দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ চীনা মহাকাশ পরীক্ষাগার পৃথিবীতে আছড়ে পড়েছে। এই মহাকাশ পরীক্ষাগার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই দুনিয়া জোড়া আলোচনা চলছিল। অবশেষে এটি টুকরো হয়ে দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরে পড়ে।
সংবাদ মাধ্যমগুলোর খবরে জানা যায়, চীনের অকেজো মহাকাশ গবেষণাগার টিয়ানগং-১ অবশেষে পৃথিবীতে ভেঙে পড়েছে। ৮ টন ওজনের বিশাল এই মডিউলটি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের পর অধিকাংশই পুড়ে যায়। তারপর সেটি টুকরো হয়ে দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরে গিয়ে পড়েছে। আজ (সোমবার) গ্রিনিচ মান সময় ৮টা ১৬ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় রাত ২টা ১৬ মিনিট) এটি ভেঙে পড়েছে।
বিবিসির এক খবরে বলা হয়, গবেষকরা আগেই জানিয়েছিলেন যে, নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পৃথিবীতে ভেঙে পড়বে চীনের এই মহাকাশ গবেষণাগার তিয়ানগং-১। তবে গবেষকরা সঠিক সময় নির্ধারণ করতে পারেননি। অবশেষে আজ সেটি ভেঙে পড়েছে। এই ভেঙে পড়া নিয়েও বেশ শংকা ছিলো। কারণ কখন কোথায় গিয়ে পড়ে তা নিয়ে সকলেই ভীত ছিল।
বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে জানানো হয় যে, মডিউলটির সঙ্গে চীনের সব ধরনের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল বলে এর পতনের ওপর কোনো নিয়ন্ত্রণই ছিল না তাদের। তবে পৃথিবীতে ভেঙে পড়া নিয়ে বিচলিত না হওয়ার পরামর্শ দেন গবেষকরা।
টিয়ানগং-১ সম্পর্কে যুক্তরাজ্যের মহাকাশ সংস্থার প্রধান প্রকৌশলী রিচার্ড ক্রোথার বলেছিলেন, বিশাল ওজনের টিয়ানগং-১ মডিউলটি পৃথিবীতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পড়লেও তা থেকে ক্ষতি হওয়ার ঝুঁকি খুবই কম। কারণ এটি পৃথিবীতে প্রবেশের আগেই পুড়ে ছাই হয়ে যাবে। এর টুকরো অংশগুলো সমুদ্রে পড়তে পারে। এটি কবে এবং কখন পৃথিবীতে পড়বে, সঠিক সময় পরে জানা যাবে বলে জানানো হয়েছিলো।
হার্ভার্ড-স্মিথসোনিয়ান সেন্টার ফর অ্যাস্ট্রোফিজিক্সের গবেষক জোনাথান ম্যাকডোয়েলের তথ্যানুযায়ী, মানুষের তৈরি নিয়ন্ত্রণহীন ৫০ তম বস্তু হিসেবে টিয়ানগং পৃথিবীতে পড়লো।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালে মহাশূন্যে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাতে এই মডিউলটি পাঠায় চীন। ২০২২ সাল নাগাদ মহাশূন্যে মহাকাশ স্টেশন তৈরির লক্ষ্যে এই মিশন শুরু করে চীন।
২০১৬ সালেই ১০ মিটার দীর্ঘ টিয়ানগং মডিউলটির সঙ্গে চীনা গবেষকদের যোগাযোগ সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এরপর হতেই এটি পৃথিবীর দিকে ফিরে আসছিল। ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির নেতৃত্বে ১৩টি মহাকাশ সংস্থা রাডারসহ নানা অপটিক্যাল যন্ত্রপাতি দিয়ে ওই মডিউলটির গতিপথ পর্যবেক্ষণ করে আসছিলেন।