দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সৌদি সরকার হজ এবং ওমরাহ মৌসুমে অস্থায়ী কর্মীদের জন্য দেওয়া ভিসা সংক্রান্ত বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনলো। নতুন এই নিয়মগুলো ২০২৫ সাল হতে কার্যকর হবে বলে জানানো হয়। ২ অক্টোবর সৌদির রাজধানী রিয়াদে মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে এই বিষয়ে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে।
এর মধ্যে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনটি হলো ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধি। ইতিপূর্বে অস্থায়ী কর্ম ভিসার মেয়াদ ছিল মাত্র ৩ মাস, যা এখন বাড়িয়ে ৫ মাস ১১ দিন করা হলো। এই নতুন নিয়ম অনুযায়ী, ২০২৫ সাল থেকে এই ভিসার মেয়াদ শুরু হবে ১৪ ফেব্রুয়ারি হতে ও শেষ হবে ২৫ জুলাই।
এছাড়াও নতুন নিয়ম অনুযায়ী, সৌদিতে অস্থায়ী ভিসায় যারা কাজ করার জন্য গমন করবেন, তাদের নিয়োগ অবশ্যই লিখিত ভাবে হতে হবে। নিয়োগপত্রে উভয় পক্ষের— অর্থাৎ নিয়োগকর্তা প্রতিষ্ঠান ও কর্মীর— স্বাক্ষর থাকতে হবে। মূলত কর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতেই এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
তৃতীয়ত: অস্থায়ী কর্মীদের জন্য সৌদি দূতাবাস কিংবা কনস্যুলেটে আবেদন করার সময় চিকিৎসা বীমার নথিপত্র জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এই বীমা কর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য অপরিহার্য বলে দেশটির মন্ত্রীসভা মনে করছে।
মন্ত্রিসভার বৈঠকে আরও সিদ্ধান্ত হয় যে, যদি কোনো অস্থায়ী কর্মী ভিসার অপব্যবহার করেন কিংবা আইন লঙ্ঘন করেন, তাহলে সৌদি সরকার তাদের কাছ থেকে অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী ক্ষতিপূরণও আদায় করতে পারবে।
সৌদির বাণিজ্য বিশ্লেষকরা মনে করছেন যে, এই নতুন ভিসা সংস্কার সৌদির অর্থনীতিতে এক ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের নেতৃত্বে সৌদি আরব জ্বালানি নির্ভরতার বাইরে অন্যান্য খাতকেও গুরুত্ব দিচ্ছে, তবে শ্রম ঘাটতির কারণে অর্থনীতির কাঙ্ক্ষিত গতি অর্জন সম্ভবই হচ্ছে না। নতুন অস্থায়ী কর্ম ভিসা সেই সংকট অনেকটা দূর করবে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org