দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ রাশিয়ায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা অনেক বেশি পরিমাণে হলেও মৃত্যুহার ছিল একেবারেই কম। তবে এবার করোনায় মৃত্যু নিয়ে জালিয়াতির কথা অবশেষে স্বীকার করলো রাশিয়া।
আগে থেকেই রাশিয়ার প্রাণহানির বিষয়ে সরকারি হিসাব নিয়ে সন্দেহ ছিল অনেকেরই। অবশেষে দেশটি স্বীকার করেছে যে, সরকারি হিসাবে সেখানে করোনায় যতো মানুষ মারা গেছেন বলে দেখানো হচ্ছে, প্রকৃত মৃতের সংখ্যা তার অন্তত তিনগুণ বেশি হবে!
রাশিয়ার জরিপকারী সংস্থা দ্য রোসস্ট্যাট-কে উদ্ধৃত করে দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে যে, গত বছরের তুলনায় চলতি বছরের জানুয়ারি হতে নভেম্বর পর্যন্ত দেশটিতে করোনাসহ বিভিন্ন রোগে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২ লাখ ২৯ হাজার ৭০০ তে দাড়িয়েছে।
রাশিয়ায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা অনেক বেশি হলেও মৃত্যুহার দেখা গিয়েছিল একেবারেই কম। বিষয়টি নিয়ে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন গত কয়েক মাস ধরেই দাবি করে আসছিলেন যে, পশ্চিমা দেশগুলোর চেয়ে তিনিই ভালোভাবে করোনা মহামারি মোকাবিলায় সক্ষম হয়েছেন। তবে বিষয়টি নিয়ে সন্দেহপোষণ করে আসছিলেন বিশেষজ্ঞরাসহ অনেকেই। তাদের আশঙ্কা ছিলো রাশিয়ায় করোনার প্রাদুর্ভাবকে খাটো বা গোপন করে দেখাচ্ছে রুশ কর্তৃপক্ষ।
সোমবার রুশ কর্মকর্তারা স্বীকার করে নিয়েছেন যে, আসলে সেই আশঙ্কাই সত্যি। রাশিয়ার পরিসংখ্যান সংস্থা রোসট্যাট জানিয়েছে, গত বছরের জানুয়ারি হতে নভেম্বর পর্যন্ত সময়ের তুলনায় এই বছরের একই সময়ে সব ধরনের মৃত্যুর পরিমাণ বেড়েছে ২ লাখ ২৯ হাজার ৭শ’। যার মধ্যে ৮১ শতাংশের মৃত্যু করোনা ভাইরাসে হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপ-প্রধানমন্ত্রী তাতিয়ানা গোলিকোভা। এর অর্থ দাঁড়ালো এই বছর করোনার কারণে মৃত্যু ঘটেছে ১ লাখ ৮৬ হাজার রুশ নাগরিকের।
উল্লেখ্য যে, মহামারিতে মৃতের হিসাব করতে সবচেয়ে বেশি যে হিসাবটি গ্রহণযোগ্য সেটি হলো পূববর্তী বছরে একই সময় কতো মানুষের মৃত্যু ঘটেছে তার তুলনা করা।
দেশটির সরকারি হিসেবে, রাশিয়ায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৩১ লাখের মতো। আক্রান্তের সংখ্যার তুলনা করতে গেলে রাশিয়া বিশ্বের মধ্যে চতুর্থ। প্রথম যুক্তরাষ্ট্র, দ্বিতীয় ভারত এবং তৃতীয় অবস্থানে ব্রাজিল।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর
অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।