দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ নিয়ম-কানুন মানার বিষয়ে জার্মানরা বেশ কড়াকড়ি। প্রায় সবকিছুর জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলাটা একধরনের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে, তেমনি ভুল ধরিয়ে দেয়াটাও। তাই নিয়ম না মানার কারণে রাস্তাঘাটে ধমক খাওয়াটাও অস্বাভাবিক কিছু নয়।
সাইকেল ও হাঁটার পৃথক পথ
জার্মানিতে বেশিরভাগ রাস্তায় গাড়ি, সাইকেল ও পথচারীদের চলাচলে পৃথক রাস্তা রয়েছে। এর মধ্যে উল্টা-পাল্টা হলেই বিপদ ঘটবে। হাঁটার রাস্তায় কেও না থাকলেও আপনি কখনও সেই রাস্তায় সাইকেল চালাতে পারবেন না। আবার সাইকেলের রাস্তায় হাঁটতে থাকলে কেও কোনো ধরনের হর্ন না দিয়েই আপনাকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য ধাক্কাও দিয়ে দিতে পারে ইচ্ছে করলেই।
কুকুর ও তার মল
জার্মানিতে পোষা প্রাণী হিসেবে খুবই জনপ্রিয় হলো কুকুর। নানা প্রজাতির কুকুর হাতে জার্মানদের রাস্তায় হাঁটতে দেখা যায় অনেক সময়। কুকুর পালনের জন্য বাসস্থান, সেবা করার যোগ্যতা, স্বাস্থ্যবিমা ইত্যাদি নিশ্চিত করে তবেই সেটি পালন করা যায়। রাস্তায় বা অন্য কোনো স্থানে যদি আপনার কুকুর মলত্যাগ করে বসে, সঙ্গে সঙ্গে তা নির্দিষ্ট পলিথিনে তুলে নিয়ে নির্দিষ্ট স্থানে আপনাকেই তা ফেলতে হবে। তা না করলে জরিমানা গুণতে হবে আপনাকে।
শিশুদের জন্য
এমনিতে জার্মানরা আইন-কানুন মেনে চললেও রাস্তা পার হওয়ার সময় গাড়ি না থাকলে প্রায়ই সিগন্যাল ছাড়া তাদের দৌড় দিতে দেখা যায়। তবে আশপাশে যদি কোনো শিশু থেকে থাকে, তাহলে এমন করাটা বেশ বাজে ধরনের দৃষ্টিতে দেখা হয়ে থাকে। অধিকাংশ জার্মানই নিজের সন্তানকে নিয়ে বাইরে বের হন নানা কিছু নিজের চোখে দেখে শেখার জন্যই। নিজের শিশু সন্তানকে নিশ্চয়ই আপনি লাল বাতি জ্বলার মধ্যে দৌড় দেওয়া কখনও শেখাতে চাইবেন না।
সময় মেনে চলা
জার্মানরা প্রচণ্ড নিয়মানুবর্তী হয়ে থাকেন। তবে নিজেরা সময় মেনে চলায় তাদের যেমন আগ্রহ, কেও সময় না মানলে তাকে এই বিষয়ে উপদেশ দেওয়ায় তারা আরও বেশি করে আগ্রহ দেখান। জার্মানিতে একটা প্রবাদও রয়েছে এই বিষয়টি নিয়ে। সময়মতো আসা মানে ঠিক সময় আসা না, বরং সময়ের কয়েক মিনিট আগেই আসা।
সঠিক বিনে সঠিক আবর্জনা ফেলা
জার্মানির শহরগুলোতে প্লাস্টিক, পচনশীল বর্জ্য, কাগজ, কাঁচ, এমনকি কাপড় ফেলার জন্যও পৃথক পৃথক বিনের ব্যবস্থা রয়েছে। এসব বিন নির্দিষ্ট রঙ দিয়ে চিহ্নিত। পরিবেশের ব্যাপারে অধিকাংশ জার্মানই খুবই সচেতন। এসব বিনে পৃথক বর্জ্য ফেলার উদ্দেশ্যই হলো, পুনর্ব্যবহারের মাধ্যমে এটি পরিবেশের ক্ষতি কমানো। যে কারণে তারপরও এক ধরনের বর্জ্য অন্য ধরনের বিনে ফেললে আপনাকে বকা শুনতেও হতে পারে অনেক সময়।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।