দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অনেকের বেশ বদভ্যাস রয়েছে। রাতের খাবার শেষ করা মাত্রই তারা আর বসে থাকতে পারেন না। চোখের দু’পাতায় তখন ঘুম নেমে আসে। তবে ডিনারের পরই ঘুমিয়ে পড়া মোটেও উচিত নয়। এতে করে বাড়তে পারে নানা রোগের ঝুঁকি।
আপনি কী ডিনার শেষ করেই বিছানায় শুয়ে পড়েন?
সারাদিনের কাজকর্মের পর শরীরে যেনো কোনো প্রাণই থাকে না। কোনও মতে ডিনার সেরেই বিছানায় যেতে পারলে যেনো বাঁচা যায়। তবে রাতের খাওয়া শেষ করা মাত্রই শুয়ে পড়া কী আদতেও ঠিক? দিনের শেষে শরীরে ক্লান্তি জুড়িয়ে আসে- সেটি একেবারেই স্বাভাবিক। তখন কোনও কাজই করার এনার্জিই থাকে না। তখন কিন্তু মনও চায় না। তবে খাওয়া-দাওয়া শেষ করা মাত্রই ঘুমোতে চলে যাওয়ার অভ্যাস মোটেও ভালো নয়। ডিনার শেষ করেই সঙ্গে সঙ্গে শুতে চলে গেলে আপনি বড়সড় বিপদে পড়বেন। এর জেরে দেহে কী-কী ক্ষতি হতে পারে, সেটি জেনে নিন আজ।
বাঙালিদের চিরকালের সঙ্গী গ্যাস। তবে এই সমস্যাকে কোনওভাবেই প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না। বদহজম, বুক জ্বালা, চোঁয়া ঢেকুর দেওয়া, পেট ভার হয়ে থাকার মতো সমস্যা, ফোলাভাব এমন নানা সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে হলে ডিনার শেষ করেই বিছানার দিকে কখনও পা বাড়াবেন না। খাবারটা হজম হওয়ার সময় দিতে হবে।
ওজন বৃদ্ধি পাওয়া
শুধু স্বাস্থ্যকর খেয়ে বা জিম করলেই যে ওজন কমে- তা কিন্তু নয়। স্বাস্থ্যকর লাইফস্টাইল মেনে চলাটাও ভীষণভাবে জরুরি। ডিনার শেষে ঘুমিয়ে পড়লে শরীরে অতিরিক্ত মেদ জমার আশঙ্কাও থাকে। তার উপর ডিনারে যদি চর্বি এবঙ মশলাদার যুক্ত খাবার বেশি করে খান, তাহলে ওজন কিন্তু বাড়তে বাধ্য। ওজনকে বশে রাখতে হলে এই বদভ্যাস এড়িয়ে চলতে হবে।
ঘুমের ব্যাঘাত হতে পারে
ঘুমের ব্যাঘাত- যেমন বার বার ঘুম ভেঙে যাওয়া, টয়লেটের চাপে ঘুম থেকে ওঠা—এইসব সমস্যা আরও বাড়বে যদি আপনি রাতের খাবার খেয়েই ঘুমিয়ে যান। ডিনার শেষ করে বিছানায় গেলে দেহে সার্কাডিয়ান রিদমের ভারসাম্যও নষ্ট হয়। তখনই অনিদ্রার মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
তাহলে ডিনার করার কতোক্ষণ পর ঘুমাতে যাবেন?
ডিনার শেষে মোটামুটি ২ থেকে ৩ ঘণ্টা পর বিছানায় যেতে হবে। রাতের খাওয়া শেষ করে ৩০ মিনিট হাঁটাহাঁটি করলে ভালো হয়। সেইসঙ্গে অন্যান্য কাজও করতে হবে। চেষ্টা করুন সন্ধ্যা ৭টা বা সাড়ে ৭টার মধ্যে ডিনার সেরে ফেলা। খুব দেরি হলে ৮-৯টা হতে পারে। এর চেয়ে বেশি দেরিতে কখনও ডিনার করবেন না। এতে বদহজম, ওজন বৃদ্ধির মতো একাধিক সমস্যাও সহজেই এড়িয়ে যেতে পারবেন। তথ্যসূত্র: এই সময়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org