দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ লেবুজাতীয় ফলের মধ্যে অ্যাসিডের পরিমাণ অনেক বেশি। তাই পেটের সমস্যা হওয়াটা অস্বাভাবিক নয়। তবে অ্যাসিড রিফ্লাক্সের জন্য সব দোষ ফলের ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া যাবে না।
কাজে বেরোনোর আগে সকালের নাস্তার সঙ্গে যে কোনও এক ধরনের ফল খেয়ে থাকেন। তবে ছুটির দুপুরে জম্পেশ খাওয়া-দাওয়া সেরে ছাদে বসে শীতের এই সময় মিঠে রোদ পোহাতে পোহাতে কমলালেবু খেতেও একেবারে মন্দ লাগে না। ভিটামিন সি’র ঘাটতি পূরণ করতে ও এই শীতে সংক্রমণজনিত রোগ নিয়ন্ত্রণ করতে সাইট্রাস জাতীয় ফল, অর্থাৎ নানা রকমের লেবু, বেরি জাতীয় ফল কিংবা কিউই খান অনেকেই। ভরা পেটে ফল খাওয়া ভালো বলেই জানতেন এতোদিন। তবে যাদের রয়েছে পেটের সমস্যা, তাদের জন্য এই সাইট্রাস জাতীয় ফল অনেকটা বিষের মতো, তা হয়তো অনেকেই জানেনই না। তবে পুষ্টিবিদরা বলেছেন, লেবুজাতীয় ফলের মধ্যে অ্যাসিডের পরিমাণ অনেক বেশি থাকে। তাই পেটের সমস্যা হওয়াটা অস্বাভাবিক নয়। তবে অ্যাসিড রিফ্লাক্সের জন্য সব দোষ ফলের ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া যাবে না। কিছুটা দায় সময়েরও। ভাত খাওয়ার পর দুপুরে সাইট্রাস জাতীয় ফল খেলে কী ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে তা জেনে নিন আজ।
হজমের সমস্যা
ভাত খাওয়ার পরেই লেবু খেলে হজমের সমস্যা কেও আটকাতে পারবে না। কারণ হলো, লেবুর মধ্যে থাকা সাইট্রিক অ্যাসিড, যা পাকস্থলীর মধ্যেকার হজমকারক উৎসেচকের সঙ্গে মিশে গেলে পেটের অস্বস্তি বেড়ে যেতে পারে। গলা-বুক জ্বালার মতো সমস্যা হয় অনেকের।
রক্তে শর্করা বাড়িয়ে দিতে পারে
সাধারণ খাবার পুরোপুরি বিপাক না হওয়া পর্যন্ত রক্তে শর্করার মাত্রা স্বাভাবিকভাবেই থাকে। আবার ফলের মধ্যেও প্রাকৃতিক শর্করা থাকে। তাই ভাত খাওয়ার পরে সাইট্রাস জাতীয় ফল খেলে রক্তে শর্করার মাত্রায় হেরফেরও হতে পারে।
পেট ফাঁপা সমস্যা
ভারি খাবার খেয়ে ভিটামিন সি-যুক্ত ফল খেলে হঠাৎ করে পেট মোচড়ও দিতে পারে। গ্যাস, পেটফাঁপা বা দীর্ঘক্ষণ পেট ভার হয়ে থাকার মতো সমস্যাও হয় ভরা পেটে লেবু খাওয়ার কারণে।
অ্যাসিড রিফ্লাক্স
যাদের চোঁয়া ঢেকুর ওঠার সমস্যা রয়েছে, এই সমস্যা আরও বেড়ে যেতে পারে খাবার পর লেবুজাতীয় ফল খাওয়ার কারণে। বাইরের তেল-মশলা যুক্ত খাবার না খেলেও সারাদিন গলা-বুক জ্বালা ভাব করতে থাকে।
পুষ্টি শোষণে বাধা সৃষ্টি
অনেক সময় ভালো-মন্দ খাবার খাচ্ছেন, তারপরও কিছুই গায়ে লাগছে না? অতিরিক্ত অ্যাসিডিটির সমস্যা থাকলে সমস্ত পৌষ্টিক উপাদান তখন অন্ত্র শোষণ করতে পারে না। ভিটামিন ও খনিজের ঘাটতি থেকেই যায়- যে কারণে পুষ্টি শোষণে বাধা সৃষ্টি হয়। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাঢহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org