দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ হলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী অ্যাঞ্জেলিনা জোলি বাংলাদেশের কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।
হলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী অ্যাঞ্জেলিনা জোলি রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দেখতে বাংলাদেশে এসেছেন। বাংলাদেশে এসেই কক্সবাজারের টেকনাফে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেন এই বিশ্বখ্যাত অভিনেত্রী। ৪ ফেব্রুয়ারি (সোমবার) দুপুর ২টার দিকে টেকনাফ উপজেলার চাকমারকুল রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেন অ্যাঞ্জেলিনা জোলি। সেখানে প্রায় তিনঘণ্টা সময় অবস্থানকালে নির্যাতিত রোহিঙ্গা নারী-পুরুষদের সঙ্গে কথা বলেন ও রোহিঙ্গা শিশুদের সঙ্গে কিছু সময় কাটান জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) এই বিশেষ দূত অ্যাঞ্জেলিনা জোলি।
গতকাল (৫ ফেব্রুয়ারি) কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পও তিনি পরিদর্শন করেছেন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কুতুপালং এক্সটেনশন-৪ ক্যাম্পে পৌঁছান ও সেখানকার শিক্ষা কেন্দ্রগুলো পরিদর্শন করেন তিনি। পরে কুতুপালং ৩নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের রিলিফ ইন্টান্যাশনাল পরিচালিত স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র পরিদর্শন করেন তিনি। একই ক্যাম্পে নির্যাতিত রোহিঙ্গা নারীদের সঙ্গে কথাও বলেন। তাদের দুর্দশার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনেন এই বিশ্বখ্যাত অভিনেত্রী। দুপুরে কুতুপালং ৪নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে হোপ ফাউন্ডেশন পরিচালিত হাসপাতাল পরিদর্শন করেন। এছাড়া বিকাল ৩টার দিকে কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ডি-৫ ব্লকে প্রেসব্রিফিংয়ে যোগ দেন তিনি। ৫ দিনের বাংলাদেশ সফরে এসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গেও দেখা করার কথা রয়েছে।
উল্লেখ্য, এই কার্যক্রমে যোগ দিতে এবং রোহিঙ্গাদের দুর্দশা দেখতে গত বছর বলিউড অভিনেত্রী প্রিয়াংকা চোপড়াও এসেছিলেন রোহিঙ্গা শিবিরে। এবার এলেন এই জনপ্রিয় হলিউড অভিনেত্রী অ্যাঞ্জেলিনা জোলি।
ইউএনএইচসিআরের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানা গেছে, কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন শেষে ঢাকায় এসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন এবং সরকারের একাধিক শীর্ষ কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠকও করবেন অ্যাঞ্জেলিনা জোলি। রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে ইউএনএইচসিআর কীভাবে বাংলাদেশ সরকারকে আরও সহযোগিতা করতে পারে, তা নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করবেন এই অভিনেত্রী।
উল্লেখ্য যে, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হয়ে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমরা জীবন বাঁচাতে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট হতে ছুটে আসে বাংলাদেশে। কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ার কুতুপালংয়ের রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে লাখ লাখ রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ ও শিশু। এরপর বিভিন্ন মহল হতে দাবি উঠতে থাকে নিরাপদে নিজ দেশে তাদের ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য।
টেকনাফের চাকমারকুল ২১নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ডি-ব্লকের বাসিন্দা রোহিঙ্গা নেতা রশিদ উল্লাহ সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘হলিউডের এই অভিনেত্রী গত সোমবার দুপুরে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ডি-ব্লকে ৩০ জন রোহিঙ্গা নারীর সঙ্গে কথা বলেন। এই সময় আবেগাপ্লুত হয়ে ধর্ষণের শিকার নারীদের বুকে জড়িয়ে ধরেন এই হলিউড অভিনেত্রী। জোলি তাদের ধৈর্য ধরারও পরামর্শ দেন। সেইসঙ্গে রোহিঙ্গা শিশুদের সঙ্গেও কিছুক্ষণ সময় কাটান তিনি।’