দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মৃত্যু অনিবার্য একটি বিষয়। তবে কখন কার মৃত্যু ঘটবে তা কেও জানে না। আজ রয়েছে বিশ্বের বিচিত্র কয়েকটি মৃত্যু সম্পর্কে তথ্য।
আমরা সবাই জানি মৃত্যু একটি অনিবার্য বিষয়। একদিন না একদিন মরতেই হবে। তবে কখন কিভাবে সেই মৃত্যু ঘটবে তা বলা যায় না। তবে কিছু কিছু মৃত্যু সত্যিই মানুষকে পীড়া দেয়। এমনই কিছু বিচিত্র মৃত্যু নিয়ে রয়েছে আজকের এই প্রতিবেদন।
জেরোমি আরভিং রোডেল
আজকের কথা নয় ১৯৭১ সালের এক টিভি শোতে অর্গানিক ফুড মুভমেন্টের একজন প্রধান উদ্যোক্তা জেরোমি আরভিং রোডেলের ইন্টারভিউ রেকর্ডিং চলার সময় অর্গানিক ফুডসের প্রয়োজনীয়তার ওপর বলতে গিয়ে তিনি ঘোষণা দেন যে, তিনি ১০০ বছর বাঁচবেন। সে সময় তার বয়স ছিল ৭২ বছর। তবে দুর্ভাগ্যক্রমে ওই শো রেকর্ডিংয়ের সময়ই হার্ট অ্যাটাকে মারা যান অর্গানিক ফার্মিং অ্যান্ড গার্ডেনিং’ ম্যাগাজিনের প্রতিষ্ঠাতা।তারপর অবশ্য সেই শো আর প্রচারই করা হয়নি।
স্টিভ ইরউইন
২০০৬ সালে অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডের গ্রেট ব্যারিয়ার রিফে জিওগ্রাফিক চ্যানেলের ক্রোকোডাইল হান্টার স্টিভ ইরউইন ‘ওসান’স ডেডলিয়েস্ট’ নামে একটি ডকুমেন্টরি তৈরি করছিলেন। এই সময় সমুদ্রের নিচে এক নিরীহ স্টিনগ্রে বার্বের লেজের কাঁটার আঘাতে মারা যান তিনি। কাঁটা তার হৃদযন্ত্র ফুটো করে দেয়। ভয়ঙ্কর কুমিরদের সঙ্গে নিজের শিশুসন্তান নিয়ে খেলা করে শেষ পর্যন্ত নিরীহ এক জলচর প্রাণীর আঘাতে মৃত্যু হলো স্টিভের।
লেস হার্ভি
সঙ্গীত যেমন অসুস্থ মানুষকে সুস্থ্য করে তুলতে পারে আবার এই সঙ্গীতই অনেক সময় কারও মৃত্যুরও কারণ হতে পারে। ১৯৭২ সালের কথা। ব্যান্ড দল স্টোন অব ক্রোসের স্কটিশ গিটারিস্ট লেস হার্ভি সোয়ানসির টপ র্যাঙ্ক বিঙ্গো ক্লাবের একটি মঞ্চে ইলেক্ট্রিক গিটার বাজাচ্ছিলেন। সেই সময় আর্থিং না করা একটি মাইক্রোফোন ভেজা হাতে ধরার কারণে তিনি বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা মৃত্যুবরণ করেন।
জর্জ রিচমান
রিচম্যান ছিলেন একজন জার্মান চিকিৎসক ও বিজ্ঞানী। তিনি থাকতেন রাশিয়ায়। যে বছর বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন উড্ডয়ন যন্ত্র তৈরি করেন তার পরের বছর অর্থাৎ ১৭৫৩ সালে তিনি অনেকটা ঘুড়ির মতো একইরকম আরেকটি যন্ত্র তৈরি করেছিলেন। একদিন একাডেমী অব সায়েন্সের এক সভায় তিনি অংশগ্রহণ করেন। সেই সময় তিনি বজ্রপাতের শব্দ শুনতে পান। দৌড়ে তার যান বাসায়, বজ্রপাতকে কাছ থেকে দেখার আশায় তার উড্ডয়ন যন্ত্র নিয়ে আকাশে ওড়েন তিনি। তার গবেষণা বা পর্যবেক্ষণ যখন চলছিলো, ঠিক তখন বিদ্যুৎ চমকায় ও তার মাথায় বজ্রপাত আঘাত করে। তিনি মৃত্যুবরণ করেন। কি ভয়ানক দুঃসাহস ছিল তার ভেবে অবাক হতে হয় সকলকে।
ফ্রাঞ্জ রিচেল্ট
ফ্রাঞ্জ রিচেল্ট ওড়ার জন্য এক ধরনের ওভারকোট তৈরি করেন। সেটি আধুনিক প্যারাসুটের মতোই কাজ করতো। পরীক্ষা করার জন্য তিনি সেই সময়ের সবচেয়ে উঁচু স্থাপনা আইফেল টাওয়ারের ফার্স্ট ডেক অর্থাৎ ৬০ মিটার উঁচু থেকে লাফও দেন। তিনি ভেবেছিলেন তার ওভারকোটটি খুলে যাবে এবং নিরাপদে তিনি মাটিতে নেমে আসতে পারবেন। তবে দুর্ভাগ্যবশত প্যারাসুটটি কাজ না করায় তিনি মাটিতে পড়ে মৃত্যুবরণ করেন।
জে. জি. প্যারি থমাস
আজ থেকে বহুবছর আগের কথা। ১৯২৭ সালে রেসিং ড্রাইভার প্যারি থমাস নামে এক ব্যক্তি রেকর্ড গড়তে গিয়ে মৃত্যুবরণ করেন। মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগেই ম্যালকম মার্শাল তার গড়া আগের ল্যান্ড স্পিড বিশ্ব রেকর্ডটি পেন্ডাইন স্যান্ডস সৈকতে ভেঙে দিয়েছিলেন। প্যারি থমাস তার রেকর্ড পুনরুদ্ধার করার সংকল্পও করেন। তিনি যে গাড়িটি সে সময় ব্যবহার করছিলেন সেটির ড্রাইভ হুইলের সঙ্গে ইঞ্জিনের সংযোগের চেনটিতে কোনও কভার দেওয়া ছিল না। উঁচু ইঞ্জিন কভারের কারণেও তাকে মাথা ডান দিকে কাত করে গাড়ি চালাতে হচ্ছিল। শেষ রানের সময় ডান দিকের ১৭১ মাইল বেগে বিশ্বরেকর্ড গড়ার পর ড্রাইভ চেনটি ছিঁড়ে যায়। সেইসঙ্গে হারিয়ে যায় তার জীবনও।
থিক কুয়াং ডুক
সেই ১৯৬৩ সালের কথা। ভিয়েতনাম বৌদ্ধ ভিক্ষু থিক কুয়াং ডুক শহরের এক ব্যস্ত রাস্তার মাঝখানে নিজের শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে নেন। তিনি জীবন্ত দগ্ধ হয়ে মারা যান। প্রেসিডেন্ট জিও দিন দিয়েম প্রশাসনের বৌদ্ধ ধর্ম দমনের প্রতিবাদ হিসেবে তিনি ওই আত্নাহুতি দিয়েছিলেন।