দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে গত পরশু (মঙ্গলবার) শুরু হয়েছে ব্রিকসের তিনদিনব্যাপী ১৫তম সম্মেলন। সেখানে ব্রিকসভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্যে মার্কিন ডলারের আধিপত্যের দিন শেষ হয়েছে বলে মন্তব্য করেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
সম্মেলন শুরুর দিনেই ভিডিও বার্তার মাধ্যমে বক্তব্য দেন তিনি। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের গ্রেফতারী পরোয়ানার কারণে সম্মেলনে সরাসরি উপস্থিত হতে পারেননি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। -খবর বিবিসি, সিএনএনের।
সম্মেলনকে কেন্দ্র করে জোহানেসবার্গজুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভাসহ বিশ্বের প্রায় অর্ধশত দেশের নেতাকে আতিথ্য দিচ্ছেন দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা।
ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ব্রিকসের সদস্যরা বাণিজ্যকে ডলার থেকে সরিয়ে জাতীয় মুদ্রায় পরিবর্তন করার বিষয়েও আলোচনা করবে। আর এতে মূল ভূমিকা পালন করবে ব্রিকস নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক। অর্থনৈতিক সম্পর্কের ডি-ডলারাইজেশনের উদ্দেশ্যমূলক ও অপরিবর্তনীয় প্রক্রিয়াটি গতি পাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
অপরদিকে পুতিনের এই ডলার প্রত্যাখ্যানের প্রস্তাব সত্বেও ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভা বলেন, একটি সাধারণ ব্রিকস ট্রেডিং কারেন্সি শুধু উদীয়মান দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্য সহজ করার লক্ষ্যেই চালু করা হবে। আমরা জি-সেভেন, জি-টোয়েন্টি বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিপক্ষ হতে চাই না। আমরা কেবলমাত্র নিজেদের সংগঠিত করতে চাই।
‘আধিপত্যবাদ চীনের ডিএনএতে নেই’ উল্লেখ করে ব্রিকস -এর এই শীর্ষ সম্মেলনে মন্তব্য করেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। ন্যায়সঙ্গত আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে উদীয়মান অর্থনীতির ব্রিকস গ্রুপিং সম্প্রসারণের আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং আরও বলেন, বৃহৎ শক্তির প্রতিযোগিতা বা ‘ব্লক দ্বন্দ্ব’ সৃষ্টি করার কোনো ইচ্ছায় নেই চীনের। যে কোনো প্রতিরোধ সত্ত্বেও ব্রিকসের সম্প্রসারণ চলতে থাকবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। তিনি আরও বলেন, এই মুহূর্তে বিশ্বে আমাদের সময় ইতিহাসের পরিবর্তনগুলো এমনভাবে উদ্ভাসিত হচ্ছে যা সত্যিই আগে কখনও হয়নি। মানবসমাজকে মূলত একটি জটিল সন্ধিক্ষণে নিয়ে যাচ্ছে।
ব্রিকসের তিনদিনের এই শীর্ষ সম্মেলনে স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের মতো ক্ষেত্রগুলোতে আরও অর্থনৈতিক সহযোগিতার আহ্বানও জানানো হবে বলে জানা যায়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org