দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ভারতে ঘটেছে এমন একটি ঘটনা। নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হয়েছে সেই মৃত্যু পথযাত্রীর আর্তি। ঘটেছে দেশটির হায়দরাবাদের একটি হাসপাতালে।
চিকিৎসার অভাবে প্রাণ হারালেন করোনায় আক্রান্ত এক যুবক। মৃত্যুর আগে বাবাকে পাঠানো তার একটি ভিডিও প্রকাশ্যে আসতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন যুবকের পরিজনরা।
হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত ছাড়া বাকি রোগীগের ভর্তি নেওয়া হচ্ছে না এই অভিযোগ উঠেছে। সব রোগীদেরই হাসপাতালে ভর্তি নিতে হবে, দেশটির সরকার এই নির্দেশ দিলেও তা কেও মানছে না। অতিমারীর এই সময়েও যে কোনও রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করতে গেলে নাজেহাল হতে হচ্ছে পরিজনদের। তবে হাসপাতালে রোগীকে ভর্তি করার পরও কীভাবে তাদের ফেলে রাখা হচ্ছে সেই করুণ পরিণতির ছবি স্পষ্ট হয়েছে হায়দরাবাদে।
জানা যায়, হায়দরাবাদের অসুস্থ এক যুবককে হাসপাতালে ভর্তি করতে নিয়ে যায় তার বাবা। প্রথমে কোনও হাসপাতাল ভর্তি নিতে চাইনি। যে কারণে সরকারি-বেসরকারি-সহ প্রায় ১০টি হাসপাতালের দরজা ঘুরে সবশেষে বুধবার একটি সরকারি হৃদরোগের হাসপাতালে ওই যুবককে ভর্তি করা হয়। তবে তাতেও স্বস্তি নেই পরিবারের। ৩৪ বছর বয়সী ওই যুবককে ভর্তি নিলেও তার চিকিৎসার বিষয়ে কোনও খেয়ালই ছিলোনা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের! শ্বাসকষ্টে ছটফট করছে ওই যুবক ক্রমেই ক্ষীণ হয়ে আসছে জীবন শক্তি। তাতেও কোনই খেয়াল নেই চিকিৎসক বা নার্সদের। মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ার সময় বাড়ির লোকদের এই পরিস্থিতি জানাতে বাবাকে শেষ একটি ভিডিও বার্তা পাঠিয়েছে ওই যুবক। যেই ভিডিওতে তাকে বলতে শোনা যায়, “বাবা আমি শ্বাস নিতে পারছি না। আমার খুবই কষ্ট হচ্ছে। আমি বার বার অনুরোধ করা সত্ত্বেও ওরা আমায় গত ৩ ঘণ্টায় অক্সিজেনই দেয়নি। আমার দমবন্ধ হয়ে আসছে। বাবা বিদায়। বিদায় সকলকে।”
এরপরই হাসপাতালের তরফ হতে ফোন করে যুবকের পরিবারকে তার মৃত্যুর খবর দেওয়া হয়। যুবকের মৃত্যুর পরই এই ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ্যে চলে আসে। তা দেখেই চাঞ্চল্য ছড়ায় নেটিজেনদের মধ্যে। একাধিক প্রশ্ন ওঠে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের এমন ভূমিকা নিয়ে। তারা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে প্রশ্ন করেন, হাসপাতালের একজন রোগীর যদি এই অবস্থা হয় তাহলে বাকিদের অবস্থা আরও কতোটা শোচনীয়? কেনো এই গাফিলতি?
এদিকে ছেলের শেষ ভিডিও বার্তা দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন তার আত্মীয় স্বজনরা। যুবকের শেষকৃত্যর পর ক্ষোভে, দুঃখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে প্রশ্ন করেন মৃত যুবকের বাবা। তিনি প্রশ্ন করেন, “আমার ছেলের সঙ্গে যা ঘটেছে তা আর কারও সঙ্গে ঘটুক আমি তা চাই না। কেনো ওর অক্সিজেন মাস্ক খুলে দেওয়া হলো? তখন কি অন্য কারও তা বেশীই প্রয়োজন ছিল?” তবে ছেলের মৃত্যুর পরদিনই তার করোনা পজিটিভ রিপোর্ট পান ওই যুবকের বাবা। তাতেই আরও বেশি চমকে ওঠেন তারা। এখন ছেলের মৃত্যুর পর পরিবারের বাকি সদস্যদের নিয়ে আরও উদ্বেগ বেড়েছে তাদের মধ্যে।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।