দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ রূপচর্চার বিষয়ে মেয়েরা এগিয়ে সেটি আমাদের সকলের জানা। তবে অনেক পুরুষ রয়েছেন তারাও নিজেদের রূপচর্চা বিশেষ করে চুলের পরিচর্যা করে থাকেন। তবে পুরুষরা চুলের যত্নে কী কী করবেন সেটি জানা দরকার।
আজকাল মেয়েদের মতোই পুরুষরাও তাদের চুলের যত্নের বিষয়ে অনেকটা সচেতন। সুন্দর, স্বাস্থ্যকর চুল পেতে নিয়মিত চুলের যত্ন নেওয়াটা অত্যন্ত জরুরি। এই প্রয়োজনীয় উপলব্ধি এতোদিনে বাঙালি পুরুষের মস্তিষ্কেও উদয় হয়েছে। যে ফলশ্রুতিতে বাজারে আজকাল পুরুষ ব্যবহারযোগ্য নানা রকম কেশ প্রসাধনীর আবির্ভাব ঘটেছে। তবে এতো প্রসাধনীর মধ্যে কোনটি আপনার জন্য সঠিক বুঝবেন কীভাবে? আজ সেই বিষয়টি জেনে নিন।
চুলের ধরন অনুযায়ী যত্ন
প্রথমেই চুলের ধরন আপনাকে বুঝতে হবে। তৈলাক্ত ও শুষ্ক চুলের জন্য ভিন্ন ধরনের যত্ন দরকার।
তৈলাক্ত চুলের জন্য করণীয়
# নিয়মত শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হবে।
# শ্যাম্পু করার পর চুলের সঙ্গে মানানসই ‘কন্ডিশনার’ও ব্যবহার করুন।
# চুলে তেলও লাগাতে পারেন। তবে চুল অতিরিক্ত তৈলাক্ত হলে তেল ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।
শুষ্ক চুলের জন্য করণীয়
# সপ্তাহে ২ থেকে ৩ বার শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। চুলের আর্দ্রতা বজায় রাখার জন্য সাহায্য করে, এমন শ্যাম্পু এবং ‘কন্ডিশনার’ ব্যবহার করুন।
# সাধারণ সপ্তাহে একবার চুলের আর্দ্রতা বজায় থাকে- এমন স্পা করুন। আবার বাড়িতে ঘরোয়া পদ্ধতিতে তৈরি চুলের মাস্কও করতে পারেন।
# নিয়মিতভাবে তেল ব্যবহার করুন। তবে কোন তেল আপনার জন্য উপযুক্ত, সেই বিষয়ে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
চুল পড়ার সমস্যা থাকলে করণীয়
# আবার ঘরোয়া টোটকা হিসাবে, চুলে নারকেল তেল কিংবা ‘আরগ্গান অয়েল’ও ব্যবহার করলে উপকার পেতে পারেন। ঈষদুষ্ণ নারকেল তেলের সঙ্গে পেঁয়াজের রস মিশিয়ে চুলের গোড়ায় ব্যবহার করতে পারেন। তবে এই ধরনের ঘরোয়া টোটকা ব্যবহার করার পূর্বে অবশ্যই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে নেওয়া দরকার।
# খেয়াল রাখতে হবে, ‘স্ক্যাল্প’ যেনো বেশি শুষ্ক না হয়, এতে চুল পড়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়।
# নিজের চুলের সঙ্গে উপযুক্ত- এমন চিরুনি ব্যবহার করুন। এতে করে চুলের গোড়ায় রুক্ষ্ম অনুভূতি এড়ানো সম্ভব।
দৈনন্দিন অভ্যাসসমূহ
চুল পরিষ্কার রাখুন
আপনার চুলের ধরন অনুযায়ী সপ্তাহে ২ থেকে ৩ বার শ্যাম্পু করুন।
মৃদু শ্যাম্পু ব্যবহার করুন
খুব কড়া কোনো শ্যাম্পু চুলের প্রাকৃতিক তেল নষ্ট করে ফেলতে পারে। তাই মৃদু শ্যাম্পু ব্যবহার করায় ভালো।
ঠান্ডা পানিতে চুল ধুয়ে নিন
ঠাণ্ডা পানি চুলের রোমকূপ সংকুচিত করে ও চুল উজ্জ্বল করে।
‘কন্ডিশনার’ ব্যবহার
চুলে শ্যাম্পু করার পর অবশ্যই ‘কন্ডিশনার’ ব্যবহার করুন। এতে করে চুল নরম এবং মসৃণ হবে।
উপযুক্ত চিরুনি ব্যবহার করুন
ভেজা চুল আঁচড়ানোর সময় সরু চিরুনির পরিবর্তে চওড়া দাঁতের চিরুনি ব্যবহার করতে হবে।
অতিরক্ত তাপ হতে চুল রক্ষা করুন
‘হেয়ার ড্রায়ার’, ‘স্ট্রেটনার’-এর অতিরিক্ত ব্যবহার চুলকে আরও ভঙ্গুর করে তোলে। তাই যতোটা সম্ভব এগুলো ব্যবহার করা এড়িয়ে যেতে হবে।
স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ
ভিটামিন এবং মিনারেল সমৃদ্ধ খাবার চুলের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভালো। তাই স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ করুন।
পর্যাপ্ত পানি পান
পানি কম খেলে চুল রুক্ষ্ম এবং ভঙ্গুর হয়ে ওঠে। তাই প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানিপান করুন।
ধূমপান থেকে বিরত থাকুন
ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য খুবই খারাপ একটি জিনিস, তাই ধূমপান থেকে বিরত থাকুন।
এরপরও জীবনের কিছু দৈনন্দিন অভ্যেস ঠিক রাখলে চুলের অনেক সমস্যার সম্ভব হবে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org