দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ পারিবারিক বিরোধ ও চিকিৎসার খরচ জোগাতে না পেরে সাভারের রানা প্লাজার আহত নারী শ্রমিক সালমা আক্তার (২৬) আত্মহত্যা করেছে।
জানা যায়, গতকাল শুক্রবার সকালে রাজধানীর তুরাগ এলাকার বাসা থেকে তার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। রানা প্লাজার আহত ওই শ্রমিক সালমা আক্তার তার স্বামীর সঙ্গে তুরাগের বামনার টেকের ফজলু মিয়ার বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। সালমার গ্রামের বাড়ি জামালপুরের চরসরিষাবাড়ীতে।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাতে তিনি সবার অজান্তে ঘরের আড়ার সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলে আত্মহত্যা করে। খবর পেয়ে সকাল সাড়ে ১০টায় তুরাগ থানা পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়।
পারিবারিক সূত্র জানায়, রানা প্লাজা ভবন ধসে গুরুতর আহত হওয়ার পর থেকেই চিকিৎসাধীন ছিলেন সালমা আক্তার। গত এক মাস হলো হাসপাতাল থেকে তাকে বাসায় আনা হয়। কিন্তু সালমা পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠেননি। বাড়িতে আসার পরও অসুস্থ ছিলেন তিনি। নানামুখী ক্ষতের অসহ্য যন্ত্রণায় ভুগছিলেন সালমা। স্বামী বাবু আগে রিকশা চালাতেন। বর্তমানে তিনিও কোনো কাজ করেন না। স্ত্রীর চাকরি করতে না পারায় সংসারে অভাব অনটন লেগেই ছিল। স্ত্রীর চিকিৎসা খরচও জোগাড় করতে হিমশিম খাচ্ছিলেন তার স্বামী। এমন অবস্থায় অসুস্থ সালমার সঙ্গে স্বামীর ঝগড়া-ঝাটি লেগেই থাকতো। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া, সংসারের অভাব ও চিকিৎসা খরচ না থাকায় মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন হয়ে ক্ষুব্ধ সালমা ঘরের আড়ার সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলে আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করছেন তার স্বজনরা।
তদন্তকারী পুলিশও বলেছে, সালমার স্বামীর দেয়া তথ্যে জানা গেছে, আহত সালমা মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন এবং মাথায় ব্যথা উঠলে মাথা দেয়ালের সঙ্গে আঘাত করতেন। বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে খাবার শেষে ঘুমাতে যান তারা। সকালে উঠে তার ঝুলন্ত লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন।
সংবাদ মাধ্যমকে পুলিশ জানিয়েছে, সালমার শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, প্রচুর মাথা ব্যথা ও শারীরিক যন্ত্রণা থেকেই সালমা আত্মহত্যা করেছে। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সালমার স্বামীকে আটক করেছে।