দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অনেক সময় মস্তিষ্কের স্নায়ুর জটিল রোগও কারও কারও ক্ষেত্রে মারাত্মক আকার ধারণ করে। চিকিৎসা পরিভাষায় এটিকে বলা হয় ডিমেনশিয়া। এটি হলে হুট করে সব কিছু ভুলে যাওয়ার সমস্যা দেখা দেয়। গবেষণায় উঠে এসেছে এই রোগের দাওয়াই কয়েক টুকরো চিজ়!
আমরা জানি গোটা শরীরকে পরিচালনা করে মস্তিষ্ক। কারও ডাকে সাড়া দেওয়া থেকে শুরু করে কোনও জটিল অঙ্কের সমাধান- সবের মূলেই রয়েছে এই মাথা। তাই মস্তিষ্কের কর্মকাণ্ড সচল রাখতে চিকিৎসকরা শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকার পরামর্শও দিয়ে থাকেন। তবে জাপানের একদল গবেষকের সাম্প্রতিক গবেষণা থেকে উঠে এসেছে এক তথ্য, যাতে বলা হয়েছে, মস্তিষ্কে স্নায়ুর জটিল রোগ ডিমেনশিয়ার মতো সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত চিজ় খাওয়াটা জরুরি।
সাধারণত বয়স বাড়লে স্মৃতি লোপ পায়। আর সেটিই স্বাভাবিক। তবে নিজের নাম মনে রাকা, বাড়ির ঠিকানা, পরিচিত মানুষদের চিনতে না পারার মতো লক্ষণও একেবারেই সাধারণ নয়। মস্তিষ্কের স্নায়ুর জটিল রোগই কারও কারও ক্ষেত্রে মারাত্মক আকার ধারণ করলে এই ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। চিকিৎসা পরিভাষায় যাকে বলা হয় ডিমেনশিয়া। এই ডিমেনশিয়া আবার বিভিন্ন পর্যায়ের রয়েছে। সময় বিশেষে যা পার্কিনসন্স কিংবা অ্যালঝাইমার্সের মতো আকার ধারণ করে থাকে।
এই বিষয়ে চিকিৎসকরা বলেছেন, মস্তিষ্কের স্নায়ুর এই ধরনের রোগ ঠেকিয়ে রাখা গেলেও তা একেবারে সারিয়ে তোলা প্রায় অসম্ভব ব্যাপার। জাপানে ষাটোর্ধ্ব প্রায় দেড় হাজার মানুষের খাবার অভ্যাস ও জীবনযাপনের ভিত্তিতে করা সমীক্ষা শেষে দেখা গেছে, যারা নিয়মিত চিজ় কিংবা পনিরের মতো খাবার খেয়েছেন তাদের কগনিটিভ কার্যকারিতা অন্যদের তুলনায় অনেকটা উন্নত। দুগ্ধজাত খাবারের সঙ্গে মস্তিষ্কের কার্যকারিতার সংযোগের বিষয়টি ‘নিউট্রিশান’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।
এই বিষয়ে গাঁও রিসার্চ সেন্টারের প্রধান গবেষক হানকিং কিম বলেছেন, নিয়মিত চিজ় ও পনিরের মতো দুগ্ধজাত খাবার খেলে মস্তিষ্কের কগনিটিভ কার্যকারিতাও উন্নত হয়। তবে এই বিষয়ে নিশ্চিত হতে গেলে আরও বিশদ গবেষণা দরকার। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org