দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ তার মনে বড় সাধ জেগেছিল ছুরি খেয়ে দেখার! তাই প্রায় ২০ সেন্টিমিটার লম্বা একটি ছুরি গিলে ফেললেন। তবে সেটি তিনি করেছিলেন নেশার ঘোরে!
শুধু তাই নয়, আস্ত একটা ছুরি গিলে ফেলার পরে বেমালুম ভুলেও গিয়েছিলেন তিনি! পেটে অসহ্য যন্ত্রণা শুরু হতেই সম্বিত ফিরলো তার। শেষ পর্যন্ত পেট কেটে দিল্লির এমসের চিকিৎসকরা বের করে আনলেন সেই ছুরিটি। পেট থেকে এভাবে ছুরি উদ্ধারের ঘটনা কার্যত বিরল একটি ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করেছেন এমসের চিকিৎসকরা।
কোলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকার এক খবরে বলা হয়, ঘটনার সূত্রপাত চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে। বাদল (ছদ্ম নাম) নামে হরিয়ানার ওই যুবক দীর্ঘদিন গাঁজার নেশা করে অপ্রকৃতিস্থ হয়ে পড়েন।
চিকিৎসকদের ধারণা যে, নেশার ঘোরে ২০ সেন্টিমিটার লম্বা ওই ছুরিটি গিলে ফেলেন ওই যুবক। বাদলের অপারেশনের দায়িত্বে থাকা এমসের গ্যাস্ট্রো সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক এন আর দাশ বলেছেন যে, ‘ছুরিটি খাদ্যনালী দিয়ে নীচে নামার সময় শ্বাস বা খাদ্যনালীকে চিরেও দিতে পারতো। এমনকি ফুসফুস বা হৃদপিণ্ডে ধাক্কাও দিতে পারতো। ছেলেটির কপাল ভালো যে তেমন কিছুই ঘটেনি। তবে ছুরিটি আরও নীচে নেমে গিয়ে তা লিভারে গিয়ে আঘাত করে। যে কারণে পেটে অসম্ভব ব্যথা শুরু হয়ে যায়। তারপরেই তার পেটের এক্সরে করা হলে ছুরি ধরা পড়ে।’
চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন যে, উদ্ধার হওয়া ওই ছুরিটির ধারালো অংশ ১০ সেন্টিমিটার দীর্ঘ। বাকি অংশটি এর হাতল।
গত ১২ জুলাই দিল্লির সফদরজঙ্গ হাসপাতাল থেকে বাদলকে এমসে পাঠানো হয়। এমসে সূত্রের খবর হলো, সেই সময় তার শারীরিক অবস্থা বেশ খারাপও হতে শুরু করে। সেপ্টেসেমিয়ার লক্ষণ ধরা পড়তে শুরু করে ওই যুবকের শরীরে। ফুসফুসে পানি জমে যায়। লিভারে ক্রমশ পুঁজ জমতে থাকে। রক্তে হিমগ্লোবিনের পরিমাণ নেমে আসে। চিকিৎসক দাশের ভাষায়, ‘এর মধ্যে ছিল করোনা সংক্রমণের আতঙ্কও। প্রাণ বাঁচাতে শেষ পর্যন্ত অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।’
অস্ত্রোপচারের পূর্বে প্রায় ৭ দিন ধরে কাউন্সিলিং চলে ওই যুবকের। রক্ত দেওয়া হয় যাতে শরীরে হিমগ্লোবিন আরও বাড়ে। শেষে ১৯ জুলাই ওই ব্যক্তির অপারেশন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। প্রায় টানা ৩ ঘণ্টা ধরে আপারেশন চলে। চিকিৎসক দাশের ভাষায়, ‘ছুরিটি বার করার কারণে তার রক্তপাত হওয়ার আশঙ্কা ছিল। এমনকি ছুরিটি গেঁথে থাকায় লিভারের কিছু অংশ নষ্টও হয়ে যেতে পারতো। সে ক্ষেত্রে তা কেটে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে সে ধরণের কোনও সমস্যাই হয়নি।’
এই বিষয়ে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আপাতত পেটের নীচের দিকে খাওয়ার নল লাগিয়ে ওই যুবককে তরল খাওয়ার দেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে তিনি সুস্থ রয়েছেন।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর
অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।