দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অবসরের পর প্রবীণদের ভরসা জমানো পুঁজি। সেই টাকা ভেবেচিন্তে খরচ না করলে বিপদে পড়তে পারেন প্রবীণরা। কীভাবে তারা খরচ বাঁচাতে পারেন এবং সঠিকভাবে সঞ্চয় করতে পারেন কিংবা ব্যয় কমাতে কী কী করতে পারেন প্রবীণরা?
সময় থাকতে বয়সকালে সঞ্চয় করাটা জরুরি, যাতে অবসরের পর টাকা-পয়সায় টান না পড়ে। যাতে জমানো অর্থেই শেষজীবনটা চলে যায় অনায়াসে। তবে যৌবনকালে সঞ্চয় করেও শেষজীবনে সমস্যা হতেই পারে যদি ভাবনাচিন্তা না করেই খরচ করেন কেও। অবসর মানেই এক ধাক্কাতে আয় কমে যাওয়া। সরকারি চাকরিজীবীদের অনেকেরই পেনশন থাকে। বেসরকারি চাকরিজীবী হলে তো সেই সুবিধাও নেই। যেটুকু জমানো টাকা, তার উপরেই কিন্তু নির্ভর করতে হবে।
তাছাড়া বয়স হলে রোগব্যাধিও বাড়ে। আবার অখণ্ড অবসরে ভালো থাকার জন্য একটু ঘুরে-বেড়ানোরও প্রয়োজন পড়ে। সেইসঙ্গে থাকে সংসারের দায়-দায়িত্ব। জমানো পুঁজি থেকে এই সব সামাল দিতে গেলে প্রয়োজন উপযুক্ত পরিকল্পনা। নাহলে সেই টাকা শেষ হতে বেশি দিন সময়ও লাগবে না।
খরচ এবং প্রয়োজনে সামঞ্জস্য
প্রথমেই দেখে নেওয়া দরকার, কোন খরচগুলো অনিবার্য। ওষুধ, খাওয়া-দাওয়া, নিত্যপ্রয়োজনীয় এবং আনুষঙ্গিক খরচ জুড়লে অঙ্কটা কতো দাঁড়াচ্ছে। অনেক সময় ভালো লাগলো বলেই অনেক কিছু কেনা হয়ে যায়। সেই খরচটা বাঁচানো যায় কি-না, ভেবে দেখা প্রয়োজন।
বিনিয়োগ
অবসরের সময় প্রাপ্ত অর্থগুলো সঠিক জায়গায় বিনিয়োগ জরুরি। সঞ্চিত অর্থ খরচ করতে থাকলে শেষ হবে- সেটিই স্বাভাবিক। তাই কারও পেনশন না থাকলে, অবসরের সময় প্রাপ্ত অর্থ এমন কোনও খাতে বিনিয়োগও করতে পারেন, যেখানে কোনো মূলধনে হাত পড়বে না। তার লাভংশের অর্থও তখন ব্যবহার করা যাবে।
প্রবীণ নাগরিকরদের সঞ্চয় প্রকল্প
প্রবীণ নাগরিকদের জন্য সঞ্চয়ে থাকে বাড়তি সুবিধা। তাদের আয়করে যেমন থাকে বাড়তি ছাড়, তেমনি আমানতে সুদের হারও বেশি হয়। তাই সঠিক খাতে বিনিয়োগ করলে প্রবীণদের সুবিধাও হবে। তবে বেশি লাভের আশায় ঝুঁকিপূর্ণ প্রকল্পে বিনিয়োগ না করাই উত্তম।
জরুরি পরিস্থিতির সময়
প্রবীণদের অর্থাৎ বয়সকালে যে কোনও মুহূর্তে জরুরি পরিস্থিতি দেখা দিতেই পারে। হঠাৎ কোনও অসুস্থতা খুব সাধারণ একটি বিষয়। সেই দিকটি মাথায় রেখেই বেশ কিছু টাকা এমন খাতে বিনিয়োগ করাও দরকার, যাতে চাইলেই তা তুলে নিতে পারেন একজন প্রবীণ। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org