দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দীর্ঘ ৭ মাসের যুদ্ধের পর অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় দ্বিতীয় দফা যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে রাজি হয়েছে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। যুদ্ধবিরতির চুক্তি অনুমোদনের পর হামাস জানিয়েছে, বল বর্তমানে ইসরায়েলের কোর্টে। তবে ইসরায়েল বলছে যে, হামাস রাজি হলেও তাদের দাবি-দাওয়া এখনও পূরণ হয়নি।
এমনকি দক্ষিণ গাজার রাফা শহরে স্থল হামলা নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছে দখলদার ইসরাইল। যে কারণে দু’পক্ষের মধ্যে আলোচনা এতো দূর এগিয়ে গেলেও ইসরায়েলের তালবাহানায় গাজায় যুদ্ধবিরতি বর্তমানে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। -খবর রয়টার্সের।
৬ মে হামাসের একটি সূত্র জানায় যে, যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার কথা মিসর এবং কাতারের মধ্যস্থতাকারীদের নিশ্চিত করা হয়। এক বিবৃতিতে প্রতিরোধ সংগঠনটি জানায় যে, হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান ইসমাইল হানিয়া কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মাদ বিন আব্দুল রহমান আল থানি ও মিসরের গোয়েন্দা প্রধান আব্বাস কামেলের সঙ্গে এক ফোনালাপে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার কথা জানিয়ে দেন।
হামাসের এমন বার্তার পর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় জানায় যে, কাতার এবং মিসরের মধ্যস্থায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবটি ইসরায়েলের সকল দাবি পূরণ করেনি। তবে চুক্তি আলোচনা অব্যাহত রাখার কথাও জানায় তেল আবিব।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ইসরায়েলি কর্মকর্তা বলেছেন যে, হামাস যে প্রস্তাবটি অনুমোদন করেছে সেটি মিসরীয় প্রস্তাবের কাটছাঁট। এতে এমন বিষয়ও রয়েছে তাতে ইসরায়েল রাজি হবে না।
গত বছরের ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে প্রবেশ করে নজিরবিহীন হামলা চালিয়ে ১২০০ ইসরায়েলিকে হত্যার এবং প্রায় ২৫০ ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিককে গাজায় বন্দি করে নিয়ে যায় হামাস। একই দিন হামাসকে নির্মূল ও বন্দিদের মুক্তি নিশ্চিত করতে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী এই সংগঠনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে ইসরায়েল। গত নভেম্বরে ৭ দিনের যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিনিময়ে ১১০ ইসরায়েলি বন্দিকে হামাস মুক্তি দিলেও এখনও তাদের হাতে বন্দি আছেন শতাধিক।
এদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে, গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ইতিমধ্যেই ছাড়িয়ে গেছে। তাদের অধিকাংশই নারী এবং শিশু। এ ছাড়াও এ পর্যন্ত ৭৭ হাজারেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org