দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বাংলাদেশে একটি রান্নার অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত হন কলকাতার সঞ্চালক-অভিনেত্রী সুদীপা চ্যাটার্জি। ওই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের অভিনেত্রী তারিন জাহানের পাশে দাঁড়িয়ে গরুর মাংস রান্না করতে দেখেন সুদীপা। এরপর হিন্দু ধর্মের অনুসারীদের রোষানলে পড়েছেন তিনি। সোশ্যাল মিডিয়ায় ধর্ষণ এবং খুনেরও হুমকি পাচ্ছেন। ভয়ে নিজের ছেলেকে স্কুলে পাঠাতে পারছেন না তিনি।
বর্তমান পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে ভারতীয় গণমাধ্যম টিভি নাইনকে সুদীপা বলেছেন, আমি ভালো থাকার চেষ্টা করছি। এতোদিন হয়ে গেলো আজও আমার ছেলেটাকে স্কুলেই পাঠাতে পারিনি। কিছুদিন পর হয়তো পাঠাতে পারবো। তবে পুলিশ খুব সাহায্য করছে। ওরা জানিয়েছে যে, নিরাপত্তা দেওয়ার চেষ্টা করবে তারা।
ইতিপূর্বে নেটিজেনদের রোষানলে পড়ে ফেসবুক লাইভে এসে ক্ষমা চান সুদীপা। তার ভাষায়, “”আমি ক্ষমাপ্রার্থী আবেগে আঘাত দেওয়ার জন্য। আগামী দিনে মাথায় রেখে চলবো। আমার না সত্যিই মাথায় আসেনি এটা হতে পারে।”
তারপর হিন্দুস্তান টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সুদীপা চ্যাটার্জি নিজের অবস্থান আরও পরিষ্কার করেন। তিনি বলেন, অনেক মানুষ বিতর্ক জন্ম দিতেই ভালোবাসেন। ইতিপূর্বেও এটি দেখেছি। তবে তারা কেওই সত্যিটাকে জানতেই চায় না। কেওই দেখেনি নিজের চোখে। যতোজন এই নিয়ে বিদ্বেষমূলক পোস্ট করেছে, তারা জানেই না পুরো ব্যাপারটি। আমি না গরুর মাংস খেয়েছি; না গরুর মাংস রান্না করেছি।
তিনি আরও বলেন, কোরবানির ঈদ উপলক্ষে আমি একটি অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে গিয়েছিলাম। তাদের দেশের জাতীয় খাদ্যের মধ্যে পড়ে গরুর মাংস। কারও ধর্মীয় রুচিতে বাধা দেওয়া আমার শিক্ষার মধ্যেই নেই। আমি যদি নিজের ধর্মকে সম্মান করি, তাহলে অন্যের ধর্মাচরণে বাধা দিতে পারি না, এটা নেহায়েত আমার মত।
এদিকে সুদীপাকে নিয়ে উদ্বিগ্ন তারিনও। ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজারকে এই অভিনেত্রী বলেছেন, কোন পর্বে কী পদ রান্না হবে তার চিত্রনাট্য আগে থেকেই ঠিক করা হয়ে যায়। এই রান্নার অনুষ্ঠানকে ঘিরে যতো বিতর্ক। আমি এই বিতর্কে না চাইতেও জড়িয়ে পড়লাম। ঈদের সময় দর্শকের কথা মাথায় রেখেই গরুর মাংসের একটি পদ চূড়ান্ত করা হয়েছিল। সেই অনুযায়ী আমরা দর্শকদের জন্য ওই রান্না দেখিয়েছিলাম। আমি ওই অনুষ্ঠানে সুদীপাদিকে গরুর মাংস খেতে বলেছি বা আমি গরুর মাংস খাওয়াব বলেছি, এমন নয়। আমরা খাওয়া তো দূর থাক, ছুঁয়েও দেখিনি। ওই অনুষ্ঠানের ভিডিও যে কেও দেখতে পারেন। দেখলেই বিষয়টি পরিষ্কার হবে।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org