দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সাধারণ ৪০ থেকে ৬০ বয়সি ব্যক্তিদের ‘ফ্রোজেন শোল্ডার’-এর ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। পুরুষদের তুলনায় নারীদের এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বেশিই থাকে। কীভাবে পাবেন স্বস্তি? ‘ফ্রোজেন শোল্ডার’-এর সমস্যায় বা কেনো হয়?
মাঝে-মধ্যেই ঘুম থেকে উঠে বা অনেকক্ষণ চুপচাপ বসে থাকার পর নড়াচড়া করতে গেলে কাঁধে প্রবল যন্ত্রণাও হয়। মনে হয় যেনো কাঁধটা শক্ত হয়ে গেছে, কোনওভাবেই নাড়ানো যায় না। বিজ্ঞানের ভাষায় এই সমস্যাটির নাম হলো ‘অ্যাডেসিভ ক্যাপসুলাইটিস’। তবে এই সমস্যাকে ‘ফ্রোজেন শোল্ডার’ নামে বেশি চেনেন সবাই। এই রোগে কাঁধের বল এবং সকেটসন্ধি আক্রান্ত হয়ে থাকে। মূলত ৪০ হতে ৬০ বছর বয়সি ব্যক্তিদের এই রোগের ঝুঁকি অনেক বেশি। পুরুষদের তুলনায় নারীদের এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি।
কী কারণে ঘাড়ে ব্যথা হতে পারে?
# কাজের কারণে একটানা অনেকক্ষণ চেয়ারে বসে থাকা।
# ঘুমের সময় ভুল ভঙ্গিতে শোয়ার কারণ।
# অতিরিক্ত মানসিক চাপ।
# হঠাৎ ঘাড়ে টান ধরা।
ব্যথা বেশি হলে কী করবেন?
ল্যাভেন্ডার অয়েল
প্রাচীনকাল থেকেই ব্যথা কমানোর কাজে ল্যাভেন্ডার ব্যবহার হয়ে আসছে। ল্যাভেন্ডার অয়েল বাড়িতে কিনে রাখুন। আর তখন ঘাড়ে ব্যথা হলেই ল্যাভেন্ডার অয়েল লাগান। বেশ আরাম পাবেন।
স্নান
হালকা গরম পানিতে সৈন্ধব লবণ মিশিয়ে ৪-৫ মিনিট গোসল করুন। গোসল করার সময় ঘাড় মোটেও নাড়াচাড়া করবেন না। দেখবেন আস্তে আস্তে স্টিফ ঘাড় ঠিক হয়ে যাবে।
আইস প্যাক
সহজেই না কমে যদি ঘাড়ের ব্যথা যদি অসহ্য হয়ে ওঠে তাহলে আইস প্যাক চাপা দিয়ে রাখতে হবে। সঙ্গে সঙ্গেই আরাম পাবেন।
হিটিং প্যাড
ঘাড়ের উপর কিছু সময় হিটিং প্যাড চেপে রাখুন। এতে রক্ত সঞ্চালন বেড়ে ঘাড়ে ব্যথা কমে আসবে।
যেগুলো প্রতিদিন করলে ঘাড়ে ব্যথা থেকে রেহাই পাবেন
ঘুম
কোনও রকম আপস করা যাবে না ঘুমের সঙ্গে। ঘুমোনোর সময় খেয়াল রাখবেন যেনো শোয়ার ধরন ঠিক-ঠাক থাকে। ভুলভাল ভঙ্গিমায় শোয়ার জন্যও অনেক সময় ঘাড়ে ব্যথা হয়। খুব বেশি উঁচু বা শক্ত বালিশ নিয়ে না ঘুমোনোই ভালো।
কাজের মাঝে বিরতি
অফিসে কাজ করতে করতে যখনই আপনার ক্লান্ত লাগবে, যখন কাঁধে যন্ত্রণা হবে তখন চেয়ারে বসে না থেকে মিনিট দশেকের বিরতি নিন এবং হাঁটাহাঁটি করুন।
গাড়ি চালানোর সময় সতর্কতা
‘লং ড্রাইভ’-এ যাওয়ার সময় অনেকেই পছন্দ করেন। তবে ফ্রোজ়েন শোল্ডার থাকলে কখনও একটানা অনেকক্ষণ গাড়ি চালাবেন না।
মানসিক চাপ কমানো
যতোটা সম্ভব নিজেকে স্ট্রেসমুক্ত রাখতে হবে। স্ট্রেস বাড়লে তখন ঘুম কম হবে, ক্লান্তি থেকেও ঘাড়ে ব্যথা হবে।
শরীরচর্চা
এই ধরনের সমস্যা সমাধানের জন্য ব্যায়াম ছাড়া কোনো উপায় নেই। প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে ঘাড়ের হালকা ব্যায়াম করতে হবে। তাহলেই ঘাড় সচল থাকবে। এই ক্ষেত্রে যোগাসন ভীষণভাবে কার্যকর। মার্জারাসন, গরুড়াসন, সেতুবন্ধনাস, গোমুখাসনের মতো আসন নিয়মিত করলে এই সমস্যা থেকে রেহাও পেতে পারেন। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org