দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ পুষ্টি গুণে সমৃদ্ধ একটি ফল হলো খেজুর। খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রণ, ভিটামিন, মিনারেল ও ডায়েটরই ফাইবার যা রক্তস্বল্পতা দূর করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। আজ রয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় এক খেজুর বাগানের গল্প!
রোজাদারদের ইফতারের প্রধান অনুষঙ্গ হলো খেজুর। সারাদিন রোজা রাখার পর পেট খালি থাকে বলে শরীরে গ্লুকোজের স্বল্পতা দেখা দিয়ে থাকে, ইফতারের সময় যা পূরণ করতে হয়। খেজুর সেটি দ্রুত পূরণ করতে সাহায্য করে।
বৈজ্ঞানিক বিষয়টি ছাড়াও ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকেও মুসলমানদের কাছে খেজুর অতি প্রিয় এবং পবিত্র একটি ফল হিসেবে পরিগণিত হয়ে থাকে। খেজুর গাছের জন্য বিখ্যাত দেশ সৌদি আরবে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স.) জন্ম গ্রহণ করেছেন।
শিশুকাল হতে খেজুরই ছিল তাঁর খাদ্য তালিকার প্রধান একটি অংশ। সেই সৌদি আরবেই রয়েছে বিশ্বের সবথেকে বড় খেজুর বাগান। সারি সারি প্রায় ২ লাখ খেজুর গাছের সমারোহে গড়ে উঠেছে এই খেজুর বাগানটি।
আরব নিউজ ডট কম জানিয়েছে যে,মধ্য সৌদি আরবের আল-কাসীম প্রদেশের রাজধানী বুরাইদা শহরের কাছে এই খেজুর বাগানটি অবস্থিত। এই বাগানের আয়তন প্রায় ৫ হাজার ৪৬৬ হেক্টর। এই বাগানে ৪৫ প্রকারের খেজুর উৎপাদিত হয়। এই বাগানটির মালিকের নাম হলো শেখ সালেহ বিন আবদুল আযীয রাজেহী। তার নামানুসারেই বাগানের নামও রাখা হয়েছে ‘রাজেহী বাগান’।
১৯৯০ সালের দিকে বাগানটিতে খেজুরের সঙ্গে গম এবং তরমুজও উৎপাদন করা হতো। ১৯৯৩ সালে এসে বাগান মালিক সালেহ বিন আবদুল আযীয রাজেহীর নির্দেশে গম এবং তরমুজ অন্যত্র সরিয়ে শুধুমাত্র খেজুরের জন্য রাখা হয় ও বিভিন্ন প্রকারের খেজুর গাছের আবাদ শুরু করা হয়।
রমজানে ওমরাহ পালনের উদ্দেশে পবিত্র কাবা ও মদিনায় গিয়েছেন তবে এই বাগানের খেজুর উপভোগ করেননি এমন ইমানদার খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। মূলত রমজানে মক্কা-মদীনায় সর্বাধিক খেজুর সরবরাহ করা হয় এই বাগান হতে।
তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো, বিশ্বের সবচেয়ে বড় এই খেজুর বাগানের কোনো খেজুরই বিক্রির জন্য নয়। এই বাগানের পুরো উৎপাদনই আল্লাহর রাস্তায় ওয়াকফ করে দেওয়া হয়েছে।
যে কারণে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ‘ওয়াকফ সম্পত্তি’ হিসাবেও এই বাগানকে বিবেচনা করা হয়ে থাকে। গিনেজ বুক অব ওয়ার্ল্ডে এ বাগানটিও যুক্ত রয়েছে।
পরিসংখ্যন বলছে যে, খেজুর উৎপাদনে সৌদি আরব বিশ্বে প্রথম দেশ। দেশটির বিভিন্ন প্রান্তে আড়াই কোটির বেশি খেজুর গাছ সরকারি এবং বিভিন্ন ব্যক্তি মালিকানাধীনে রয়েছে।
মূলত এসব খেজুর গাছে ৩৬০ প্রকারের খেজুর উৎপাদিত হয়। তারমধ্যে দেশটির মদীনা, মাসকানি, মাবরুম, সাকি, বারহি, শাশি, মুনিফি, সুকারি এবং আযওয়া নামের খেজুর খুব বেশি প্রসিদ্ধ খেজুর।