দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ পদ্মা সেতু পুরো বাঙালি জাতির গর্ব। এটি বাঙালি জাতির এক স্বপ্ন। বছরের পর বছরে ধরে মানুষ অপেক্ষায় ছিলেন এই পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন দেখার। যা এখন বাস্তবায়নের একেবারে দোরগোড়ায়।
প্রাণচাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে পদ্মাপাড়ের মানুষদের মধ্যে। কারণ তাদের যোগাযোগ ব্যবস্থা আসবে আমূল পরিবর্তন। প্রতিটি ক্ষেত্রের মানুষ যে কোন ধরণের প্রয়োজনে ঢাকায় আসা যাওয়া করতে পারবেন খুব কম সময়ে। পদ্মাপাড়ের মানুষদের ধরা মাছ কখনও ঢাকার বাজারে যেতে পারেনি। অথচ হাজার হাজার টন মাছ উৎপাদন হয় এখানে। চিকিৎসা থেকে আরম্ভ করে ব্যবসা-সব কিছুই যেনো পাল্টে যাবে এই পদ্মা সেতুর কারণে। তাই এই এলাকার অর্থাৎ পদ্মাপাড়ের মানুষদের মধ্যে উৎসাহ উৎসাহ ভাব বেশি পরিলক্ষিত হচ্ছে।
অপরদিকে মংলা বন্দরও সচল হয়েছে। কাজ শুরু হয়েছে পায়রা বন্দরেরও। দুটিই অবস্থিত দক্ষিণাঞ্চলে। তবে আশা করা হচ্ছে শুরুতেই বড় গতিশীলতা আসবে কৃষিভিত্তিক অর্থনীতিতে। সেতুর কারণে সব ধরণের কৃষিপণ্য তাদের সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত বাজারে দ্রুত যেতে পারবে খুব সহজে। এটি একটি বিরাট পাওয়া।
পদ্মা সেতুর কারণে যেসব জেলাগুলো সরাসরি বেশি লাভবান হবে বলে আশা করা হচ্ছে সেগুলো হলো- খুলনা, বাগেরহাট, যশোর, নড়াইল, সাতক্ষীরা, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ এবং মাগুরা। অপরদিকে বরিশাল বিভাগের বরিশাল, ভোলা, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, বরগুনা এবং ঝালকাঠি ও ঢাকা বিভাগের ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, শরীয়তপুর এবং রাজবাড়ী জেলা উপকৃত হবে এই পদ্মা সেতুর কারণে
যেমন খুলনা এবং বাগেরহাটের মাছ, যশোরের সবজি ও ফুল, বরিশালের ধান এবং পান পুরো দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলেরই কৃষি অর্থনীতির ভিত্তি। যদিও সেখানকার প্রতিটি জেলাতেই ধান এবং মাছ চাষ করা হয়ে থাকে। নদী ও হাওর হওয়ায় প্রাকৃতিক উৎস হতেও আসে বিপুল পরিমাণ মাছ।
সব মিলিয়ে দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন আসবে এই পদ্মা সেতু। এই স্বপ্নের সেতু বাস্তবায়নের এখন শেষ পর্যায়ে। প্রায় পুরোপুরি প্রস্তুত রয়েছে পদ্মা সেুত। শুধুই উদ্বোধনের অপেক্ষা। আর সেই মাহিন্দ্রক্ষণ হলো ২৫ জুন সকাল ১০টা। ইতিমধ্যেই সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। পদ্মাপাড়ে বিশাল আয়োজনের মাধ্যমে উদ্বোধন করা হবে পদ্মা সেতুর।
তবে এই পদ্মা সেতুর নাম নিয়ে অনেকের মধ্যেই নিরাশা রয়েছে। আর তা হলো বাংলাদেশে যেসব সেতুর বা প্রতিষ্ঠানের নামকরণ করা হয় সেখানে নামের ব্যক্তির সঙ্গে অনেকটা সামঞ্জস্য থাকে না। এক সরকার করে যায়, আরেক সরকার এসে তাদের নামে নামকরণ করেন। কিন্তু পদ্মা সেতু ছিলো এর উর্দ্ধে। কারণ এই পদ্মাসেতুর বাস্তবায়নে আওয়ামীলীগ সরকারই গর্বিত দাবিদার। কারণ বিশ্ব ব্যাংকসহ সাহায্য সংস্থাগুলোর পিছিয়ে যাওয়ার পর নিজস্ব অর্থায়নে এটি বাস্তবায়ন করেন বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকার তথা শেখ হাসিনার সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় মনোভাবের কারণে এটি বাস্তবায়ন সম্ভব হয়েছে। যে কারণে সবাই ধারণা করেছিলেন এই সেতুর নাম তাঁর নামেই অর্থাৎ ‘শেখ হাসিনা সেতু’ রাখা হবে। আর সেটিই সমিচিন ছিলো। কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাতে সায় না দেওয়ায় শেষ পর্যন্ত পদ্মা নদীর নামেই পদ্মা সেতু নামকরণ করা হয়েছে। এখানে বলা যায়, এটিও বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর উদারতা বলা যায়।
তবে শেষ কথা হলো পদ্মা সেতু এই বাঙালি জাতির গর্বের বিষয়। এতো বড় একটি স্থাপনা আমাদের বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি মাইল ফলক হিসেবে পরিগণিত হবে। ভবিষ্যতে পরবর্তী সরকারগুলোও এর ধারাবাহিকতা রক্ষা করে আরিচা-দৌলতদিয়া-নগরবাড়িতে ত্রিমুখি দ্বিতীয় পদ্মা সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেবেন সেই প্রত্যাশা আমাদের সকলের।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকার চেষ্টা করি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের কাপড়ের মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।