দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) দেশের অবৈধ হ্যান্ডসেট বন্ধের প্রক্রিয়া শুরু করছে ১ অক্টোবর থেকে। এই প্রক্রিয়ার কারণে অনেকের হ্যান্ডসেট হঠাৎ বন্ধের কবলে পড়তে পারে। এমন হলে কী করবেন?
এদিকে কোনো বৈধ হ্যান্ডসেট বন্ধ হয়ে গেলেও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র থাকলে তা দিয়ে রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ দেওয়ার কথা বলেছে বিটিআরসি। তবে বৈধ কাগজপত্র না থাকলে কিংবা সেটটি বৈধ না হলে সংক্রিয়ভাবে সেটি অচল হয়ে যেতে পারে।
তবে এখন থেকে নতুন হ্যান্ডসেট নেটওয়ার্কে সচল করতে হলে অবশ্যই তার আইএমইআই নম্বরটি বিটিআরসি’র ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) ব্যবস্থায় অবশ্যই নিবন্ধিত থাকতে হবে। শুধুমাত্র বৈধভাবে দেশে উৎপাদিত ও বৈধ পথে আমদানি করা হ্যান্ডসেটগুলো এনআইআর ব্যবস্থায় নিবন্ধিত থাকবে। যে কারণে চোরাই পথে আসা ও নকল হ্যান্ডসেট এখন থেকে বাংলাদেশের নেটওয়ার্কে ব্যবহার করা যাবে না। এমন পরিস্থিতিতে স্বাভাবিকভাবেই ব্যবহারকারীদের মনে প্রশ্ন জেগেছে, তিনি যে ফোনটি ব্যবহার করছেন সেটি বৈধ নাকি অবৈধ?
এই বিষয়ে বিটিআরসি জানিয়েছে, মোবাইল থেকে মেসেজ পাঠিয়ে গ্রাহকরা খুব সহজেই বৈধ বা অবৈধ মোবাইল চিহ্নিত করতে পারবেন।
আপনার সেটটি বৈধ কি-না তা জানবেন যেভাবে
যে কেও চাইলেই তার হাতে থাকা মোবাইল হ্যান্ডসেটের বর্তমান অবস্থা জেনে নিতে পারেন। প্রথমে মোবাইল হ্যান্ডসেটে গিয়ে *১৬১৬১# নম্বরে ডায়াল করতে হবে। স্ক্রিনে অপশন এলে তখন Status Check সিলেক্ট করতে হবে। একটি অটোমেটিক বক্স আসবে, সেখানে মোবাইল হ্যান্ডসেটের ১৫ ডিজিটের আইইএমআই নম্বরটি লিখে তারপর পাঠাতে হবে। গ্রাহকের মোবাইলে তখন হ্যাঁ/না অপশন সংবলিত একটি অটোমেটিক বক্স চলে আসবে। তাতে হ্যাঁ Select করে আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে। ফিরতি মেসেজে ব্যবহৃত মোবাইল ফোনের/হ্যান্ডসেটের হালনাগাদ অবস্থা জানিয়ে দেওয়া হবে।
হ্যান্ডসেট কেনার আগে যা আপনাকে করতে হবে
যে কোনো ক্রয় মাধ্যমে (বিক্রয় কেন্দ্র, অনলাইন বিক্রয় কেন্দ্র, ই-কমার্স সাইট ইত্যাদি) মোবাইল হ্যান্ডসেট কেনার পূর্বে অবশ্যই হ্যান্ডসেটটির বৈধতা যাচাই করে নিতে হবে। সেজন্যই একটি পদ্ধতি অনুসরণের পাশাপাশি হ্যান্ডসেটের ক্রয় রসিদও সংরক্ষণ করতে বলছে বিটিআরসি। মোবাইল হ্যান্ডসেটটি বৈধ হলে সেটি স্বয়ংক্রিয়ভাবেই এনইআইআর সিস্টেমে নিবন্ধিত হয়ে যাবে। মোবাইল ফোনের মেসেজ অপশনে গিয়ে KYD লিখে তারপর space দিয়ে ১৫ ডিজিটের আইএমইআই নম্বরটি লিখতে হবে। তারপর ১৬০০২ নম্বরে পাঠিয়ে দিতে হবে। ফিরতি মেসেজ মোবাইল হ্যান্ডসেটের বৈধতা সম্পর্কে আপনাকে জানিয়ে দেওয়া হবে।
বিদেশ থেকে আনা হ্যান্ডসেট নিবন্ধন হবে যেভাবে
বিদেশ থেকে বৈধভাবে কিনে আনা কিংবা উপহার পাওয়া হ্যান্ডসেট দেশে চালু করার পর স্বয়ংক্রিয়ভাবেই নেটওয়ার্কে সচল হবে। তখন এই ধরনের গ্রাহককে ১০ দিনের মধ্যে অনলাইনে তথ্য দিয়ে নিবন্ধন করার জন্য এসএমএস পাঠানো হবে। ১০ দিনের মধ্যেই নিবন্ধন হয়ে গেলে ওই হ্যান্ডসেট ‘বৈধ’ হিসেবে বিবেচিত হবে। তা না হলে হ্যান্ডসেটটি অবৈধ বিবেচনা করে গ্রাহককে এসএমএস এর মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে।
এই বিষয়ে বিটিআরসির স্পেকট্রাম বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শহীদুল ইসলাম জানিয়েছেন, গত ১ জুলাই হতে ৩ মাসের জন্য পরীক্ষামূলকভাবে ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্ট্রার-এনইআইআর চালু করা হয়েছে। ৩০ সেপ্টেম্বর সেই সময় শেষ হয়ে গেছে। ১ অক্টোবর থেকে কোনোভাবেই অবৈধ কিংবা নকল সেট ব্যবহার করা যাবে না। এই সময়ের মধ্যে যে সেটগুলো ব্যবহার হয়েছে সেগুলো সার্ভারে সংযুক্ত হয়ে যাবে। নতুন করে যেসব সেট যুক্ত হবে, সেগুলো অবশ্যই বৈধ সেট হতে হবে।
বিটিআরসি সূত্রে জানা যায়, দেশে প্রতিদিন ১ লাখ ১০ হাজার নতুন মোবাইল হ্যান্ডসেট নিবন্ধন হচ্ছে, যেগুলোর মধ্যে প্রায় ১০ শতাংশই আবার অবৈধ এবং নকল বলে ধরা পড়ছে। সেই হিসেবে প্রতিদিন গ্রাহকের হাতে আসা ১১ হাজার অবৈধ এবং নকল হ্যান্ডসেট বর্তমানে চিহ্নিত হচ্ছে।
জানা যায়, তবে এই সেটগুলো আপাতত বন্ধ হচ্ছে না। এসব সেট চালু হওয়া মাত্রই গ্রাহকের কাছে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই বার্তা চলে যাচ্ছে যে, তার সেটটি ‘অবৈধ কিংবা নকল’ সেট।
উল্লেখ্য, বিটিআরসি সর্বশেষ কমিশন বৈঠকে নকল কিংবা অবৈধ হ্যান্ডসেটের বিষয়ে আর কোনো ছাড় দেওয়া হবে না বলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের কাপড়ের মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।