দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কোভিডের কারণে শ্বাসযন্ত্রের যতোটা না ক্ষতি হচ্ছে, তার থেকেও বেশি ক্ষতি হচ্ছে মানসিক স্বাস্থ্যের, ল্যানসেটের এক সমীক্ষা এমনই দাবি করছে।
সারা বিশ্বে মানসিক রোগীর সংখ্যা নেহায়েত কম নয়। প্রতি ঘণ্টায় বহু মানুষ আত্মঘাতী হচ্ছেন। কোভিড অতিমারির পূর্বে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী দেখা যায়, রোগের তালিকায় দ্রুত প্রথমেই উঠে আসতে চলেছে মানসিক অবসাদ। এই পরিস্থিতির অনুঘটক হচ্ছে কোভিড-১৯। মনোরোগ চিকিৎসকরা বলেছেন, কোভিডের কারণে মানসিক স্বাস্থ্যের অবস্থা হতে চলেছে এক ভয়াবহ।
কোভিডের কারণে শ্বাসযন্ত্রের যতোটা না ক্ষতি হচ্ছে, তার থেকেও বেশি ক্ষতি হচ্ছে মানসিক স্বাস্থ্যের। এমনটিই দাবি করছে ল্যানসেট পত্রিকার করা এক সমীক্ষা। প্রায় ১০ লক্ষ ২৫ হাজার রোগীর রিপোর্ট দেখার পর এই মত প্রকাশ করেছে ল্যানসেট। ওই গবেষণায় দেখা গেছে, কোভিড থেকে সেড়ে ওঠার ৬’মাসের মধ্যেই মানসিক রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি আরও বাড়ছে। অধিকাংশ রোগীই মানসিক অবসাদে ভুগছেন, যার প্রভাব রোগীর উপর বছর দুয়েকেরও বেশিও থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন গবেষকরা।
আবার অনেকেই ডিমেনসিয়া-সহ স্নায়ুর রোগেও আক্রান্ত হচ্ছেন। সংক্রমণের আতঙ্ক, পারিবারিক অশান্তি কিংবা সামাজিক বিচ্ছিন্নতার কারণে একাকিত্ব, কর্মহীনতা, আর্থিক অনিশ্চয়তা আরও বেশি করে গ্রাস করতে শুরু করেছে। এই সমস্যা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করেছেন চিকিৎসকরা।
সাম্প্রতিক গবেষণায় ধরা পড়েছে যে, মস্তিষ্কের কোষ এবং স্নায়ুতন্ত্রে প্রভাব ফেলছে কোভিড ১৯ ভাইরাস। ‘ইনস্টিটিউট অব সাইকায়াট্রি’-র শিক্ষক সুজিত সরখেল বলেছেন, “বয়স নির্বিশেষে ডেলিরিয়ামের (ভ্রান্ত ধারণা, আতঙ্ক, ভুল বকা ইত্যাদি) মতো মানসিক প্রভাবও দেখা দিচ্ছে। এ পর্যন্ত তা সেরে যাচ্ছে। তবে এর দীর্ঘমেয়াদি ফল এখনও স্পষ্ট নয়। স্মৃতিশক্তি বা আরও বড় অন্য কোনও ক্ষেত্রে কোভিডের প্রভাব পড়ছে কি না, তা জানতে ফলো আপ চিকিৎসায় নির্দিষ্ট প্রশ্ন করার বিষয়ে নির্দেশিকা তৈরির প্রস্তুতিও চলছে।”
এই পরিস্থিতি অনুধাবন করার পর মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা মত দিয়েছেন যে, অতিমারিতে তৈরি হওয়া এই সমস্যাগুলো যে শুধু সাময়িকভাবে ভোগাচ্ছে তা কিন্তু নয়, মনের অসুখের শিকার গোটা প্রজন্ম। সাধারণ মানুষ হোন কিংবা বিভিন্ন ক্ষেত্রে সমাজের প্রতিষ্ঠিতরাই হোক- মানসিক চাপের মধ্যে দিয়েই যেতে হয়েছে সকলকে। আবার এখনও হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমান প্রজন্ম তো বটে, অতিমারিতে তৈরি হওয়া এইসব সমস্যার প্রভাব পড়তে পারে পরবর্তী প্রজন্মের উপরেও। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকার চেষ্টা করি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের কাপড়ের মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।