দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ রোদে বেশি পরিমাণে ঘোরাঘুরি করলে প্রস্রাবের রং গাঢ় হলুদ হয়ে যাওয়া স্বাভাবিক। আবার অনেক সময় কোনও ওষুধের প্রভাবেও প্রস্রাবের রং বদলে যেতে পারে। তবে এবার গবেষকরা জানালেন সঠিক কারণ।
প্রস্রাবের রং কেমন, তা দেখেই বলে দেওয়া যাবে শরীরে গতিপ্রকৃতি। কাজের চাপে সারা দিন পানি কম খেলে বা রোদে ঘোরাঘুরি করলে প্রস্রাবের রং গাঢ় হলুদ হয়ে যাওয়া কিন্তু স্বাভাবিক। আবার অনেক সময় কোনও ওষুধের প্রভাবেও প্রস্রাবের রং বদলে যেতে পারে। আবার কিডনির কোনও সমস্যা থাকলেও মূত্রের রং পাল্টে যেতে পারে। তবে সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে যে, পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি খাওয়ার পরেও প্রস্রাবের রং হলুদ হয়ে যেতেই পারে। এর জন্য মূলত দায়ী লিভারে উপস্থিত ‘বিলিরুবিন’ নামক একটি উৎসেচক। নেচার মাইক্রোবায়োলজি পত্রিকায় প্রকাশিত হয় এই তথ্যটি।
মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সেল বায়োলজি অ্যান্ড মলিকিউলার জেনেটিক্স’ বিভাগের অধ্যাপক ব্রান্টলে হল ও তাঁর সহকর্মীরাই প্রথম এই বিষয়ে আলোকপাত করেছেন। প্রস্রাবের হলুদ রঙের জন্য দায়ী এই ‘ইউরোবিলিরুবিন’। ১২৫ বছর ধরে এই ধারণাটিই মানুষের মনে প্রোথিত ছিল। তবে, এই উপাদানের উৎস কোথায়, সে সম্পর্কে সঠিক ধারণাও ছিল না। প্রস্রাবের রঙের সঙ্গে লোহিত রক্ত কণিকার যোগও রয়েছে। সে কথা জানা গেছে ওই গবেষণা থেকে।
এছাড়াও লিভারে উপস্থিত বিলিরুবিনও প্রস্রাবের এই ধরনের রঙের জন্য দায়ী। ব্রান্টলের গবেষণা থেকে জানা যায় যে, বিপাকের সময় অন্ত্রে বিলিরুবিন উৎসেচকটির অবশিষ্টাংশ থেকেই ইউরোবিলিরুবিন’র জন্ম। তবে চিকিৎসকরা বলেছেন, শারীরিক কিছু সমস্যার কারণে প্রস্রাবের রং হলুদ হয়ে যেতে পারে। অন্ত্র, পিত্তরোগ বা লিভার সংক্রান্ত কোনও সমস্যা হলেও অনেক সময় প্রস্রাবের রং হলুদ হতে পারে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাঢহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org