দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সাধারণ বর্ষাকালে পেটের রোগ বাড়ে। অনেকেই মনে করেন যে, তার মূল কারণই হলো পানি। তবে এ ক্ষেত্রে শুধু পানিকে দোষ দিয়ে হবে না।
রান্না করতে করতে কড়াই থেকে হঠাৎ ছলকে পড়তে পারে মাছের ঝোল। ছাঁকতে গিয়ে কাপের পাশে পড়ে যেতে পারে ফুটন্ত চা। হাতের কাছে থাকা কাপড় দিতেই তা মুছে নেন অনেকেই। আবার খেতে বসার পূর্বে থালা ধুয়ে ওই কাপড়টি দিয়েই মুছে ফেলেন।
সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, এই ধরনের কাপড় কিংবা মোছার তোয়ালের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যাক্টেরিয়া বসবাস করে থাকে। সাধারণত সুতির কিংবা লিনেনের এই তোয়ালেগুলো ভিজে হাত মোছার জন্য ব্যবহার করা হয়। আবার সেই কাপড়টি অনেকেই ব্যবহার করেন ধোয়ার পর বাসনপত্র মোছার কাজে।
অথচ বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, এই ধরনের তোয়ালে মোছার কাপড়ে যে পরিমাণ জীবাণু থাকে, তা অন্য কিছুতে থাকে না। ১০০ বার ব্যবহার করা একটি ‘টি টাওয়েল’-এ ‘স্টেফাইলোকক্কাস অওরিয়াস’ নামক একটি ব্যাক্টেরিয়ার অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। যা সাধারণত মানুষের ত্বকেও দেখা যায়। তার থেকে বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ, নিউমোনিয়ার মতো রোগও হতে পারে। শুধু তাই নয়, ব্যবহার করার পর প্রতিদিন কাচা হয় এমন ৪৬টি তোয়ালের মধ্যেও বিভিন্ন ধরনের রোগ জীবাণুর অস্তিত্ব পাওয়া গেছে।
বিভিন্ন রান্না ঘর থেকে পাওয়া নমুনা পরীক্ষা করে সেখানে ‘সিউডোমোনাস এরুজিনোসা’ নামক এক ব্যাক্টেরিয়ার সন্ধান পাওয়া যায়। যা আসলে ফুসফুসের সংক্রমণের জন্যই দায়ী। এমনই একটি ব্যাক্টেরিয়া হলো ‘ব্যাসিলাস সাবটিলিস’, যা চোখের সংক্রমণের জন্যও দায়ী। যাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকটাই কম থাকে, তাদের শরীরেও এই ধরনের ব্যাক্টেরিয়ার অস্তিত্ব পাওয়া যায়।
এ থেকে বাঁচতে প্রথমেই প্রতিটি কাজের জন্য পৃথক পৃথক তোয়ালে ব্যবহার করুন। আবার যে তোয়ালেতে হাত মোছেন, তা দিয়ে কখনও বাসনপত্র মোছা যাবে না। আবার আপনি বাসনপত্র মোছেন যে তোয়ালে দিয়ে, তা টেবিল মোছার কাজে কখনও ব্যবহার করা যাবে না। সম্ভব হলে প্রতিদিন কাপড়গুলো গরম পানিতে সাবান দিয়ে ফুটিয়ে, কেচে নিতে হবে। তোয়ালেগুলো যেনো ব্যবহারের সময় ভিজে না থাকে, সে দিকেও খেয়াল রাখা দরকার। প্রতি বার রোদে শুকনো তোয়ালে ব্যবহার করলে এই ধরনের রোগের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকার চেষ্টা করি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের কাপড়ের মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।