দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মানুষ দৃষ্টিহীন হয়। কিন্তু কোনো পশুকে সচরাচর দেখা যায় না দৃষ্টিহীন অবস্থায়। তবে এবার দেখা গেছে এমন এক ঘোড়াকে যে ঘোড়া সত্যিই অন্ধ। কীভাবে চলে তার জীবন? আজ রয়েছে সে গল্পই!
ঘোড়াটি একেবারেই চোখে দেখে না। তাই তার কোনো কদরও নেই। খোলা আকাশের নিচে আপন মনে সে ঘুরে বেড়ায় এদিক সেদিক। বৃষ্টি এলে চুপ করে দাঁড়িয়ে ভিজতে থাকে। কারণ সে দেখতে পায় না, কিভাবে কোথায় যাবে! এই দৃষ্টিহীন ঘোড়াকে নিয়ে চরম বিপাকে পড়ে ভারতের বর্ধমানের নওদা গ্রামের বাসিন্দারা। স্থানীয় প্রশাসন হতে জেলাশাসকও। সাহায্যের জন্য অনেকেরই দরজায় কড়া নেড়েছেন ওই গ্রামবাসীরা। আশ্বাসও দিয়েছেন অনেকেই। কিন্তু ওইটুকুই সার। কাজের কাজ আসলে কিছুই হয়নি।
কিভাবে এলো এই ঘোড়া। একটি বাদামি রঙের ঘোড়া বর্ধমানের নওদা গ্রামে হঠাৎই হাজির। কোথা থেকে এলো এই ঘোড়াটি, তা কেও জানেও না। যে কারণে মানুষের কৌতুহলও কম নয়। তবে এক সময় গ্রামবাসীরা বুঝতে পারেন যে ঘোড়াটি চোখে দেখে না। সেই থেকে তার প্রতি গ্রামবাসীদের সহানুভূতি বেড়ে যায়। ঘোড়াটির ঠাঁই হয় গ্রামের একটি খোলা মাঠে। তখন গ্রীষ্মকাল ছিলো বলে তেমন কোনো সমস্যা হয়নি। সারাদিন সে মাঠেই চড়ে বেড়াতো একাকি। রাতটাও তার কাটতো ওই খোলা মাঠেই। তবে বর্ষার আগমন ঘটায় সমস্যায় পড়ে ঘোড়াটি। মাঠ পানি ভরে যায়। ক্রমে সেই মাঠে শুরু হয় চাষাবাদ। তখন সেই নীরিহ ঘোড়াকে রাখা হয় দুটি সেচখালের মধ্যবর্তী একটি জমিতে। যেহেতু ঘোড়াটি চোখে দেখে না, তাই মাঝে মাঝেই সে পড়ে যায় সেচখালের পানিতে। তখন স্থানীয় বাসিন্দারা তাকে আবার উদ্ধারও করে।
নওদাবাসীর বিশ্বাস, স্থানীয় প্রশাসন যদি দৃষ্টিহীন এই ঘোড়াটির চিকিত্সার সুব্যবস্থা করে, তাহলে হয়তো সে আবার দৃষ্টিশক্তি ফিরে পেতে পারে। বর্ধমানের জেলাশাসক ঘোড়াটির দ্রুত চিকিত্সার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেন। গ্রামবাসীদের দাবি হলো, এর আগে স্থানীয় প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে তারা ঘোড়াটির জন্য সাহায্যের আবেদনও জানিয়েছিলেন। তবে তখন আশ্বাস দিলেও কেওই কথা রাখেননি। তবে খোদ জেলাশাসক এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করায় কিছুটা আশাবাদী নওদা গ্রামের মানুষরা। এই ঘোড়ার গল্পটি পুরোনো হলেও বর্তমানে এই ঘোড়াটি কিভাবে আছে এবং কেমন আছে তা আমাদের অজানা।