দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গবেষকরা জানিয়েছেন, ক্রমাগত বসে একই কাজ করলে মানুষের কর্মক্ষমতা ও উদ্ভাবনী শক্তি কমে যায়। বসে কাজ মানেই হজমের গোলমালও দেখা দেয়। টানা বসে থাকলে কোন কোন রোগের ঝুঁকি বাড়তে পারে?
অফিসেই কাটে দিনের অধিকাংশ সময়। ব্যস্ততা, কাজ ও বসে বসে মাথা খাটিয়ে কেটে যায়। সারাক্ষণ এই বসে থাকার কারণে বাড়ছে নানা রোগের ঝুঁকি। ঘন্টার পর ঘণ্টা চেয়ারে বসে কাজ করেন অনেকেই। ল্যাপটপের সামনে থেকে একবারও ওঠার সময় থাকে না। বহুজাতিক সংস্থা থেকে সরকারি অফিস, সর্বত্র একই চিত্র। দীর্ঘ সময় বসে কাজের কারণে শরীরে বাসা বাঁধছে ডায়াবেটিস, স্থূলতা, উচ্চ রক্তচাপ, মানসিক চাপের মতো নানা ধরনের সমস্যা। বিশ্বজুড়ে প্রকাশিত স্বাস্থ্য সমীক্ষার বিভিন্ন রিপোর্ট বলছে যে, দিনে ৬ ঘণ্টা বসে কাজ করার অভ্যাসই ডেকে আনতে পারে ক্যান্সার, হার্টের সমস্যার মতো নানা জটিল রোগ। গবেষকরা জানিয়েছেন, ক্রমাগত বসে একই কাজ করলে মানুষের কর্মক্ষমতা ও উদ্ভাবনী শক্তিও কমে যায়। বসে কাজ মানেই হলো হজমের গোলমাল দেখা দেওয়া। তাই একটানা বসে না থেকে ৩০ মিনিট অন্তর হাঁটাচলা করে নিলে তা শরীরের পক্ষে ভালো। একনাগাড়ে বসে থাকলে কোন কোন রোগের ঝুঁকি বাড়তে পারে?
ক্যান্সার
বিশ্বে ক্যান্সার আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশই বাড়ছে। প্রতি বছর ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা কয়েক লক্ষ। যেমন অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, বাইরের খাবার খাওয়ার অভ্যাস করা, শরীরচর্চা না করা, ধূমপান ও মদ্যপানের অভ্যাস- এমন বেশ কিছু কারণে ক্যান্সারের মতো মারণরোগ বাসা বাঁধতে পারে শরীরে। তবে এই কারণগুলো ছাড়াও একটানা বসে থাকলে হতে পারে ক্যান্সার। সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, ফুসফুস, মূত্রাশয় ও মলাশয়ের ক্যান্সার হতে পারে বসে থাকার কারণে।
হার্টের সমস্যা
অফিসই হোক বা বাড়িতে, একভাবে বসে থাকার কারণে হার্টেও এর প্রভাব পড়তে পারে। হার্ট ভালো রাখার অন্যতম পন্থায় হলো শরীরচর্চা বা হাঁটাচলা করা। শরীর সচল রাখলে তখন হার্টও ভালো থাকে। গবেষণা বলছে, শারীরিকভাবে সচল থাকাটা জরুরি, এর অন্যতম কারণ হলো হৃদরোগের সমস্যা এড়ানো। দিনের বেশির ভাগ সময়ই বসে থাকলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিও বাড়ে।
ডায়াবেটিস
রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে শারীরিকভাবে সচল থাকাটা জরুরি। শরীরচর্চার অভাবে শর্করার মাত্রা বেড়ে দ্বিগুণও হতে পারে। তেমনটিই জানিয়েছে গবেষণা। তাই গবেষকরা বসে থাকার কাজ হলেও ২০ মিনিট অন্তর হাঁটাচলা করার পরামর্শ দেন। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাঢহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org