দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এক পরিসংখ্যান বলছে, বিগত ৫ বছর ধরেই মানুষের মধ্যে কিডনি স্টোনের সমস্যা বেশ ঊর্ধ্বমুখী। চিকিৎসকরা অবশ্য বলছেন যে, এই বিষয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতার যথেষ্ট অভাব বিদ্যমান।
সাধারণ জীবনযাপনে লাগামহীনতা, পেশাগত চাপ, পানি কম খাওয়া, দীর্ঘক্ষণ প্রস্রাব না করার মতো নানা কারণে কিডনিতে পাথর জমার প্রবণতা দিনকে দিন বাড়ছে। এক পরিসংখ্যান বলছে, বিগত ৫ বছর ধরেই মানুষের মধ্যে কিডনি স্টোনের সমস্যা বেশ ঊর্ধ্বমুখী। চিকিৎসকরা অবশ্য বলছেন যে, এই বিষয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতার যথেষ্ট অভাব বিদ্যমান। তাই চিকিৎসা শুরু করতেও বেশ দেরি হয়ে যায়। শেষে অস্ত্রোপচার ছাড়া পাথর বের করার অন্য কোনও উপায়ও থাকে না। কিন্তু আগে থেকেই সতর্ক হলে, জীবনযাপনে সামান্য কিছু পরিবর্তন আনতে পারলে কিডনিতে পাথর জমার প্রবণতা রুখে দেওয়া যাবে।
পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি খাওয়া
মূলত কিডনির কাজ শরীরের বর্জ্য ছেঁকে ক্ষতিকারক টক্সিনকে সরিয়ে দেওয়া। তাই শরীরের চাহিদা অনুযায়ী পানি না খেলে কিডনির পক্ষে সেই কাজ করা দুঃসাধ্য হয়ে পড়ে। যে কারণে সেইসব বর্জ্য জমে পাথরে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।
ভাতের পাতে লবণ খাওয়ার অভ্যাস
যদি আপনার খাবারে অতিরিক্ত লবণ, বিশেষ করে কাঁচা লবণ খাওয়ার অভ্যাস থাকে তাহলে আজই তা বদলে ফেলুন। লবণের সোডিয়ামকে কিডনি সরাতে পারে না। তাই সোডিয়াম সমৃদ্ধ খাবারের মাত্রা বেড়ে গেলেই কিডনিতে তখন পাথর জমে।
ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হওয়া
ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হওয়া অর্থাৎ কিডনি স্টোনের প্রবণতা বাড়িয়ে তুলতে পারে স্থূলতা। মূত্রের উপাদান ও হরমোনের হেরফেরে পাথর জমার কাজটি তখন আরও সহজ হয়ে দাঁড়ায়। তাই এই ঝুঁকি এড়াতে চাইলে অবশ্যই ওজনে লাগাম টানতেই হবে।
ব্যথানাশক ওষুধ খাওয়া
ঘন ঘন ব্যথানাশক ওষুধ খাওয়ার অভ্যাস থাকে অনেকের। এই ওষুধের অন্যতম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় হলো কিডনিতে সমস্যা তৈরি করা। কাজেই ঘন ঘন এইসব ব্যথানাশক ওষুধ খাওয়ার অভ্যাস থাকলে তা বদলে ফেলুন।
ঘন ঘন কফি খাওয়ার অভ্যাস
ক্যাফিন হলো কফির মূল উপাদান। শরীরে ক্যাফিনের মাত্রা প্রয়োজনের চেয়ে বেশি হয়ে গেলে সেটি কিডনির জন্য খুবই বিপজ্জনক। কিডনিতে পাথর জমার প্রবণতা বাড়িয়ে তোলে এই ক্যাফিন, তাই সময় থাকতে সাবধান হতে হবে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org