দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বিভিন্ন রোগ থেকে দূরে থাকতে ভিটামিন ডি বেশ ভালো উপকারী একটি উপাদান। তবে শরীরে এই উপাদানের অভাব ঘটলে কি ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ে?
শরীরের জন্য ভিটামিন ডি কতোখানি জরুরি তা বলা বাহুল্য। হাড়ের যত্ন নেওয়া থেকে শুরু করে প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি- ভিটামিন ডি অনবদ্য ভূমিকা পালন করে থাকে। ভিটামিন ডি শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকলে অনেক রোগবালাই থেকেও দূরে থাকা যায়। আবার ভিটামিন ডি’র অভাবে বাড়ে ক্যান্সারের ঝুঁকিও।
সাম্প্রতিক এক গবেষণায় উঠে এসেছে এমন একটি তথ্য। তবে গবেষকরা জানিয়েছেন, ভিটামিন ডি’র অভাবের সঙ্গে ক্যান্সারের সরাসরি কোনও যোগসূত্র নেই। শরীরে যদি এই ভিটামিনটির অভাব দেখা দেয়, তাহলে অনেক সময় ক্যান্সার হওয়ার একটা ঝুঁকিও থেকে যায়। সেইসঙ্গে, ভিটামিন ডি’র যদি কোনও অভাব না ঘটে, তাহলে ক্যান্সার ছাড়াও আরও অনেক রোগ থেকে দূরে থাকা সম্ভব হবে। তাই ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার প্রতি বাড়তি নজর দেওয়ার কথা বলেছেন চিকিৎসকরা।
ভিটামিন ডি’র অভাবে যে ধরনের ক্যান্সারের ঝুঁকি থাকে তারমধ্যে অন্যতম হলো স্তন ক্যান্সার। তাছাড়াও অন্ত্রের ক্যান্সারের ঝুঁকিও থাকে ভিটামিন ডি’র অভাবে। এই ভিটামিন ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করে। মারণরোগ হতে দূরে থাকতে ভিটামিন ডি শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকাটা জরুরি। ভিটামিন ডি’র গুণে কোন কোন রোগের হাত থেকে নিষ্কৃতি পাওয়া যাবে?
# এই ভিটামিন স্নায়ুর কার্যক্ষমতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। বার্ধক্যে স্নায়ু রোগের উপসর্গ কমাতেও এটি বেশ কার্যকর। মস্তিষ্কে কর্মক্ষমতা সচল রাখতে এই ভিটামিনের জুড়ি নেই।
# বৃদ্ধাবস্থায় হাড়ের ক্ষয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি সমস্যা। হাড়ে উপস্থিত অন্যতম প্রধান খনিজ পদার্থই হলো ক্যালসিয়াম। সুতরাং হাড় মজবুত রাখতে ও ক্ষয় রোধ করতে ভিটামিন ডি মানবদেহের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
# দেহের প্রোটিনকে রক্ষা করতে ভিটামিন ডি ভিষণ উপযোগী, তাই এটি দেহের পেশির কোষগুলোকে সুস্থ রাখে। যে কারণে বয়সকালে ওজন কমে যাওয়ার আশঙ্কা কমে ও শরীর ভালো থাকে।
# অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টের খুব ভালো একটি উৎস হলো এই ভিটামিন ডি। এই অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট জাতীয় পদার্থ শরীরকে নানা ধরনের ক্ষতিকর বিক্রিয়া হতে রক্ষা করে। যে কারণে প্রোটিন, ফ্যাটি অ্যাসিড, হরমোন এবং ডিএনএ-র মতো উপাদানগুলোও রক্ষা পায়। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org