারেন স্যামি নবম উইকেটে কেমার রোচকে সাথে নিয়ে শেষ উইকেটে ২৭ বলে ৫১ রানের জুটি গড়ে তোলেন। স্যামি অপরাজিত থাকেন ৩৫ বলে ৫৬ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে। স্যামির ঝড়ে শেষ ৪ ওভারেই উইন্ডিজের স্কোরবোর্ডে যোগ হয় ৫১ রান! প্রথম ৯ ওভারে ২২ রান দেওয়া ইশান্ত শর্মা শেষ ওভারে দিয়েছেন ২১ রান। তাতে ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ২৩৩ রান তোলে উইন্ডিজ। জাদেজা ছাড়াও কুমার, অশ্বিন, যাদব এবং ইশান্ত শর্মা নিয়েছেন একটি করে উইকেট।
রান তাড়া করতে নেমে উইন্ডিজের বোলিং আক্রমণ ভোঁতা হয়ে যায় ধাওয়ান এবং রোহিত শর্মার আগ্রাসী ব্যাটিং এর সামনে। দুই ওপেনার মিলে প্রথম উইকেট জুটিতে স্কোরবোর্ডে ১০১ রান যোগ করেন। রোহিত শর্মা অর্ধশতক হাঁকিয়ে নারাইনের বলে ব্যক্তিগত ৫২ রানে স্টাম্পড আউট হয়ে যান। এরপর ভিরাট কোহলি ১৮ রান করে আউট হয়ে গেলেও তৃতীয় উইকেট জুটিতে এবার ধাওয়ান – দীনেশ কার্তিক মারমুখী হয়ে ওঠেন। ধাওয়ান টূর্ণামেন্টে টানা দ্বিতীয় বারের মতো সেঞ্চুরি ছুঁয়েছেন। কার্তিকও তুলে নিয়েছেন ৫৪ বলে ৫১ রানের অর্ধশতক। এদুজনের করা ১০৯ রানের ওপর ভর করে ৩৯.১ ওভারেই উইন্ডিজের ২৩৩ রান ছাড়িয়ে ভারত করে ২৩৬ রান।
আট উইকেটের বিশাল জয় নিয়ে সেমিফাইনালে উঠে গেলো ভারত। অন্যদিকে আগামী ১৫ জুনের ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ এখন তাই এক অর্থে একটি বাড়তি আনুষ্ঠানিক ম্যাচ ছাড়া কিছু নয়। দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার ম্যাচ থেকে বি গ্রুপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালিস্ট নির্ধারিত হবে। ইতিহাস গড়ে ভারতের জন্যে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় জাদেজা ম্যান অব দ্য ম্যাচ পুরস্কারে ভূষিত হন।